৫০ বছরের কম বয়সী ৫১ জন মহিলা প্রবেশ করেছেন সাবরীমালা মন্দিরে, সুপ্রিম কোর্টে জানাল কেরল সরকার

এখনও পর্যন্ত মোট ৫১ জন ঋতুমতী মহিলা বিনা বাধায় সাবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করেছেন, সুপ্রিম কোর্টকে হলফনামা দিয়ে জানাল কেরল সরকার। শুক্রবার বিন্দু আম্মিনি ও কনক দুর্গার পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে কেরল সরকারের পক্ষের আইনজীবী আদালতে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের পর মোট ৫১ জন মহিলা সাবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করেছেন। এঁদের প্রত্যেকের বয়স ৫০ এর নীচে।
সরকার পক্ষের আইনজীবী বিজয় হাঁসারিয়া জানান, ৭ হাজারেরও বেশি ঋতুমতী মহিলা আয়প্পা দর্শনের জন্য অনলাইনে তাঁদের নাম নথিভুক্ত করান। এঁর মধ্যে মাত্র ৫১ জন মহিলা কোনওরকম ঝামেলা ছাড়াই মন্দিরে প্রবেশ করেন।
উল্লেখ্য, ২ রা জানুয়ারি ভোরে বিন্দু আম্মিনি ও কনক দুর্গা নামে দুই মহিলা পুলিশি পাহারায় সাবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করেন। এরপর থেকেই বিজেপি ও দক্ষিণপন্থী সংগঠনগুলির হুমকির মুখে পড়তে হয় তাঁদের। সরকারি সহায়তায় কোচির এক গোপন জায়গায় দিন কাটছিল তাঁদের। কিন্তু গত মঙ্গলবার সকালে কনক দুর্গা নিজের বাড়িতে ফিরে শাশুড়ির হাতে লাঞ্ছিত হন। তিনি পুলিশকে জানান, শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে বাড়িতে জায়গা দিতে অস্বীকার করেছে। শাশুড়ির বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করেন কনক। বিজেপি, আরএসএসসহ দক্ষিণপন্থী দলগুলির ক্রমাগত হুমকিতে চরম নিরাপত্তার অভাব বোধ করে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হন কনক ও বিন্দু।
শুক্রবার তাঁদের আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিংহ শীর্ষ আদালতকে জানান, লাগাতার হুমকির মুখে পড়ে আতঙ্কিত তাঁর দুই মক্কেল। অবিলম্বে তাঁদের সুরক্ষার ভার নেওয়া উচিত পুলিশ প্রশাসনের। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার পক্ষের আইনজীবী বিজয় হাঁসারিয়া বলেন, ইতিমধ্যেই যাঁরা মন্দিরে প্রবেশ করেছেন তাঁদের সবাইকেই পুলিশ নিরাপত্তা দিচ্ছে। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি এল এন রাও এবং বিচারপতি দীনেশ মহেশ্বরীর বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, দুই মহিলার নিরাপত্তার স্বার্থে ২৪ ঘন্টা দায়িত্ব নিতে হবে পুলিশ প্রশাসনকে।
পাশাপশি, আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিংহ আদালতে জানান, মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশের পর মন্দিরের দরজা বন্ধ করে ‘শুদ্ধ’ করার যে রেওয়াজ শুরু হয়েছে তা বন্ধ করা উচিত।
২০১৮ সালের ২৮ শে সেপ্টেম্বর শীর্ষ আদালতের ঐতিহাসিক রায়ের পরে সাবরীমালা মন্দির বস্তুত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। একদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ বলবৎ করতে বদ্ধপরিকর পিনারাই বিজয়ন সরকার। অন্যদিকে ঐতিহ্য ও ধর্মীয় ভাবাবেগের প্রশ্ন তুলে বিজেপি, আরএসএসসহ বেশ কিছু সংগঠনের তীব্র আন্দোলনের জেরে শিকেয় উঠছে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা।

Comments are closed.