সমঝোতা করা হচ্ছে সিবিআইয়ের স্বাধীনতার সঙ্গে, সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন অলোক ভর্মার। রাফাল তদন্ত বন্ধ করতেই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত, অভিযোগ বিরোধীদের

মঙ্গলবার মাঝরাতেই সিবিআই প্রধান অলোক ভর্মাকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। এর বিরুদ্ধে বুধবারই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছেন অলোক ভার্মা, যার শুনানি হবে আগামী শুক্রবার। জানা গেছে, নিজের পিটিশনে ভার্মা শীর্ষ আদালতকে জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশের সর্বোচ্চ তদন্তকারী সংস্থার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। সমঝোতা করা হচ্ছে সংস্থাটির স্বতন্ত্রতার সঙ্গে। পিটিশনে তিনি আরও জানিয়েছেন, এর ফলে কিছু তদন্ত, যেগুলি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, সেগুলি বাধা পেতে পারে, যা হয়তো সরকারের চায়। পিটিশনে অলোক ভর্মা একহাত নিয়েছেন তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা আর এক শীর্ষ সিবিআই কর্তা তথা সংস্থার স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানাকেও। পিটিশনে ভর্মার দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে আনা আস্থানার যাবতীয় অভিযোগ ভুয়ো। তাঁর কথায়, সব তদন্তে রাজনৈতিক চাপ লিখিতভাবে না থাকলেও, তদন্তকারীরও উচিত নিজের তদন্তে দৃঢ় থাকা। ভার্মা জানিয়েছে, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার ক্ষেত্রে আস্থানা যেভাবে তদন্ত সামলাতেন তার সঙ্গে বেশিরভাগ শীর্ষ তদন্তকারীই একমত ছিলেন না।
তবে এদিন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়েছেন, সিবিআই-এর বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখতেই কেন্দ্র সংস্থার দুই শীর্ষ কর্তা অলোক ভার্মা এবং রাকেশ আস্থানাকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সিবিআই প্রধান অলোক ভার্মাকে কেন্দ্র যেভাবে রাতারাতি তাঁর পদ থেকে সরিয়ে ছুটিতে পাঠিয়েছে, তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিরোধীরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, সিবিআই এখন ‘বিবিআই’ অর্থাৎ বিজেপি ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনে পরিণত হয়েছে। রাহুল গান্ধীর ট্যুইট, রাফাল ডিল দুর্নীতি নিয়ে তদন্তের জন্য কাগজপত্র ঘাঁটতে শুরু করেছিলেন সিবিআই প্রধান, এই কারণেই তাঁকে সরিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদী। রাহুলের দাবি, রাফাল ডিল বিজেপির জন্য ঘাতক এয়ারক্রাফটে পরিণত হবে। যার রেডার থেকে তিনি পালিয়ে বাঁচতে পারবেন না। একই দাবি করেছেন ডিএমকে চিফ এম কে স্ট্যালিনও। তাঁর কথায়, রাফাল ফাইল যাতে নাড়াচাড়া না হয় তার জন্যই সিবিআই প্রধানকে সরানো হল। স্ট্যালিনের দাবি, মোদী জমানায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা প্রশ্নের মুখে।
রাফাল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছিলেন প্রাক্তন দুই বিজেপি নেতা যশবন্ত সিনহা, অরুণ শৌরি এবং বিশিষ্ট আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের পর প্রশান্ত ভূষণের দাবি, তাঁদের এই আবেদনের পর সিবিআই-এর উপর চাপ দেওয়া হচ্ছিল যাতে তারা রাফাল নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য না করে। ভার্মাকে সরানোর সিদ্ধান্ত তারই একটি অঙ্গ।

Comments are closed.