১ লা জানুয়ারি ভীমা-কোরেগাঁওয়ে লক্ষাধিক দলিত সম্প্রদায়ের মানুষের জমায়েত, ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তা

ভীমা-কোরেগাঁও আন্দোলনের ২০১ তম বর্ষ উদযাপনে মঙ্গলবার, বছরের প্রথম দিন এক লক্ষের বেশি মানুষ জড়ো হলেন পুনেতে। ভীমা-কোরেগাঁও স্মৃতি-সৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন বি আর অম্বেডকরের নাতি প্রকাশ অম্বেডকর। তিনি দলিত নেতাও বটে।
গত বছরেও ভীমা-কোরেগাঁও এলাকায় গোটা মহারাষ্ট্র থেকে জমায়েত হয়েছিলেন দলিত সম্প্রদায়ের মানুষজন। সেখানে উচ্চ বর্ণের সঙ্গে দলিতদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মৃত্যু হয় এক কিশোরের। এরপর, দলিতদের ডাকা মহারাষ্ট্র বন্‌ধে টানা তিন দিন ধরে অচল হয়ে পড়ে গোটা রাজ্য।
পরবর্তীকালে সেই ঘটনার তদন্তে নেমে এই আন্দোলনে জড়িত থাকা এবং উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে পুনে পুলিশ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গ্রেফতার করে ভারাভারা রাওসহ একাধিক মানবাধিকার কর্মীকে। ফরিদাবাদ থেকে সমাজকর্মী সুধা ভরদ্বাজ এবং হায়দরাবাদ থেকে কবি এবং মানবাধিকার কর্মী ভারাভারা রাওকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় গৌতম নাওলাখা, অরুণ ফেরেরা প্রমুখকে। ধৃতদের উস্কানিতে এই হিংসা ছড়িয়েছে বলে দাবি করে পুলিশ। ওই গ্রেফতারির পর মোদীর সরকারের সমালোচনার ঝড় ওঠে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভীমা-কোরেগাঁওতে জমায়েত হতে শুরু করেন দলিত ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ। কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিশাল নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় ওই অঞ্চল। ভীমা-কোরেগাঁও এবং তার আশপাশের এলাকায় নজরদারির জন্য ব্যবহার করা হয় ড্রোন। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য গোপন ক্যামেরা বসানো হয়। যাতে কোনও রকমেই অশান্তি ছড়াতে না পারে সে দিকে কড়া নজর রাখে প্রশাসন।
সতর্কতামূলক ব্যবস্থার জন্য কয়েক হাজার মানুষের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়েছে প্রশাসনিক ব্যবস্থা। ভীমা-কোরেগাঁও এবং তার আশপাশে অনেকেরই প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এঁর মধ্যে রয়েছেন অতি ডানপন্থী নেতা মিলিন্দ একবোটে এবং বামপন্থী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী কে কে এম।
১৮১৮ সালে ১ লা জানুয়ারি মারাঠা পেশোয়াদের বিরুদ্ধে দলিতদের জয়কে ‘বিজয় দিবস’ হিসেবে পালন করতে প্রতি বছর এই দিন পুনে থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে ভীমা-কোরেগাঁওয়ে জমায়েত হন দলিত সম্প্রদায়সহ বহু মানুষ।

Comments are closed.