নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকাই সার, বঙ্গ বিজেপির ফেসবুক পেজে সেনা-বেশে মোদী! কঠোর ব্যবস্থার দাবি তৃণমূলের

অপারেশন বালাকোটের পর থেকে দেশজুড়ে সেনা জওয়ানদের পরাক্রমকে নির্বাচনী প্রচারে তুলে ধরার ধুম পড়ে যায়। বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধীরা সরাসরি অভিযোগ করে, রাজনৈতিক প্রচারে সেনাবাহিনীকে হাতিয়ার করার। এরপরই উদ্যোগী হয় নির্বাচন কমিশন। গত ৯ ই মার্চ একটি পুরনো নির্দেশিকার কথা উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, সেনাবাহিনীকে ভোটের প্রচারে ব্যবহার করা যাবে না। কমিশন তো কমিশনের কাজ করল, কিন্তু কাজের কাজ হল কি কিছু?
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে মোদী-অমিত শাহদের পাখির চোখ পশ্চিমবঙ্গ। শাসক দল তৃণমূলকে জোর ধাক্কা দিতে চেষ্টার কোনও কসুর করছে না গেরুয়া ব্রিগেড। দুই তৃণমূলের সাংসদকে দলে টানা থেকে শুরু করে প্রচারে অভিনবত্ব, রাজ্যে বিজেপির উপস্থিতি এখন বেশ জোরদার। রিয়্যালের পাশাপাশি ভার্চুয়াল জগতেও রাজ্য বিজেপি এখন যথেষ্টই জনপ্রিয়। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় এহেন জনপ্রিয় বিজেপির রাজ্যের ফেসবুক পেজ দেখে চোখ কপালে! রাজ্য বিজেপির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ, ‘বিজেপি ওয়েস্ট বেঙ্গল’-এর কভার ফটোতে এখনও (এই খবর প্রকাশ হওয়ার সময় পর্যন্ত) জ্বলজ্বল করছে, হাসিমুখে নরেন্দ্র মোদীর ছবি, পরনে সেনার জলপাই পোশাক! ছবিতে অবশ্য রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ছবিও আছে, তবে তিনি সাধারণ পোশাকেই। তাহলে কমিশনের নির্দেশিকা কি মুরলীধর সেন লেনে এসে পৌঁছোয়নি? রাজ্য বিজেপির ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি বেশ জনপ্রিয়। লাখো মানুষ তা ফলো করেন। অ্যাকাউন্টের কভার ছবিতে সরাসরি ভোট ভিক্ষা করা না হলেও, এই পরিস্থিতিতে বিজেপির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সেনা-বেশে নরেন্দ্র মোদী ঠিক কী বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন, তা জলের মতো পরিষ্কার।
এ বিষয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি thebengalstory.com-কে জানান, ‘এতদিন ধরে আছে, নিশ্চয়ই কেউ খেয়াল করেনি। এখনই সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিচ্ছি।‘ কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এই ইস্যু নিয়ে যখন দেশজুড়ে চর্চা চলছে, তখন রাজ্য বিজেপির নজরেই পড়ল না তাদেরই অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সেনার জংলা পোশাকে মোদীর ছবি জ্বলজ্বল করছে!
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের শীর্ষ নেতা এবং রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, বিজেপি গণতন্ত্র মানে না। তাই তারা চাইছে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো নির্বাচন কমিশনকেও কুক্ষিগত করতে। আমাদের দাবি, নির্বাচন কমিশন বিজেপির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিক এবং যারা সেনার আবেগকে ভোটের স্বার্থে ব্যবহার করতে চাইছে, তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করুক।

Comments are closed.