খাদ্যাভাসের জন্য যখন কাউকে খুন করা হয়, তখন হত্যা হয় সংবিধানেরও: বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়

ব্রিটিশদের হাত থেকে স্বাধীন হওয়ার পর, ভারতের সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক কাঠামোর কথা মাথায় রেখে দেশের যে সংবিধান রচিত হয়েছিল তা শুধু খাতায়-কলমে রাখার জন্য লেখা হয়নি, ভারতের ঐতিহ্য, দেশের আত্মা যাতে রক্ষিত হয় সে কথা মাথায় রেখেই তা লেখা হয়। কিন্তু যখন দেশে খাদ্যাভ্যাসের কারণে কাউকে পিটিয়ে মারা হয়, তখন হেনস্থা করা হয় সংবিধানকেও। সোমবার বম্বে হাইকোর্টের এক অনুষ্ঠানে এভাবেই দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়।
সংবিধানের উদ্দেশ্য এবং বাস্তবের মাটিতে তার ফারাক সম্পর্কে মন্তব্য করতে তিনি আরও বেশ কিছু ঘটনার উল্লেখ করেন। ব্যঙ্গ চিত্র আঁকার কারণে যখন চিত্র শিল্পীর জেল হয়, ধর্ম নিয়ে ব্লগ লিখে যখন একজন ব্লগারকে জেলে যেতে হয়, তখন সংবিধান আদৌ সুরক্ষিত থাকে কিনা সে প্রশ্নও তুলেছেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়। তাঁর মতে, দেশের সংবিধানকে তার নিজের মতো করে চলতে দেওয়া উচিত। সংবিধানে কেউ বিশ্বাস করুক বা না করুক, দেশের নাগরিকদের উপর সংবিধানের প্রভাব আছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের এই মন্তব্য স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে ফেলেছে বিজেপি এবং গো-রক্ষা বাহিণীর মতো সংগঠনগুলিকে। দাদরির আখলাকের ঘটনা দিয়ে যে ঘটনার সূত্রপাত, বাড়িতে গো-মাংস আছে এই অভিযোগে পিটিয়ে মারা হয়েছিল আখলাককে। তারপর গত কয়েক বছরে উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। যা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। এবার বিচারপতি চন্দ্রচূড় বললেন, কোনও ব্যক্তিকে যদি কী খাবেন তার জন্য জন্য খুন হতে হয়, তাবে তা সংবিধান হত্যারই সামিল।

Comments are closed.