নেতাই নিয়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর পরবর্তীকালের মন্তব্য দুঃখজনক, ‘সিপিএম দোষী’ তদন্তের আগে একথা বলা দায়িত্বশীল বক্তব্য নয়

পুরো ২০১০ সালই ছিল আমাদের জঙ্গলমহলের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ঘটনাবহুল। আগের দুই পর্বে উল্লেখ করেছি, ২০১০ সালের ২৪ শে নভেম্বর খেজুরিতে ঘরছাড়াদের এলাকায় ফেরার কর্মসূচি বা পার্টির পরিকল্পনা কীভাবে ধাক্কা খায়। ওই ঘটনা আমদের পার্টিকে অনেকটাই পিছনের দিকে ঠেলে দিয়েছিল, অন্যদিকে বিরোধীদের মনোবল অনেকটাই বেড়ে যায়। কিন্তু ২০১১ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের বছরের একদম শুরুতে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঝাড়গ্রামে যে ঘটনা ঘটল, তা আগের দুই বছরের সব কিছুকেই ছাপিয়ে গেল।
২০১১ সালে আমাদের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার তো বটেই, রাজ্যেরও সবচেয়ে বড় ঘটনাটা ঘটল জানুয়ারি মাসের ৭ তারিখ। যা নির্বাচনের প্রাক্কালে সবচেয়ে বড় ঘটনা হিসাবে হাজির হয়েছিল। তা হল, লালগড় লাগোয়া নেতাই গ্রামের মোট ৯ জনের নিহত হওয়ার ঘটনা।
৭ জানুয়ারির আগের দিন, ৬ তারিখ রাত ছিল ওই বছরের শীতলতম। এমনিতেই ঝাড়গ্রাম মহকুমার লাল মাটি এলাকায় শীত বেশি পড়ে। এই শীতের রাতকেই মাওবাদীরা বেছে নিয়েছিল তাদের পুরনো আধিপত্য ফেরানোর কৌশল কার্যকর করার দিন হিসাবে। ঝাড়গ্রাম মহকুমার লালগড়সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় মাওবাদীরা চূড়ান্ত আধিপত্য কায়েম করেছিল। যদিও মানুষের সংগঠিত প্রতিরোধ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশের অভিযানের ফলে একটা সময় মাওবাদীরা অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে যায়। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বে, তারা তাদের লক্ষ্য পূরণের জন্য ফের কীভাবে জঙ্গলমহল এলাকাকে অশান্ত করা যায়, তারই কৌশলের অঙ্গ হিসাবে ৬ ই জানুয়ারি রাতের অন্ধকারে নেতাই গ্রামে জমায়েত হয়। গ্রামের মানুষকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এসে সমবেত করে তারা হুঁশিয়ারি দেয়, তাদের কথা মতো না চললে, তারা শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পের জওয়ানদের যেভাবে হত্যা করেছে গোটা গ্রামের মানুষকেও সেভাবে খুন করবে। আর তাদের এই গ্রামে আসার খবর যেন কোনওভাবেই পুলিশ, প্রশাসন, সিপিআইএম নেতা বা তাদের কর্মীদের জানানো না হয়। তারা রাতে গ্রামেই থাকে। সেই শীতেও তারা কোথাও না গিয়ে গোটা গ্রামে নজর রাখে।
শীতের মধ্যরাতে সশস্ত্র মাওবাদীরা ঘুমন্ত মানুষকে তুলে হুমকি দিয়ে এমনই আতঙ্কগ্রস্থ করে দিয়েছিল যে, গ্রামের মানুষ পুলিশ বা আমাদের দল কাউকেই খবর দিতে সাহস করেননি। ওই গ্রামে সিপিএমের কর্মীরা থাকলেও তারাও মাওবাদীদের এই উপস্থিতি বুঝে উঠতে পারেনি। একেবারে সকালে, ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথেই মাওবাদীরা কৌশল অনুযায়ী গ্রামের মানুষকে চাপ দিয়ে সামনে রেখে নিজেরা তাঁদের পিছনে থেকে, যে বাড়িতে সিপিআইএম কর্মীরা ছিলেন, সেই বাড়ি আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়। এরপর ওই দিন সকালে ৯ জনের মৃত্যুর ঘটনা সব সংবাদমাধ্যমেই নানাভাবে উপস্থিত হয়েছে। এনিয়ে আমি বিস্তারিত বিবরণের মধ্যে যেতে পারব না। যেহেতু বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। সেদিন নেতাইয়ে যা ঘটে, তা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এই ঘটনাকে সামনে রেখেই বিরোধীরা সর্বাত্মকভাবে বামফ্রন্ট তথা সিপিএমের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং এই ঘটনা সিপিএম দ্বারাই সংগঠিত হয়েছে বলে তারা প্রচার করতে শুরু করে। ঘটনা ঘটে যাওয়ার সাথে সাথেই রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কিন্তু তৎকালীন বিরোধী নেতা, নেত্রীরা তখন রাজ্যের পুলিশের উপর ভরসা রাখতেন না। তাই সব ক্ষেত্রেই তাঁদের দাবি ছিল সিবিআই তদন্তের। ফলশ্রুতিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয় ও কোর্টের নির্দেশে সিবিআইয়ের উপর তদন্তভার ন্যস্ত হয়।
যাই হোক, এই সিবিআই মামলা এখন বিচারাধীন, সেই জন্য এই ঘটনা নিয়ে বিশদে আলোচনা করা কোনওভাবেই উচিত নয়। আমরা সকলেই আদালতের উপর আস্থাশীল। আদালত ওই ঘটনা নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্তই নেবে। তদন্ত করার আগেই সিপিএম দোষী, একথা বলাটা কোনও দায়িত্বশীল বক্তব্য নয়। তা সাধারণত বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার প্রচেষ্টা মাত্র। নেতাইয়ের ঘটনা উল্লেখ করে সেদিনের মুখ্যমন্ত্রীর পরবর্তী সময়ের বক্তব্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক। যাই হোক, এই ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তারা প্রায় সকলেই বহু বছর ধরে জেলবন্দি অবস্থায় আছে।
কিন্তু এই ঘটনা নিয়ে সাধারণভাবে কিছু কথা বলা যেতেই পারে। তাতে কোনও আইনি জটিলতা হওয়ার কথা নয়। এই ঘটনার পর ওই জায়গা পরিদর্শন করেছিলেন এরকম একজন প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে ঘটনাচক্রে নেতাই নিয়ে আমার আলোচনার সুযোগ হয়। তিনি বলেছিলেন, এই ঘটনা আসলে পুলিশি ব্যর্থতা। মাওবাদীরা কোণঠাসা হয়ে যাওয়ার পরে, রাজ্য পুলিশের পাশে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য থাকা সত্ত্বেও গোয়েন্দাদের সোর্স যথাযথভাবে কাজ করেনি। তাহলে আগে ভাগেই মাওবাদীদের খবর পুলিশের কাছে পৌঁছে যেত। পুলিশ, প্রশাসন যদি এই খবর আগেই পেত, তা হলে ওই শীতের রাতে পুলিশ মাওবাদীদের আগেই ওই গ্রামে পৌঁছোলে এই ঘটনা আর ঘটত না।
মাওবাদীদের একটা কৌশল সম্পর্কে এক্ষেত্রে কিছুটা আলোকপাত করা প্রয়োজন। মাওবাদীরা থাকে জনগণের পিছনের দিকে, যাতে প্রতিরোধের জন্য সামনে থেকে আক্রমণ হলে সাধারণ মানুষ তার শিকার হন। তাতে কিছু মানুষের জীবন চলে গেলে মাওবাদীদের চেষ্টা সফল হবে। আর যদি সামনে থেকে প্রতিরোধের জন্য কোনও আক্রমণ না আসে তো পেছন থেকে তারা নিজেরাই (মাওবাদীরা) আক্রমণ চালাবে। তা হলেও মাঝে থাকা কিছু মানুষের জীবন যাবে, তাতেও তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে। মানুষ খুন করে আতঙ্ক তৈরিই যাদের একমাত্র লক্ষ্য, তাদের এই ধরনের কাজ কোনও শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের পক্ষেই সমর্থন করা সম্ভবপর নয়। নেতাইয়ের ঘটনায় মাওবাদীদের কোন কৌশল কার্যকর হয়েছিল, তা জানার জন্য আমাদের আগামী দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
নেতাইয়ের ঘটনা নিয়ে আমার এই লেখা নতুন করে কোনও বিতর্ক উত্থাপন করার জন্য নয়। নিরীহ মানুষ মারা গেছিলেন এই ঘটনায়, তাঁদেরকেও অশ্রদ্ধা করা আমার উদ্দেশ্য নয়। সমস্ত মৃত্যুই দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। জঙ্গলমহলে বামপন্থীদের যে অবস্থান ছিল, তাকে নির্বাচনের আগে দুর্বল করতে বিরোধীদের যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা ছিল, তারই অঙ্গ হিসাবে মাওবাদীদের ব্যবহার করা হয়েছিল। বিরোধীরা যে সেই ক্ষেত্রে অনেকটাই সাফল্য পায় একথা স্বীকার করতে কোনও দ্বিধা নেই। মাওবাদীদের কোণঠাসা করার মধ্যে দিয়ে যে এলাকায় সরকার ও আমাদের সংগঠনের শক্তি প্রতিদিন বাড়ছিল, তা অনেকটাই নড়বড়ে হয়ে যায় এই ঘটনায়। যার ফলে বিধানসভা নির্বাচনে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহলের কিছু আসন বামফ্রন্টের পক্ষে থাকলেও, সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করে বাম বিরোধী শক্তি। ২০০৯ লোকসভা নির্বাচনেও বামেদের যে সাফল্য ছিল তা ধরে রাখা আর আমাদের পক্ষে সম্ভব হল না। ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে নেতাইয়ের এই ঘটনার পরেও সংবাদমাধ্যম, খবরের কাগজ থেকে টিভি অজস্র মাধ্যম একযোগে যেভাবে প্রচার সংঘঠিত করে তাকে কাউন্টার করার মতো শক্তিশালী প্রচারমাধ্যম বামেদের ছিল না।
২০০১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাম বিরোধী শক্তির ক্ষমতা দখলের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার ১০ বছর পর আবার রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের মুখোমুখি হয়। যদি এই নির্বাচনে বামফ্রন্টকে উৎখাত করা না যায় তাহলে আবার বহু বছর অপেক্ষা করতে হবে। তাই একেবারে মরিয়া প্রচেষ্টা ছিল বিরোধীদের, কোনও মতেই এ সুযোগ হারানো চলবে না। সীমাবদ্ধ আর্থিক ক্ষমতার মধ্যেও ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারের সাফল্য বারে বারে এরাজ্যকে দেশের মধ্যে নানা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পৌঁছে দিয়েছিল। যেমন, কৃষি উৎপাদন, ভূমি সংস্কার, শিল্পে অগ্রগতি, মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি, শিক্ষার হারের অগ্রগতি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠা, তফশিলী জাতি, উপজাতি, সংখ্যালঘুদের সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা, পঞ্চায়েতের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের বাস্তব রূপায়ণ, নারীদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এসব কিছুকে নস্যাৎ করে দিয়ে পশ্চিমবাংলার মানুষকে বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে, বিশেষ করে সিপিএমের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা সেদিন বিরোধীরা সংগঠিত করেছিল। আর এই পরিকল্পনা রূপায়ণের জন্য যেভাবে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয়েছিল তারও কোনও নজির এর পূর্বে দেখা গেছে বলে মনে হয় না।
এবার যে ঘটনার কথা উল্লেখ লেখার মধ্যে করতে চাই, তা আমার মহাকরণের কার্যকালের মধ্যে আমাদের জেলা তথা পশ্চিমাঞ্চলের তো বটেই, রাজ্যের উন্নয়নের ক্ষেত্রেও একটা মাইল ফলক হয়ে থাকতে পারতো। কিন্তু সেই চেষ্টার করুণ পরিণতি হয়েছিল, যা এখনও ভাবলে কষ্ট পাই। এটা শুধুমাত্র আমার প্রতি মন্ত্রিসভার শ্রদ্ধাভাজন মুখ্যমন্ত্রীসহ আরও একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর নেতিবাচক মনোভাবের কারণেই, নাকি এর পেছনে অন্য কোনও কারণ ছিল, তা আমার পক্ষে বিশ্লেষণ করা খুবই কঠিন। আগের পর্বে লেখার মধ্যে ইতিমধ্যে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতর নতুন করে তৈরি করা ও তার দীর্ঘ প্রক্রিয়া ও নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিয়ে কাজ শুরু করার কথা উল্লেখ করেছি। দফতরের দায়িত্ব নেওয়ার পরেই তা নতুনভাবে তৈরি করে কাজ করার সময় নানা প্রতিষ্ঠান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তি (উন্নয়ন সম্পর্কিত) সকলের পরামর্শ ও সাংসদ থেকে শুরু করে বিধায়ক এবং পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত নানা পদাধিকারীদের পরামর্শ নেওয়ার কথাও ইতিমধ্যে উল্লেখ করেছি।
এরকম এক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত তন্ময় চক্রবর্তী নামের এক ভদ্রলোকের সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়। অতীতে ঘাটাল থানার অন্তর্গত এলাকার মধ্যেই তাঁদের বসবাস ছিল। পরবর্তীকালে সম্ভবত কলকাতার বাসিন্দা হন। ওনাদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পিছিয়ে পড়া জনজাতি অধ্যুষিত এলাকা চিহ্নিত করে সেখানকার উন্নয়ন, অব্যবহৃত জমি ব্যবহারের বিষয়ে কিছু কাজ পশ্চিমাঞ্চলে করেছিলেন। সংগঠনের একটি কর্মসূচিতে, যেখানে গড়বেতা থানা এলাকার গোড়বেড়িয়া নামক একটি মৌজায়  রুক্ষ জমিতে লাক্ষা চাষের প্রকল্পের কাজ চলছিল, তার একটি অনুষ্ঠানে আমার যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। সেখানে গিয়ে আমাদের রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব অর্ধেন্দু সেন মহাশয়ের সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়। উনি এক সময় মেদিনীপুর জেলাতেও কাজ করেছিলেন। ওনার কাছ থেকে জানতে পারি, উক্ত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তাদের বিভিন্ন উন্নয়নের কর্মসূচির প্রশ্নে ওনার কর্মজীবনের দীর্ঘ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর জন্য তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁকে প্রায় জোর করেই নিয়ে যায়। এই ঘটনা ২০০৯ সালের শেষ বা ২০১০ এর প্রথম দিকের। অর্ধেন্দুবাবুর সাথে কথা প্রসঙ্গে চন্দ্রকোণা রোড লাগোয়া ডিগ্রি এম আর বাঙ্গুর টিবি সেনেটরিয়ামের লাগোয়া প্রয়াত প্রাক্তন রাজ্যপাল হরেন মুখোপাধ্যায়ের নামাঙ্কিত ট্রাস্টের টিবি আফটার কেয়ার সোসাইটির বিপুল পরিমাণ অব্যবহৃত জমি ও পরিকাঠামো যে পড়ে পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, তা নিয়েও আমাদের আলোচনা হয়। তখন উনি তন্ময়বাবুদের সম্ভবত এবিষয়ে কিছু পরামর্শ দেন।

(পশ্চিমাঞ্চলের কী কাজ ২০১০ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এবং এক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর সুশান্ত ঘোষের প্রতি নেতিবাচক মনোভাবের জন্য হল না, পড়ুন আগামীপর্বে)

(চলবে)।

Comments are closed.