আন্দোলন থেকে নজর ঘোরাতেই স্ট্রার্সবার্গে জঙ্গি হামলার চক্রান্ত ফরাসি প্রশাসনের, অভিযোগ ফ্রান্সের আন্দোলনকারীদের

ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনের মাঝেই মঙ্গলবার ফ্রান্সের স্ট্রার্সবার্গের জনপ্রিয় মার্সেই ডে নোয়েলের কাছে এক আততাতীয়র এলোপাথাড়ি গুলিতে মারা গেলেন তিনজন, আহত বেশ কয়েকজন। এবার এই আক্রমণ নিয়েই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হলেন ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনকারী ও সরকার বিরোধীরা। এই ঘটনাতে তাদের অভিযোগের তির সরাসরি ইমানুয়েল মাঁকর প্রশাসনের দিকে। তাদের মূল দাবি, এই হামলার পেছনে মদত রয়েছে সরকারের, আন্দোলন থেকে নজর ঘোরাতেই পূর্ব পরকল্পনা অনুযায়ী চক্রান্ত করে এই হামলা ঘটানো হয়েছে।
গিলেট জুনে নামে আন্দোলনকারীদের একটি ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, মাঁকর সরকার নিজেদের গদি বাঁচাতে, দেশের বর্তমান অচলাবস্থা থেকে নজর ঘোরাতে চাইছে, তাই এই আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা।
কেউ কেউ লিখেছেন, আগামী ১৫ ডিসেম্বর প্যারিসসহ ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে একযোগে একটি বড় বিক্ষোভ কর্মসূচি আছে ইয়ালো ভেস্ট আন্দোলনকারীদের, ঠিক তার আগে এই গুলি চালোনার ঘটনা ঘটানো হল, যাতে এটা দেখিয়ে প্রশাসন আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ কর্মসূচি বন্ধের কথা বলতে পারে। কেউ কেউ বলছেন, ১৫ তারিখের কর্মসূচির আগে আন্দোলনকারীদের মনে ভয়ে ঢুকিয়ে দিতেই এই কাজ করেছে প্রশাসন, যাতে জমায়েত না হয়।
এএফপি’র সাংবাদিক গুইল্যুম গডিনও নিজের ট্যুইটার পোস্টে একাধিক চক্রান্তের তত্ত্ব এনে লিখেছেন, ‘এরপরে হয়তো রাস্তায় আর একজন ইয়েলো ভেস্টকেও দেখা যাবে না, দারুণ খেলেছেন মাঁকর।’ এটা নেহাতই কাকতালীয় ঘটনা নাকি পরিকল্পিত মেরুকরণের চেষ্টা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর মতে, এর পছনে অবশ্যই রাষ্ট্রের মদত আছে। অতীতেও এরকম নজির আছে, যেখানে আন্দোলন-বিক্ষোভের সময় এরকম দুষ্কৃতী হানা ঘটানো হয়েছে।
একজন লিখেছেন, একজন জঙ্গি যে হামলা চালাতে চায়, সে রাত ৮ টার সময় রাস্তায় তিনজন লোক জড়ো হওয়ার অপেক্ষা করছিল, তারপর তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালালো, এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? যেখানে জনসমাগম বেশি সেখানে গিয়ে সে এই কাজ করে আসতে পারতো।
ইয়েলো ভেস্টের ফেসবুক পেজে আরও একটি পোস্ট ঘোরাফেরা করছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, মঙ্গলবার রাত ৮ টা নাগাদ হামলা হলেও, সেদিন সকাল ১১.৪৫ নাগাদ একজন সরকারি আধিকারিক হামলা হয়েছে, সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে পোস্ট করেছেন। প্রশ্ন উঠছে, হামলার প্রায় ৮ ঘণ্টা আগে তিনি কী করে এটা জানলেন?
তবে সরকারের তরফে আন্দোলনকারীদের এই দাবির তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। ফরাসি সেক্রেটারি অফ স্টেট লরেন্ট নুনেজ বলেছেন, যে ঘটনায় তিনজন মারা গেছেন, অনেকে আহত, তা নিয়ে এরকম কথা কেউ বলতে পারে তাই তাঁদের বিশ্বাস হচ্ছে না।

Comments are closed.