মোবাইল ভিডিও-কলে থ্রি-ডি টেকনলজি আবিষ্কারের পথে হলদিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র।

মোবাইল ফোনে ভিডিও কলের ক্ষেত্রে হয়তো এক যুগান্তকারী ডিভাইস আবিষ্কারের পথে অসমের এক বাঙালি যুবক, যিনি এই মুহূর্তে হলদিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনলজি (এইচ আই টি) ইঞ্জিনিয়ারিংকলেজের ছাত্র। নাম শুভাশিস কর। সদ্য একুশে পা দেওয়া শুভাশিস অ্যাপ্লায়েড ইলেকট্রনিক অ্যান্ড ইনস্ট্রুমেনটেশনের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ২০১৬ সালে সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রাস পরীক্ষায় সফল হয়ে ভর্তি হন এইচ আই টি’তে।

সাধারণ আর পাঁচ জন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়ার থেকে আপাতভাবে আলাদা করার উপায় নেই শুভাশিসকে। কিন্তু কলেজের পড়ার মাঝেই তিনি আবিষ্কার করে ফেলেছেন এক বিশেষ প্রযুক্তি ‘হলোপিক ডিভাইস’। তাঁর কথায়, যা মুহুর্তের মধ্যে টু-ডি প্রযুক্তিকে বদলে দেবে থ্রি-ডি’তে, যার ফলে ফোনে ভিডিং কলিংয়ে আসবে আমূল পরিবর্তন। শুভাশিসের দাবি, এখন স্মার্ট ফোনে ভিডিও কলিং-এর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় টু-ডি টেকনলজি। তাঁর আবিষ্কৃত ‘হলোপিক প্রযুক্তি’ ডিভাইস, টু-ডি ডাইমেনশনকে মুহুর্তে বদলে দেবে  থ্রি-ডি’তে। এর ফলে স্মার্ট ফোনে ভিডিও কলিং বা চ্যাটের ক্ষেত্রে অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তিকে একদম অনুভব করা যাবে। শুভাশিস জানালেন, তাঁর এই কাজের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিউট অফ টেকনোলজিতে (এম আই টি) রিসার্চ স্কলার হিসাবে কাজের সুযোগ পেয়েছেন তিনি। কিছুদিনের মধ্যেই উড়ে যাবেন মার্কিন মুলুকে। আবেদন করেছেন পেটেন্টের জন্য। তা পেয়ে গেলেই বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আনতে চান এই ডিভাইস। যা মোবাইল ফোনের সঙ্গে যুক্ত করে নিলে বদলে যাবে ভিডিও চ্যাটিং-এর অভিজ্ঞতা। এই ডিভাইসের দাম ধার্য করেছেন চার হাজার টাকা।
thebengalstory.com কে শুভাশিস জানালেন, মোবাইল ফোনের ভিডিও কলিংয়ে টু-ডি ডাইমেনশন’কে থ্রি-ডি’তে বদল করার এই প্রযুক্তি ‘হলোপিক টেকনোলজি’ বলে পরিচিত। ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিউট অফ টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, ২০৫০ সালে পুরোপুরি এই টেকনোলজিকে কার্যকর করা সম্ভব। কিন্তু তার অনেক আগেই হলদিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র শুভাশিস এই প্রযুক্তি নিয়ে কাজ শুরু করেন। ১৯৯৭ সালে জন্ম শুভাশিসের। অসমের জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ে পড়েছেন দশম শ্রেণী পর্যন্ত। একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়েছেন বিশাখাপত্তনমের শ্রী চৈতন্য কলেজে। তারপর ভর্তি হন এইচ আই টি’তে। পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে বলে অন্য ছাত্রদের সঙ্গে কলেজ হস্টেলে থাকেন না শুভাশিস। থাকেন একটা বাড়ি ভাড়া করেন। কলেজে পড়া ছাড়া বাড়িতেও সারাদিনই মেতে থাকেন নিজের গবেষণায়, যা সম্প্রতি চমকে দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষকেও। এইচ আই টি’র অধিকর্তা ডঃ এম এন বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, তাঁরা রীতিমতো গর্বিত শুভাশিসের এই সাফল্যে, যাকে স্বীকৃতি দিয়েছে এম আই টি। সামনের সপ্তাহেই তাঁর কাজের জন্য শুভাশিসকে মুম্বইয়ে ডেকে পাঠিয়েছে দেশের একটি বৃহৎ মোবাইল সংস্থা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.