কাঠুয়া কাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ আইএমএফ প্রধানের, খোঁচা প্রধানমন্ত্রীকে

এতদিন দেশে মহিলাদের নিরাপত্তার অভাব ও শিশুদের উপর ক্রমবর্ধমান নির্যাতন নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনা হজম করতে হচ্ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। বিভিন্ন ঘটনায় তাঁর নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল জনসাধারণের মনেও। এবার কাঠুয়া কান্ড এবং ভারতে মহিলাদের ওপর বেড়ে চলা অত্যাচারের ঘটনায় ঘুরিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে খোঁচা দিলেন আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ)এর প্রধান ক্রিস্টিন ল্যঁগার্দ। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কাঠুয়া কান্ডের প্রেক্ষাপটে আইএমএফ প্রধান বলেন, ভারতে মহিলাদের উপর যেসব ঘটনা ঘটছে, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর আরও বেশি করে নজর দেওয়া উচিত। এই ধরনের ঘটনাকে হতাশাজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ভারতে মহিলাদের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন আইএমএফ প্রধান। এর আগে জানুয়ারি মাসে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের সম্মেলন চলাকালীন নরেন্দ্র মোদির কাছে এবিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন ক্রিস্টিন ল্যঁগার্দ। সেসময় একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আইএমএফ প্রধান বলেছিলেন, নরেন্দ্র মোদি নিজের ভাষণে দেশের মহিলাদের কথা বেশি বলেন না, তাঁর উচিত মহিলাদের কথা আরও একটু বেশি করে বলা। তাঁর মতে দেশের মহিলারা ভাল থাকলে, ভাল কাজ করলে দেশের অর্থনীতিরও ভালো হবে।
ভারতে মহিলা ও শিশুদের উপর ক্রমবর্ধমান হিংসার ঘটনায় বিশ্বমঞ্চে ইতিমধ্যেই যথেষ্ট মুখ পুড়েছে ভারতের। কাঠুয়ার ঘটনায় সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেজ। নিগৃহীতার পরিবার সঠিক বিচার পাবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি। সম্প্রতি লন্ডন সফরে গিয়েও এবিষয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। ঘটনায় অভিযুক্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংঠন। প্রকাশ্যে অভিযুক্তদের পক্ষে মিছিল করায় মন্ত্রিত্ব খোয়াতে হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের দুই বিজেপি নেতাকে। ইতিমধ্যেই নিরাপত্তার দাবিতে এবং ভিন রাজ্যে মামলার শুনানি সরাতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে নিগৃহীতার পরিবার। যার প্রেক্ষিতে জম্মু-কাশ্মীর সরকারকে নিগৃহীতার পরিবার ও তাঁদের আইনজীবীকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। মামলা ভিনরাজ্যে সরানো নিয়ে জম্মু-কাশ্মীর সরকারের জবাবও তলব করা হয়েছে।
এই অবস্থায় আইএমএফ প্রধানের এই মন্ত্যব্য দিল্লি সরকারের পক্ষে যথেষ্ট অস্বস্তিকর বলেই মনে করছে ওয়াকিবহল মহল। দেশে শান্তি-শৃঙ্খলার এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি অর্থনীতির পক্ষেও সুখকর নয় এবং এর ফলে বিনিয়োগকারীদের কাছেও ভুল বার্তা যাবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

Leave A Reply

Your email address will not be published.