আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কেরল হাইকোর্টে বিজয়ন সরকার, তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দর রক্ষণাবেক্ষণের টেন্ডারে দুর্নীতির অভিযোগ

মনমোহন সিংহ সরকারের আমলে দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরগুলির আধুনিকীকরণ ও রক্ষণাবেক্ষণে বেসরকারি সংস্থা নিয়োগের সিদ্ধান্তে বাদ সেধেছিল পশ্চিমবঙ্গের সিপিএম নেতৃত্বাধীন বাম সরকার। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সরকারি সংস্থাকে দিয়েই কলকাতা বিমানবন্দরের কাজ করানোর সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। সিপিএমকে কোনওভাবেই রাজি করাতে না পেরে শেষ পর্যন্ত কলকাতা বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সরকারি হাতেই থাকে। এবার কেরলের তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণ ও রক্ষণাবেক্ষণের বরাত আদানিদের হাতে তুলে দেওয়ার টেন্ডার প্রক্রিয়া দুর্নীতির অভিযোগ তুলল কেরলের বিজয়ন সরকার।
মাত্র ক’দিন আগেই দেশের ৬ টি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনার বরাত জিতে নিয়েছে মোদী ঘনিষ্ঠ আদানি গোষ্ঠী। তার মধ্যে রয়েছে কেরলের তিরুবনন্তপুরম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও। এবার সেই বিমানবন্দরের বরাত আদানি গোষ্ঠীকে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতে গেল কেরলের সিপিএম সরকার। বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের টেন্ডারে অংশ নেওয়া কেরালা স্টেট ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (কেএসডিআইসি) কেরল হাইকোর্টে মামলা করল আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। কেরল সরকারের হয়ে এই সংস্থাই টেন্ডারে দরপত্র দিয়েছিল। কেরল হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে কেএসডিআইসি-র আবেদন, খতিয়ে দেখা হোক শর্ত এবং দরপত্র প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা। যে সংস্থার এই ধরনের কাজে কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতাই নেই তাদের কী করে বেছে নেওয়া হল, আবেদনে প্রশ্ন কেএসডিআইসির। thenewsminute.com এ এই খবর প্রকাশিত হয়েছে।
সূত্রের খবর, গোটা টেন্ডার প্রক্রিয়াটিই বিধি বহির্ভূত, অযৌক্তিক এবং স্বচ্ছ ও আইনানুগ বিচারের পরিপন্থী বলে কেরল সরকার আবেদনে উল্লেখ করেছে। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন অবশ্য আগেই আদানি এন্টারপ্রাইজের বরাত জেতার নেপথ্যে মোদী-ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তুলেছিলেন। টেন্ডার প্রক্রিয়ায় বড়সড় কেলেঙ্কারি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী। আদানিরা বিমানবন্দর রক্ষণাবেক্ষণের কিছুই জানেন না, কিন্তু নরেন্দ্র মোদীকে খুব ভালো জানেন, চেনেন বলে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য পিনারাই বিজয়ন।
সিপিএম শুরু থেকেই বিমানবন্দর বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার বিরোধী। রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্য কেন্দ্র দরপত্র আহ্বানের পরই বাম মহলের অনেকেও দুর্নীতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। এবার সেই দুর্নীতির অভিযোগেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল কেরলের সরকারি প্রতিষ্ঠান।

Comments are closed.