সাবরীমালা ইস্যুতে হিন্দুত্ববাদীদের বিক্ষোভে আক্রান্ত কেরলের সংবাদমাধ্যম বয়কট করল বিজেপির সমস্ত কর্মসূচি

সাবরীমালা ইস্যুতে বনধের দিন খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে বৃহস্পতিবার বিজেপি-আরএসএস কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হল কেরলের সংবাদমাধ্যম। যার জেরে রাজ্যের সব সাংবাদমাধ্যম এদিন বিজেপির সমস্ত সাংবাদিক বৈঠক বয়কট করে।
প্রথা ভেঙে দুই মহিলার সাবরীমালা মন্দিরে প্রবেশের প্রতিক্রিয়ায় বিক্ষিপ্ত ভাঙচুর, দোকান-পাট বন্ধ করার ঘটনা শুরু হয়েছিল বুধবার সকাল থেকেই। বৃহস্পতিবার সারাদিনও কেরলজুড়ে তাণ্ডব চলল বিজেপি-আরএসএস কর্মীদের। আর এই খবর সংগ্রহ করতে গিয়েই আক্রান্ত হতে হল সংবাদমাধ্যমকে।
বুধবার বিন্দু এবং কনকদুর্গা নামে দুই মহিলার মন্দিরে প্রবেশের খবর জানাজানি হতেই রে-রে করে ওঠে বিভিন্ন গোঁড়া হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। এর বিরুদ্ধে নানাভাবে প্রতিবাদ জানায় সংগঠনগুলি। কোথাও কোথাও তা হিংসাত্মক চেহারাও নেয়, আক্রমণ করা হয় পেশার তাগিদে খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিকদেরও। যদিও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি একে ধর্মপ্রাণ মানুষের আবেগ এবং ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে দায় সেরেছে।
সাবরীমালা মন্দিরে দুই মহিলার প্রবেশে বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার কেরলে হরতালের ডাক দেয় মন্দির কর্ম সমিতি, আয়াপ্পা কর্ম সমিতিসহ একাধিক হিন্দু সংগঠন। কিন্তু এই প্রতিবাদী হরতালে সব ছাড়িয়ে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য হয়ে ওঠেন সাংবাদিকরা। জায়গায় জায়গায় দফায় দফায় সংগঠিত, বিক্ষিপ্ত আক্রমণ চালানো হয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক এবং ক্যামেরাম্যানের ওপর। ক্যামেরা কেড়ে নেওয়া, ভিডিও ফুটেজ মুছে দেওয়া, নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে এই হিন্দু বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে।
এর প্রতিবাদেই এদিন কেরলে বিজেপির সাংবাদিক বৈঠক বয়কট করেছেন কেরলের সাংবাদিকরা। দ্য কেরালা ইউনিয়ন অফ ওয়ার্কিং জার্নালিস্ট এর ডাকে এদিন থিরুভনন্তপুরম, কোট্টায়াম ও কোঝিকোড়ে বিজেপির সাংবাদিক বৈঠকে গরহাজির থাকেন সাংবাদিকরা। বয়কট করেন কেরল বিজেপির সভাপতি পিএস শ্রীধরণ পিল্লাই ও রাজ্য বিজেপিরফ সাধারণ সম্পাদক কে সুরেন্দ্রণের সাংবাদিক বৈঠক। সাংবাদিক সংগঠনটির তরফে বলা হয়েছে, একদিকে বিক্ষোভকারীরা চাইবে তাদের খবর প্রকাশিত হোক সংবাদমাধ্যমে, অন্যদিকে সাংবাদিকদের উপর আক্রমণও করা হবে, এটা চলতে পারে না। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভের ওপর এমন আক্রমণ দেখেও নেতৃত্ব কেন চুপ, প্রশ্ন তুলেছেন সাংবাদিকরা।

Comments are closed.