মুঘল সম্রাট শাহজাহানের প্রতিষ্ঠিত ভারতের ঐতিহাসিক স্থাপত্য লালকেল্লাকে ২৫ কোটি টাকার বিনিময় নিজেদের করায়ত্ত করল ডালমিয়া-ভারত গোষ্ঠী। ভারত সরকারের ‘স্থাপত্য রক্ষণাবেক্ষন’ প্রকল্পের অধীনে ডালমিয়া গোষ্ঠীর সঙ্গে আগামী পাঁচ বছরের জন্য এই চুক্তি হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। ডালমিয়া গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ২৩শে মে-র মধ্যে লালকেল্লার সমস্ত নিরাপত্তার দায়িত্ব একটি নিরাপত্তা গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া হবে। স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের আগে লালকেল্লাকে সম্পুর্ণভাবে সাজিয়ে তোলার জন্য ২৪শে জুলাই থেকে পুরোদমে কাজ শুরু হবে। জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে পাঁচ বছরের জন্য লালকেল্লার মালিকানা ডালমিয়া গোষ্ঠীর হাতে থাকবে। তারপর পারস্পারিক সম্মতির ওপর ভিত্তি করে চুক্তিটির মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে।
ডালমিয়া গোষ্ঠীর কর্ণধার মহেন্দ্র সিংহি বলেন, ‘ইউরোপের সৌধগুলির দিকে তাকিয়ে দেখুন, পুরোনও হলেও কীভাবে তা সংরক্ষণ করা হচ্ছে। আমরাও লালকেল্লাকে বিশ্বের সেরা সৌধ হিসেবে গড়ে তুলব’। সূত্রের খবর, সৌধগুলির রক্ষণাবেক্ষন নিয়ে গত ৯ এপ্রিল কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রক এবং ভারতের প্রত্নত্ত্বাত্তিক বিভাগ তথা এএসআইয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়। ২৫শে এপ্রিল মন্ত্রক চুক্তিটিতে সাক্ষর করে। দেশের ঐতিহাসিক সৌধগুলিকে কর্পোরেট নিয়ন্ত্রণে আনার যে পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছিল তারই অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ছয় মাসে ডালমিয়া গোষ্ঠীকে পর্যটকদের জন্য বিশেষ কিছু সুবিধে প্রদান করতে হবে। তার মধ্যে পানীয় জল, ব্যাটারি চালিত গাড়ি ও বায়ো টয়লেটসহ নানা জিনিস থাকবে। ২০১৭ সালে ভারত সরকার ‘অ্যাডপ্ট আ হেরিটেজ’ প্রকল্পটি চালু করে। যার উদ্দেশ্য, দেশের প্রায় ১০০ টি ঐতিহাসিক সৌধকে কর্পোরেট আওতায় নিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ করা। আগ্রার তাজমহল, কাংড়া ফোর্ট, মুম্বইয়ের বৌদ্ধ কানেরী ও কোনারক মন্দির নাম তালিকায় রয়েছে। জানা গিয়েছে, আইটিসি গোষ্ঠী এবং জিএমআর স্পোর্টসের মধ্যে তাজমহল অধিগ্রহণের নিয়ে চূড়ান্ত প্রতিযোগীতা চলছে। ডালমিয়া গোষ্ঠীর পাশাপাশি লালকেল্লা অধিগ্রহণে একটি বেসরকারি বিমান সংস্থা এবং জিএমআর গোষ্ঠীও নিলামে যোগদান করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে লালকেল্লা অধিগ্রহণের ছাড়পত্র লাভ করল ডালমিয়ারা।