হিন্দু ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগে কেরলের সিপিএম নেতা এবং অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ্যাকের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ

কেরলের সাবরীমালা মন্দিরে সব বয়সী মহিলার প্রবেশাধিকারের ইস্যুতে সিপিএম-বিজেপির মধ্যে লড়াই এবার আদালতে গড়াতে চলেছে। সাবরীমালা মন্দির নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক রায় দেওয়ার পরই তাকে স্বাগত জানিয়েছিল পিনারাই বিজয়নের নেতৃত্বাধীন সিপিএম সরকার। কিন্তু এই রায়ের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে আরএসএস-বিজেপি। যা নিয়ে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে বারবারই গণ্ডগোল হয়েছে কেরলজুড়ে। লোকসভা ভোট যত এগোচ্ছে, ততই এই ইস্যুতে হিন্দু ভাবাবেগকে কাজে লাগিয়ে কেরলে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে বিজেপি। যদিও রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ সিপিএম সরকার নিয়েছে, কিন্তু কেরলে ধর্মীয় মেরুকরণের ছবিও স্পষ্ট হচ্ছে দ্রুত।
কয়েকদিন আগেই কেরলের সিপিএম রাজ্য সম্পাদক কোডিয়ারি বালাকৃষ্ণণ সাবরীমালা ইস্যুতে আরএসএসকে খালিস্থানীদের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘আরএসএসের আচরণ ঠিক খালিস্তানী জঙ্গিদের মতো। যেভাবে খালিস্তানীরা অমৃতসরে স্বর্ণ মন্দিরের কর্তৃত্ব হাতাতে চেয়েছিল, সাবরীমালা মন্দিরে ঠিক সেই পথ অনুসরণ করছে আরএসএস। সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে বিজেপি নেতা গিরিরাজ সিংহ বলেছিলেন, কেরলে সিপিএমের আচরণ উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট শাসক কিম জং উনের মতো।
সেই বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার সাবরীমালা মন্দিরের আরাধ্য দেবতা আয়াপ্পার মন্ত্রোচ্চারণ নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগে কেরলের সিপিএম নেতা এবং অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ্যাকের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠালেন জনৈক এন আর সুধাকরণ নামে এক ব্যক্তি। তাঁর বাড়ি কোচিতে। আইজ্যাকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার হুঁশিয়ারি দিয়ে এন আর সুধাকরণের পক্ষ থেকে তাঁর আইনজীবী এস আর কে প্রতাপ আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন কেরলের অর্থমন্ত্রীকে। গোটা বিষয়টি নিয়ে রবিবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে আরএসএস মুখপত্র ‘অর্গানাইজারে’।

সেখানে বলা হয়েছে, নিজের একটি ফেসবুক পোস্টে প্রকাশ্যে দেবতা আয়াপ্পার মন্ত্রোচ্চারণ নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন কেরলের অর্থমন্ত্রী এবং সিপিএম নেতা টমাস আইজ্যাক। তাই তাঁকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে বলা হয়েছে, দু’দিনের মধ্যে ফেসবুকেই একটি পোস্ট লিখে তাঁকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। এবং তাঁর ক্ষমা চাওয়ার পোস্টটি যাতে সবাই আগামী এক বছর ধরে দেখতে পান, তাই সেটি পিনড পোস্ট হিসাবে প্রকাশ করতে হবে। পাশাপাশি ১০ কোটি টাকা জরিমানা দেওয়ার কথাও ওই নোটিশে বলে হয়েছে, যা সাবরীমালা মন্দিরের উন্নয়নে ব্যয় হবে। নোটিশে বলা হয়েছে, আইজ্যাক দু’দিনের মধ্যে ক্ষমা না চাইলে তাঁরর বিরুদ্ধে ফৈজদারি ধারায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Comments are closed.