নোটবন্দির সময় বিজেপি নেতা ও তাঁর কাকা ৭ কোটি টাকা নিয়ে ফেরত না দেওয়ায় ‘চরম শাস্তি’ মাওবাদীদের, লিফলেট ঘিরে চাঞ্চল্য

শনিবার রাতে বিহারের ঔরঙ্গাবাদে মাওবাদী হানায় বিজেপি নেতা এবং রাজ্য বিধান পরিষদের সদস্যের কাকার মৃত্যু ঘটনায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। তাদের থেকে ৭ কোটি টাকা নিয়ে তা ফেরত না দেওয়ার জন্য বিজেপি নেতার কাকাকে ‘শাস্তি’ দেওয়া হয়েছে বলে লিফলেট বিলি করে জানাল মাওবাদীরা।
মাওবাদীরা লিফলেট দিয়ে দাবি করেছে, বিজেপি নেতা রাজন কুমার সিংহ ও তাঁর কাকা নরেন্দ্র সিংহ নোটবন্দির সময় ৭ কোটি টাকা নিয়েছিলেন তা বদলে নতুন নোট দেওয়ার জন্য। কিন্তু আর ফেরত পাওয়া যায়নি সেই টাকা। প্রতিশোধ নিতে তাই নেতার কাকাকে খুন করা হয়েছে। বিহারের ঔরঙ্গাবাদের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
শনিবার রাতে মাওবাদীদের প্রায় ২০০ জনের একটি দল বিজেপি নেতা রাজন কুমার সিংহের বাড়িতে হামলা চালায়। বিজেপি নেতার কাকা নরেন্দ্র সিংহকে গুলি করে হত্যা করে তারা। এরপর একটি বাড়ি এবং ১০ টি গাড়ি জ্বালিয়ে দেয় মাওবাদীরা। ফেলে যাওয়া পোস্টারে মাওবাদীদের বার্তা, কাকা ও তাঁর ভাইপোকে নোট বাতিলের সময় তারা ৭ কোটি টাকা দিয়েছিল বদল করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু পরে সেই টাকা আর ফেরত পাওয়া যায়নি।
বিজেপি নেতার বাড়িতে হামলার খবর পেয়ে শনিবার রাতে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশ। বেশ কিছুক্ষণ পুলিশের সঙ্গে মাওবাদীদের গুলির লড়াই চলে। তবে কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। গুলি ছুড়তে ছুড়তে ঘটনাস্থল থেকে পালায় মাওবাদীরা।
বিজেপি নেতার কাকা বছর পঞ্চান্নর নরেন্দ্র সিংহের মৃত্যু হয়েছে মাওবাদীদের গুলিতে। রবিবার সকালে তল্লাশির সময় মাওবাদীদের লেখা পোস্টার পায় পুলিশ। সেখানে লেখা রয়েছে রাজন কুমার সিংহ এবং নরেন্দ্র সিংহের টাকা নেওয়ার কথা। যদিও এই অভিযোগের কথা অস্বীকার করেছেন বিহার বিধান পরিষদের সদস্য তথা বিজেপি নেতা রাজন কুমার সিংহ। কিন্তু পোস্টারে রাজন কুমারের নামের উল্লেখ থাকায় এবং অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে ওই নেতার সঙ্গে মাও যোগের কথা একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ।
অন্যদিকে, এই ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনকে একহাত নিয়েছেন রাজন কুমার সিংহ। তাঁর অভিযোগ, বহুবার আবেদন জানিয়েও গ্রামে অন্তত একটি পুলিশ ফাঁড়িরও ব্যবস্থা করেনি প্রশাসন। পুরো ঘটনার পিছনে রাজ্য সরকার ও পুলিশকে কাঠগোড়ায় তুলেছেন তিনি। রাজন কুমারের অভিযোগ, এই অঞ্চলে বেশ কিছুদিন ধরে সক্রিয় হচ্ছিল মাওবাদী কার্যকলাপ। তিনি এবিষয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে চিঠিও দিয়েছিলেন। এছাড়া ডিজিপিকে একাধিকবার এনিয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জিও জানান। কিন্তু কেউই কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। তাই, এই পরিণামের জন্য নীতীশ সরকার ও পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী করেছেন রাজন কুমার সিংহ।

Comments are closed.