সাড়ে চার বছরে মোদীর বিদেশ সফরে বিমান ভাড়ারই খরচ ২০২১ কোটি

বিগত সাড়ে চার বছরে ৮৪ টি বিদেশ সফর। বিমান ভাড়ার খরচই ২ হাজার কোটি টাকারও বেশি! না, এটা বিরোধীদের অভিযোগ কিংবা কোনও সূত্রের দেওয়া তথ্য নয়। ক্ষমতায় আসার পর থেকে গত সাড়ে চার বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিদেশ সফর নিয়ে এটাই সরকারি হিসেব। যা পেশ হয়েছে সংসদে। এবং হিসেব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীরই সহকর্মী, পররাষ্ট্র দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী ভি কে সিংহ।
এছাড়া বিজ্ঞাপন বাবদ খরচ হয়েছে আরও কয়েক হাজার কোটি টাকা। তার মানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিদেশ সফর বাবদ ভারত সরকারের মোট ব্যয় হয়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের রাজনৈতিক চর্চার মধ্যে আচমকা এই প্রসঙ্গ এল কীভাবে? বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে এ নিয়ে তথ্য চান কেরালার সিপিএম সাংসদ বিনয় বিশ্বম। তিনি জানতে চান, নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর গত সাড়ে চার বছরে কতবার বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন। তাঁর এই সফরগুলিতে সফরসঙ্গী হিসেবে কে বা কারা ছিলেন, কী কী চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে এবং এয়ার ইন্ডিয়াকে কত টাকা দিতে হয়েছে, ইত্যাদি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিদেশ সফর বারবারই বিরোধীদের নিশানায় এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর ঘিরে বিভিন্ন সময়ে কংগ্রেস থেকে শুরু করে মোদী বিরোধী সমস্ত শিবিরই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপিকে। চলতি বছরের জুলাই মাসে বিরোধীদের চাপে প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর নিয়ে বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করতে বাধ্য হয় কেন্দ্র। সেই তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালের জুন মাসে প্রথম বিদেশ সফরে যান নরেন্দ্র মোদী। ২০১৪ সালের জুন থেকে ২০১৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদীর বিদেশ সফরে খরচ হয় ১,৪৮৪ কোটি টাকা। ওই সময় পর্যন্ত ক’টি দেশ সফর করেন মোদী? কেন্দ্রের পরিসংখ্যান জানায়, ওই পর্যন্ত ৮৪ টি দেশে সফর করেছেন মোদী। আর ওই সময় পর্যন্ত মোট ৪২ বার বিদেশ সফরের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে, প্রধানমন্ত্রীর এয়ারক্রাফ্টের দেখভালের খরচই ছিল ১,০৮৮.৪২ কোটি টাকা। চার্টার্ড ফ্লাইটের খরচ ছিল ৩৮৭.২৬ কোটি টাকা। এই পরিসংখ্যান ২০১৪ সালের ১৫ জুন থেকে ২০১৮ সালের ১০ জুন পর্যন্ত।
ভি কে সিংহ জানান, মোদীর বিদেশ সফরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খরচ হয়েছে বিমান রক্ষণাবেক্ষণে। যার পরিমাণ ১ হাজার ৫৮৩ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা। এছাড়া চাটার্ড বিমানের জন্য সরকারি কোষাগার থেকে গিয়েছে ৪২৯ কোটি ২৮ লক্ষ এবং নিরাপদ হটলাইনের জন্য খরচ হয়েছে ৯ কোটি ১২ লক্ষ টাকা। তবে এই হটলাইনের খরচ ধরা হয়েছে ২০১৪ থেকে ২০১৭- এই তিন বছরে। ২০১৬-র নভেম্বরে নোট বাতিলের ঘোষণার পরই জাপান সফরে চলে যান মোদী। তখন এ নিয়ে তীব্র ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ হয়েছিলো।

Comments are closed.