‘মুসলিম, খ্রিষ্টান, কমিউনিস্টরা মানবাধিকারের মূল বিপদ’ মন্তব্য করেছিলেন নয়া সিবিআই প্রধান নাগেশ্বর রাও, মামলা করেছিল সিপিএম

সম্প্রতি সিবিআই এর অন্দরে একবারে শীর্ষ স্তরে নজিরবিহীন দ্বন্দ্বের জেরে সংস্থার প্রধান অলোক ভার্মা ও স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানাকে সরিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু ভার্মার জায়গায় সিবিআই-এর মাথায় অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান হিসাবে যাঁকে বসানো হয়েছে, সেই এম নাগেশ্বর রাওকে নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে একাধিক বিতর্ক। ১৯৮৪ ব্যাচের ওড়িশা ক্যাডারের এই আইপিএস অফিসারের ভাবমূর্তিও যে স্বচ্ছ নয় তা নিয়ে এরই মধ্যে অভিযোগ জানিয়েছে বিরোধীরা। প্রথম দিনই অভিযোগ করেছিলেন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণও।
তামিলনাড়ুতে একটি জমি সংক্রান্ত মামলায় অধস্তন সিবিআই অফিসারদের সঠিকভাবে তদন্ত করতে না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে, যার জেরে তাঁকে সেখান থেকে অন্যত্র বদলি করেছিলেন তৎকালীন সিবিআই প্রধান। এছাড়াও কর সংক্রান্ত ভুল তথ্য দাখিল, ওড়িশা দমকল ডিরেক্টরেটের মাথায় থাকার সময় আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ নাগেশ্বরের বিরুদ্ধে রয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিল বিরোধীরা।
এবার সামনে এল তাঁর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক মন্তব্য করার অভিযোগ। প্রায় তিন দশক আগে ১৯৯০ সালে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক মন্তব্য করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ওড়িশা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন সেই রাজ্যের সিপিএম নেতা আলি কিশোর পট্টনায়েক। অভিযোগ, সেই সময় একটি অনুষ্ঠানে তিনি নাকি বলেছিলেন, মুসলমান, খ্রিষ্টান ও কমিউনিস্টরাই হল মানবাধিকারের প্রশ্নে মূল বিপদ। তাঁর মতে, যাঁরা ভারতীয় সংবিধান তৈরি করেছিলেন তাঁরা সংখ্যালঘুদরদী ছিলেন। ওড়িশার গঞ্জম জেলার বেহরামপুরে ১৯৯০ সালের ১০ ডিসেম্বর এক অনুষ্ঠানে এই বক্তব্য রাখেন তিনি। সেসময় তিনি বেহরামপুর ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছিলেন বলে জানা গেছে। সংবাদমাধ্যম এনডি টিভি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেদিন ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেক শ্রোতা, দর্শকও নাগেশ্বর রাওয়ের ওই বক্তব্যের বিরোধিতা করেছিলেন।
সিপিএম নেতা আলি কিশোর পট্টনায়েকের দাবি, ওই অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত ছিলেন। নাগেশ্বর রাওয়ের ওই মন্তব্য শুনে সবাই হতবাক হয়ে পড়েছিলেন। স্থানীয় এক সংবাদপত্রেও প্রকাশিত হয় খবরটি। পরে ওড়িশা বিধানসভাতেও প্রসঙ্গটি ওঠে।
এরপর ওড়িশার সিপিএম নেতা আলি কিশোর পট্টনায়েক ওড়িশা হাইকোর্টে নাগেশ্বর রাওয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন। নাগেশ্বরের বিরুদ্ধে তদন্তও শুরু হয়, কিন্তু তিনি কটক থেকে অন্যত্র ট্রান্সফার হয়ে যাওয়ায় নাগেশ্বরের কেসটি ধামাচাপা পড়ে যায়। যা রি-ওপেন করার ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা চলছে বলে সিপিএম নেতা কিশোর পট্টনায়েক জানিয়েছেন।

Comments are closed.