পরিসংখ্যান প্রকাশ করা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাত, ইস্তফা দিলেন ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকাল কমিশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধানসহ ২

কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ আগেই উঠেছিল বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে। সিবিআই, আরবিআই-এর মতো প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার যে অভিযোগ বিরোধীরা করে আসছিল তা আরও জোরদার হলো ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকাল কমিশনের (এনএসসি) ভারপ্রাপ্ত প্রধান এবং আরও এক সদস্যের ইস্তফার ঘটনায়।
২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার আগে নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছিলেন, প্রতি বছর দু’কোটি বেকারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন তাঁরা। কিন্তু ২০১৬ সালের নোটবন্দি পরবর্তী সময়ে কর্মসংস্থানের সেই তথ্যই প্রকাশ করতে দিচ্ছে না কেন্দ্র, এই অভিযোগ তুলে ইস্তফা দিলেন ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকাল কমিশন (এনএসসি) বা জাতীয় পরিসংখ্যান কমিশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান পি সি মোহনন। ইস্তফার পর পি সি মোহননের বিস্ফোরক দাবি, কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। যে রিপোর্ট তাঁরা প্রকাশ করার চেষ্টা করছেন তা আটকে রাখা হচ্ছে। অথচ যে কোনও পরিসংখ্যান প্রকাশ করার ক্ষেত্রে এনএসসি হল দেশের সর্বোচ্চ স্বশাসিত সংস্থা।
তাঁর সঙ্গে সঙ্গে ইস্তফা দিয়েছেন জে ভি মীনাক্ষী নামে এনএসসির আরও এক সদস্য। তিনি ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিকাল সার্ভিসের প্রাক্তন সদস্য এবং দিল্লি স্কুল অব ইকোনমিক্সের অধ্যাপক।
পরিসংখ্যান তৈরি করার সাত সদস্যের এই কমিটিতে এখন থাকলেন মাত্র দুজন, একজন মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ প্রবীণ শ্রীবাস্তব এবং নীতি আয়োগের অমিতাভ কান্থ। পি সি মোহনন ও জে ভি মীনাক্ষীর পদত্যাগের আগে তিনটি পদ খালি হয়েছিল।
কংগ্রেস সরকারের আমলের যে কোনও পরিসংখ্যান কমিয়ে এবং নিজেদের সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের তথ্যকে বাড়িয়ে দেখানোর জন্য মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন তথ্য বিকৃত করার অভিযোগ করে আসছে বিরোধীরা। কিছুদিন আগেই ইউপিএ আমলের গড় বৃদ্ধি সম্পর্কিত তথ্য বাদ দিয়ে দেন নীতি আয়োগের ভাইস-চেয়ারম্যান রাজীব কুমার এবং মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ প্রবীণ শ্রীবাস্তব, তার জায়গায় বিজেপি সরকারের আমলের চার বছরে বৃদ্ধির হার বেশি বলে দেখান। যা নিয়ে শুরু হয় প্রবল বিতর্ক। এনএসসি থেকে দুই সদস্যের পদত্যাগ এবং পদত্যাগের পর পি সি মোহননের অভিযোগ এই বিতর্ক আরও উস্কে দিয়েছে।
ইতিমধ্যেই, পি সি মোহনন ও জে ভি মীনাক্ষীর পদত্যাগের ঘটনায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধীরা। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম ট্যুইট করেন, জাতীয় পরিসংখ্যান কমিশনের ‘মৃত্যুতে’ তিনি গভীরভাবে শোকাহত। দূষিত সরকারের অবহেলায় আরও এক স্বশাসিত সংস্থার মৃত্যু হল বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি।

Comments are closed.