পুলওয়ামায় ফিদায়েঁ হামলার প্রেক্ষিতে মোদীকে খোলা চিঠি স্বদেশী জাগরণ মঞ্চের, আরএসএসের মুখপত্রে চিনা পণ্য বয়কটের ডাক

পুলওয়ামায় মর্মান্তিক ফিদায়েঁ হামলার পর, বিশ্বের প্রায় সমস্ত দেশ যখন ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার জন্য পাকিস্তানের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে, তখনও এই হামলার দায় স্বীকার করে নেওয়া জঙ্গি সংগঠনের নেতা মাসুদ আজাহারকে বিশ্বের কাছে সন্ত্রাসবাদী তকমা দিতে নারাজ চিন। এবার প্রতিবেশী রাষ্ট্রের এই ‘সন্ত্রাসবাদী তোষণে’র বিরুদ্ধে ‘অসহযোগ’ শুরু করল হিন্দুত্ববাদী সংগঠন স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ। সংগঠনের তরফে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা একটি খোলা চিঠিতে আবেদন করা হয়েছে, ভারতে সমস্ত চিনা পণ্য বয়কট করুক সরকার। আরএসএসের মুখপত্র ‘অর্গানাইজারে’ প্রকাশিত হয়েছে এই খোলা চিঠি।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ওই চিঠিতে লেখা হয়েছে, পুলওয়ামার জঙ্গি হানার ঘটনা দেশবাসীর বিবেককে ঝাঁকুনি দিয়েছে। তাই যেসব দেশ এই সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে সমর্থন করে, সেই দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে ভারতের সাহায্য করা উচিত নয়। অর্গানাইজারে প্রকাশিত চিঠি অনুযায়ী, ফিদায়েঁ জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানকে দেওয়া মোস্ট ফেভার্ড নেশনের মর্যাদা ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ নামের ওই সংগঠনটি। আরএসএসের মুখপত্রের প্রকাশিত চিঠিতে তারা লিখেছে, চিনের বিরুদ্ধে এমনই পদক্ষেপ করা উচিত ভারতের। চিনা আইটি কোম্পানিগুলি যাতে বিনা বাধায় ভারতীয়দের সম্পর্কে কোনও তথ্য নিতে না পারে সে সম্পর্কে বিধিনিষেধ আরোপ করা উচিত দেশের, বলেও পরামর্শ কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটির।
তাদের আরও দাবি, গত দু’বছরে চিনের সোশ্যাল মিডিয়া, ই-কমার্স সংস্থা এবং অ্যাপসের বহুল ব্যবহারের মাধ্যমে ভারতীয়দের বিপুল ডেটা বা তথ্য চিনের হাতে চলে যাওয়াটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। উল্লেখ্য, এই আশঙ্কাতেই ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সেনাবাহিনীকে ৪২ টি চিনা অ্যাপ ব্যবহার না করার নির্দেশ দিয়েছিল।
বর্তমানে ভারতের নেটিজেনদের মধ্যে টিকটক অ্যাপ এবং হেলো অ্যাপের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এই চিনা অ্যাপগুলিকে ভারতে নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা  খোলা চিঠিতে। পাশাপাশি, চিনা টেলিকম সংস্থা ও স্টার্ট আপ ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করছে বলেও দাবি স্বদেশী জাগরণ মঞ্চের। অর্গানাইজারে প্রকাশিত চিঠিতে ডানপন্থী হিন্দু সংগঠনটি দাবি করেছে, ইতিমধ্যেই ভারতে ৫- জি সেক্টর তৈরির প্রস্তুতি চালাচ্ছে চিনা টেলিকম কোম্পানিগুলি। স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ মনে করে, এই কোম্পানিগুলিকে সরিয়ে কোনও ভারতীয় কোম্পানিকে সুযোগ দিলে দেশের আর্থিক উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে ।
চিঠির শেষ অংশে লেখা হয়েছে, কেবলমাত্র ভিতর থেকে শক্তিশালী দেশই পারে দু-মুখো প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির মোকাবিলা করতে। সংগঠনের দাবি, তাঁরা সর্বদাই জাতীয় ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার পক্ষে সওয়াল করে। এই প্রেক্ষিতে তাঁদের আবেদন, পাকিস্তানের ‘প্রিয় বন্ধু’ চিনের টেলিকম কোম্পানিগুলি ও চিনা পণ্য সর্বতোভাবে বয়কট করুক ভারত।

Comments are closed.