রাহুলকে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী করা নিয়ে স্ট্যালিনের মন্তব্য অপরিণত, বিরোধীদের ক্ষোভ প্রশমনে বললেন কমল নাথ

কয়েক মাস আগেই রাহুল গান্ধী নিজে বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী হতে তাঁর আপত্তি নেই। তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে সেই সময় বিরোধী ঐক্যে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে বুঝতে পেরেই তড়িঘড়ি পরিস্থিতি সামাল দিতে জানিয়েছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা মায়াবতী প্রধামন্ত্রী হলেও তাঁর আপত্তি থাকবে না।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী হিসাবে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীকে দেখতে চান বলে ফের সেই বিতর্কই নতুন করে উস্কে দিয়েছেন ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিন। রবিবার চেন্নাইয়ে দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত এম করুণানিধির মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানে এমন কথা ঘোষণা করেছিলেন স্ট্যালিন। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে শুরু হয় বিতর্ক। বিজেপি বিরোধী দলগুলির মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। বেশিরভাগ বিরোধী দল স্ট্যালিনের এই মন্তব্যে খুশি হয়নি।
আর তা বুঝতে পেরেই এই বিতর্ক প্রশমন করতে মাঠে নামলেন মধ্যপ্রদেশে সদ্য নিযুক্ত মুখ্যমন্ত্রী এবং বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা কমল নাথ। রাহুল গান্ধীর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোনও বাসনা নেই সোমবার বলে জানান কমল। তিনি বলেন, দেশবাসী রাহুলকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান কী না তা নিয়ে তিনি নিশ্চিত নন। তবে রাহুল গান্ধী নিজে থেকে কখনও প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার ইচ্ছে প্রকাশ করেননি।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীকে হারাতে মহাজোট গড়ে এক ছাতার তলায় আসতে চাইছে কংগ্রেসসহ অন্যান বিরোধী জাতীয় ও আঞ্চলিক দলগুলি। মহাজোটের অংশ হওয়া নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনাও চালাচ্ছে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, সপা, বসপা, আরজেডি, জেডিএস, সিপিআই, সিপিএম, টিডিপি, আপ, ন্যাশনাল কনফারেন্সের মতো দলগুলি। তাই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে হবেন তা সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারণ করা হবে বলে জানান কংগ্রেসের এই প্রবীণ নেতা। তার আগে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য স্ট্যালিনের রাহুলের নাম ঘোষণাকে ‘অপরিণত মন্তব্য’ বলে কটাক্ষ করেন কমল নাথ।
প্রসঙ্গত, ‘ফ্যাসিস্ট’ মোদি সরকারকে পরাস্ত করার যোগ্যতা রয়েছে রাহুল গান্ধীর মধ্যে। তাই রাহুলের হাত শক্ত করে, দেশকে রক্ষা করা প্রয়োজন বলে রবিবার মন্তব্য করেছিলেন ডিএমকে প্রধান। এই মন্তব্যকে যে তাঁরা মোটেই ভালোভাবে নিচ্ছেন না তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছেন একাধিক দলের নেতা। বিশেষ করে তৃণমূল, টিডিপি,বিএসপি, সপা, আপের মতো অনেক দলই চায়, এখনই মোদীর বিকল্প মুখ হিসেবে কাউকে তুলে ধরার কোনও দরকার নেই। ভোটের পর রেজাল্ট দেখে এসব নিয়ে ভাবা যাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবারই জানিয়েছেন, যে রাজ্যে যে শক্তিশালী সেখানে সে লড়াই করুক বিজেপির সঙ্গে।এই ইস্যুতে হঠাৎই স্ট্যালিনের মন্তব্য বিরোধী সমঝোতায় চিড় ধরাতে পারে বুঝেই তড়িঘড়ি আসরে নামল কংগ্রেস।

Comments are closed.