সোমনাথ মন্দির পুনর্গঠনের প্রসঙ্গ তুলে আদালতকে এড়িয়ে অযোধ্যায় রাম মন্দির গড়তে মোদী সরকারকে চাপ আরএসএস-এর

অযোধ্যা জমি মামলা সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন, সম্প্রতি এই মামলার শুনানির দিন আরও কিছুটা পিছিয়ে দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। এই অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টকে এড়িয়ে অযোধ্যায় রাম মন্দির গড়ার জন্য কেন্দ্রের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করল আরএসএস। আরএসএসের ইংরেজি মুখপত্র অর্গানাইজারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে অযোধ্যায় রাম মন্দির গড়ার পক্ষে জোর সওয়াল করা হল। সংঘ প্রধান মোহন ভাগবত অনেকদিন ধরেই রাম মন্দিরের পক্ষে সওয়াল করছেন। এবার আরএসএসের প্রতিবেদনে সংঘের সাধারণ সম্পাদক নিজে সরাসরি নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের উপর রাম মন্দির ইস্যুতে চাপ তৈরি করলেন।
আরএসএস মুখপত্রের প্রতিবেদনে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, সরকার কেন সংসদে আইন এনে রাম মন্দিরের জন্য জমি অধিগ্রহণ করছে না?
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের জেনারেল সেক্রেটারি মনমোহন বৈদ্য লিখেছেন, ‘সরকারের উচিত নতুন আইন আনা এবং সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল যেভাবে গুজরাতের সোমনাথ মন্দির পুনর্গঠন করেছিলেন, সেই ভাবে রাম মন্দির গড়ে তোলা।’ প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘রাম মন্দির দেশের জাতীয় গর্বের বিষয়। সরকারের উচিত আইনের মাধ্যমে রাম মন্দিরের জন্য জমি অধিগ্রহণ করে তা মন্দির নির্মাণের জন্য হস্তান্তর করা।’
প্রতিবেদনটিতে সওয়াল করা হয়েছে ‘হিন্দু সমাজের আত্মসম্মান ও স্বদেশি সমাজের ভিত্তি নির্ভর করে জনগণের অংশগ্রহণের উপর। সেখানে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ যথাসম্ভব কম থাকা কাম্য। কিন্তু রাম মন্দির নিয়ে আদালতে চলা মামলায় দেখা যাচ্ছে, রাষ্ট্র একটি গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই সরকারের উচিত প্রয়োজনীয় আইন এনে জমি হস্তান্তর করা, যাতে সেখানে রাম মন্দির গড়ে উঠতে পারে।’
অর্গানাইজারের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘সোমনাথ ও অযোধ্যা দু’জায়গাতেই হিন্দু সনাতনী ঐতিহ্য ও প্রথাকে নৃশংসভাবে ধ্বংস করা হয়েছিল ইসলামিক আমলে। মন্দিরগুলি ধ্বংস করে গড়ে তোলা হয়েছিল ইসলাম রাজত্বের নানা নিদর্শন। সোমনাথ মন্দিরের উদাহরণকে সামনে রেখে সরকারের উচিত অযোধ্যার রাম জন্মভূমিতে যাতে রাম মন্দির গড়ে ওঠে তার পথ দ্রুত বের করা।’ লেখা হয়েছে, ‘১৯৯৪ সালে কংগ্রেস আমলে তৎকালীন সলিসিটর জেনারেল সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছিলেন, অযোধ্যার ওই জমি, যেখানে মসজিদ গড়ে উঠেছিল সেখানে রাম মন্দির ছিল তা প্রমাণিত হলে সরকার বিষয়টি ভেবে দেখবে।’ মনমোহন বৈদ্য লিখেছেন, ‘এখন প্রমাণও আছে আর কোর্টে কেসও চলছে। দীর্ঘদিন পরও যা এখনও অমীমাংসিত। তাই ওই জমি অধিগ্রহণ করে তা মন্দির পুনর্নিমাণের জন্য হস্তান্তর করাই মূল ইস্যু। বিষয়টি হিন্দু, মুসলিম, মন্দির, মসজিদের নয়, বরং এটি দেশের গর্ব পুনর্গঠনের ব্যাপার।’
আরএসএসের এই মন্দির নির্মাণের দাবির সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। বিরোধীদের বক্তব্য, আদালতে যখন মামলা চলছে, সেখানে লোকসভা ভোটের মুখে ফের মন্দিরের কথা বলে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতি করতে চাইছে আরএসএস-বিজেপি।

Comments are closed.