সিবিআই-এর স্পেশাল ডিরেক্টর আস্থানার বিরুদ্ধে অভিযোগকারী ব্যবসায়ী সাতীশ সানা নিরাপত্তা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ

মইন কুরেশি মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত হায়দরাবাদ নিবাসী ব্যবসায়ী সতীশ সানা ব্যক্তিগত নিরাপত্তা চেয়ে দ্বারস্থ হলেন সুপ্রিম কোর্টে। তাঁর বিরুদ্ধে বর্তমানে তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সম্প্রতি তাঁকে আর এক দফা সমন পাঠিয়েছেন তদন্তকারীরা, তারপরই আদালতে নিজের নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করলেন সতীশ সানা।
উল্লেখ্য, উত্তর প্রদেশের মাংস রফতানীকারী ব্যবসায়ী মইন কুরেশির বিরুদ্ধে বহু কোটি টাকার জালিয়তি ও হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচারের যে অভিযোগ উঠছে, তাতে নাম জড়িয়েছে সতীশ সানা নামের ওই ব্যবসায়ীরও। ঘটনার তদন্ত করছে ইডি ও সিবিআই। সম্প্রতি জানা যায়, তদন্তকারীদের সানা জানিয়েছেন যে, সিবিআই-এর চার্জশিট থেকে যাতে তিনি মুক্তি পান তার জন্য ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে দশ দফায় তিনি ২ কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছেন স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানাকে। সানার এই অভিযোগের পরই সিবিআই এফআইআর করে সংস্থারই দু’নম্বর শীর্ষ কর্তা আস্থানার বিরুদ্ধে। গ্রেফতার করা হয় আস্থানার বিশেষ সহযোগী সিবিআই অফিসার দেবেন্দ্র কুমারকে। নিজের বিরুদ্ধে এই এফআইয়ার-এর কথা জানতে পেরেই, তৎকালীন সিবিআই প্রধান অলোক ভর্মার বিরুদ্ধে পালটা অভিযোগ আনেন আস্থানা। ক্যাবিনেট সেক্রেটারিকে চিঠি লিখে তিনি বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন ভার্মা। ভার্মার কথা শুনেই তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন সতীশ সানা। আস্থানা বলেন, ঘুষ তিনি না, বরং প্রায় ৩ কোটি টাকার ঘুষ অভিযুক্তদের থেকে নিয়েছেন অলোক ভর্মা নিজে। নিজের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আস্থানা। এই অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে যিনি প্রধান সাক্ষী এবং অভিযুক্ত সেই সতীশ সানার এবার সুপ্রিম কোর্টে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি কি কোনও কারণে ভয় পাচ্ছেন, সেই প্রশ্নও উঠছে।
সিবিআই প্রধান ও স্পেশাল ডিরেক্টরের মধ্যে এই নজিরবিহীন দ্বন্দ্ব ঘিরে প্রশ্ন দেখা যায় সিবিআই-এর নিরপেক্ষতা এবং স্বচ্ছতা নিয়েই। হস্তক্ষেপ করতে হয় খোদ প্রধানমন্ত্রীকে। দিন কয়েক আগেই সিবিআই প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় অলোক ভর্মাকে। সরানো হয় রাকেশ আস্থানাকেও। বর্তমানে দু’জনের বিরুদ্ধেই তদন্ত চালাচ্ছে সেন্ট্রাল ভিজিলেন্স কমিশন (সিভিসি)। অলোক ভার্মার আবেদনের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট সিভিসি’কে নির্দেশ দিয়েছে দু’সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত শেষ করে কোর্টে রিপোর্ট জমা দিতে।

Comments are closed.