সোশ্যাল মিডিয়ার তথ্য এবার কেন্দ্রের নজরে, ই-মেলেও চলবে নজরদারি।

লোকসভা নির্বাচনের আর এক বছরও বাকি নেই। সাধারণ নির্বাচনের দোর-গোড়ায় এসে দেশের সাধারণ মানুষের সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যক্তিগত কার্যকলাপের ওপর নজরদারি চালাতে ‘সোশ্যাল মিডিয়া অ্যানালাইটিকাল টুল’ নামক একটি বিশেষ ব্যবস্থা আনতে চলেছে বিজেপি সরকার। গত এপ্রিল মাসে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের জারি করা একটি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশের প্রতিটি ব্যক্তির কাছে পৌঁছে তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারি নীতি সংক্রান্ত যে কোনও ধরনের মতামত, বিশেষ করে নেতিবাচক মতামতকে ইতিবাচক মতামতে রূপান্তরের চেষ্টা করা হবে।
সূত্রের খবর, ফেসবুক, ট্যুইটার, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীর ওপর নজরদারি চালিয়ে তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ইমেলও এর আওতায় পড়বে। গোটা প্রক্রিয়াটি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অধীনে সোশ্যাল মিডিয়া কমিউনিকেশন হাব নামক বিশেষ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হবে বলে জানা গিয়েছে। ব্যক্তিগত ‘তথ্যের নিরাপত্তা’ নিয়ে ভারতে এখনও পর্যন্ত কোনও আইন না থাকায় সরকারের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে প্রশ্নের মুখে পড়বে বলেও মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। তথ্যের গোপনীয়তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘সরকারের এই নির্দেশিকায় ব্যক্তির ওপর নজরদারির জন্য ‘মেশিন লার্নিংয়ের’ কথা বলা রয়েছে। ‘মেশিন লার্নিং’ হল এমন ব্যবস্থা, যেখানে কম্পিউটারে ব্যবহিত মেশিন ল্যাঙ্গুয়েজকে ইন্টারসেপ্টের মাধ্যমে  ডিকোড করা যায়। এটি নিঃসন্দেহে একটি চিন্তার বিষয়, কারণ এর ফলে ব্যক্তির বাক-স্বাধীনতায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করা হবে’।
ইন্টারনেট বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘সাধারণ মানুষের ইমেলের ওপর নজরদারি চালাতে সরকার যে নির্দেশিকা জারির কথা ভাবছে তা সত্যিই আশ্চর্যের। এতদিন শুধুমাত্র অপরাধীদের ই-মেলের ওপর নজর রাখা হোত। যদিও সেটাও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুমতি নিয়েই করতে হত’। ‘সোশ্যাল মিডিয়া অ্যানালাইটিকাল টুল’ ব্যবস্থাটিতে নজরদারির পাশাপাশি যাতে দেশের প্রায় প্রতিটি ভাষাতেই তথ্য ও কথোপকথনের অনুবাদ করা যায় সেই সুবিধেও থাকবে। এছাড়া পুরোন তথ্য খুঁজে পেতে তথ্যের সম্ভার বা ‘ডেটা আর্কাইভ’ও  গড়ে তোলা হবে বলে নির্দেশিকাতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে সংবাদের ওপর নজরদারি চালাতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের তরফে সোশ্যাল মিডিয়া এক্সিকিউটিভের ২০টি বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দেশের প্রায় ৭১৬টি জেলায় এই বিশেষ দলের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া এক্সিকিউটিভ নিয়োগ করা হয়েছে ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.