টিকিট বিক্রি থেকে আয়ের যা হিসেব, অন্তত ৬০ বছর লাগবে ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ তৈরির ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ উঠতে

‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ গড়তে খরচ হয়েছিল ৩ হাজার কোটি টাকা, যা নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল এই মূর্তি উদ্বোধনের সময়েই। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, এটা টাকার অপচয়। বৃহস্পতিবারই প্রকাশ্যে আসে, এই মূর্তি উদ্বোধনের জন্য শুধুমাত্র সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন বাবদ কেন্দ্র খরচ করেছে ২ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা। তা নিয়েও সরব হয়েছেন অনেকে।


পড়ুনঃ ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ উদ্বোধনের বিজ্ঞাপনেই কেন্দ্র খরচ করেছে ২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, মূর্তি তৈরিতে খরচ হয়েছিল ৩ হাজার কোটি


কিন্তু কেউ কেউ এমন প্রশ্নও তুলেছেন, দুনিয়ার এই উচ্চতম মূর্তি দেখতে প্রচুর মানুষ প্রতিদিন ভিড় করছেন। এবং দর্শনার্থীদের কাছ থেকে এন্ট্রি ফি বাবদ প্রচুর টাকা আয় হচ্ছে, সুতরাং টাকা অপচয় হয়েছে বলে যে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে তা অর্থহীন। thebengalstory.com এ স্ট্যাচু তৈরির বিজ্ঞাপন বাবদ খরচ নিয়ে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়, তাতেও কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, যা আয় এই স্ট্যাচু থেকে হচ্ছে তাতে এই খরচকে অপচয় বলা যায় না।
এবার একবার দেখে নেওয়া যাক, এই মূর্তি থেকে কেমন আয় হচ্ছে এন্ট্রি ফি বাবদ।
২০১৮ সালের ৩১ শে অক্টোবর সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের ১৪৪ তম জন্মবর্ষে তাঁর ১৮২ মিটার উচ্চতার মূর্তির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ১ লা নভেম্বর থেকে পর্যটকরা ভিড় করেন বিশ্বের উচ্চতম মূর্তি দেখতে। তবে শুধু মূর্তি দর্শনই নয়, ৪০০ মিটার উচ্চতা থেকে নর্মদার গ্যালারি ভিউ, নয়ানাভিরাম বাগান, মিউজিয়াম, অডিও ভিশুয়াল গ্যালারি, সর্দার সরোবর ড্যাম ইত্যাদি উপভোগ্য স্থান রয়েছে সেখানে।
প্রতি সোমবার বন্ধ থাকে ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’। মঙ্গলবার থেকে রবিবার, সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। সবকটি দর্শনীয় স্থানের টিকিট মূল্য জনপ্রতি সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা। নূন্যতম মূল্য ৬০ টাকা, এছাড়া বিভিন্ন বয়সের ক্ষেত্রে আলাদা-আলাদা দাম ধার্য করা হয়েছে টিকিটের। অনলাইন বা অফলাইন দু’ভাবেই রয়েছে টিকিট কাটার সুবিধা।
৩১ শে অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী এই মূর্তি উদ্বোধনের পর বিশাল সংখ্যক মানুষ ভিড় করেন ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ দর্শন করতে। প্রথম ১০ দিনে দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লক্ষের বেশি, আয় হয়েছিল প্রায় ২ কোটি টাকা। যদিও প্রথম তিন দিনে মোট ১১ হাজার ৭৪৬ জন মানুষ ভিড় করেন ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ দেখতে। প্রথম তিন দিনে মোট আয় হয় ২৮ লক্ষ ৬ হাজার টাকা। এই হিসেব ধরলে, ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ থেকে বছরে কম-বেশি ৫০ কোটি টাকা আয় হতে পারে। হিসেব বলছে, ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ গড়তে খরচ হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা। হিসেব মতো বছরে যদি গড়ে ৫০ কোটি টাকা আয় হয় তবে অন্তত ৬০ বছর লাগবে শুধু মূর্তি তৈরির মোট খরচ উঠতে।
যদিও,সরকার দাবি করছে, ভবিষ্যতে পর্যটক সংখ্যা আরও বাড়বে, কিন্তু সমালোচকরাও বলছেন, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মূর্তি দর্শনের কৌতূহল কমতেও পারে। কেউ দাবি করছেন, টিকিটের দামও বাড়তে পারে ভবিষ্যতে। সেক্ষেত্রেও মূর্তি এবং পুরো এলাকা রক্ষণাবেক্ষণেও বিপুল টাকা খরচের প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ।

Comments are closed.