বিজেপির ডাকা বুধবারের বনধ নিয়ে চড়ছে পারদ, রাস্তায় নেমে বনধের বিরোধিতা করবে তৃণমূল। কড়া অবস্থান রাজ্যের

ইসলামপুর কাণ্ডের প্রতিবাদে আগামী বুধবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ১২ ঘন্টার বাংলা বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। ওই দিন বিজেপির ডাকা ওই বনধের মোকাবিলায় কড়া অবস্থান নিচ্ছে রাজ্য সরকার। সোমবার নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ওই দিন কোনও সরকারি কর্মী ছুটি নিতে পারবেন না। সমস্ত সরকারী কর্মচারীকে ওই দিন কাজে যোগ দিতে হবে।
নেওয়া যাবে না অর্ধ দিবস ছুটিও। এমনকী বনধের আগের বা পরের দিনও কোনও ছুটি মঞ্জুর করা হবে না। নবান্নে এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, ওই দিন বিজেপি-আরএসএস ঝামেলার চেষ্টা করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্যবসায়ীদের ওই দিন দোকান খোলা রাখার অনুরোধ করা হয়েছে সরকারের তরফে। বলা হয়েছে, পুলিশ প্রশাসন প্রয়োজনে তাদের সাহায্য করবে। সরকারি পরিবহণ ব্যবস্থা ওই দিন স্বাভাবিক থাকবে জানিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ওই দিন বেসরকারি বাস ও ট্যাক্সি মালিকদেরও রাস্তায় গাড়ি নামানোর অনুরোধ জানিয়েছেন। এব্যাপারে বেসরকারি পরিবহণ সংঠনগুলির সাথে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও এদিন কথা বলেছেন। পার্থবাবুর দাবি, রাজ্যের উন্নয়নকে স্তব্ধ করার চক্রান্ত করছে বিজেপি আরএসএস। রাজ্যের মানুষ তা হতে দেবেন না। পাশাপাশি তৃণমূলও রাস্তায় নেমে বনধের বিরোধিতা করবে বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে দাড়িভিট হাইস্কুলে ব্যাপক গণ্ডগোল হয়। রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে স্কুল চত্বর। অভিযোগ, আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সরাতে তাদের উপর চড়াও হয় পুলিশ। প্রতিবাদে পালটা পুলিশকে লক্ষ করে
ইট, পাটকেল ছোড়ে বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, ইটের ঘায়ে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। অভিযোগ, বিক্ষোভ কর্মসূচিকে দমন করতে অতি সক্রিয় হয়ে ওঠে পুলিশ। দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের। অভিযোগ, লাঠিচার্জের পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাস ও গুলিও চালানো হয় পুলিশের তরফে। গুলিতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান রাজেশ সরকার নামে একজন। মৃত রাজেশ সরকার তাদের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি’র সদস্য বলে দাবি বিজেপির। পর দিন হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাপস বর্মণ নামে আরও এক ছাত্রের। যদিও জেলা পুলিশের তরফে গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়, তারা গুলি চালায়নি। বরং বহিরাগতরাই পুলিশকে আক্রমণ করেছে।
বিদেশ সফররত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পুলিশ গুলি চালায়নি। তবে পুলিশের কেউ দোষী হলে তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, এই ঘটনার পেছনে হাত রয়েছে আরএসএস ও বিজেপি। তাঁর অভিযোগ, তিনি রাজ্যের বাইরে গেলেই গণ্ডগোল পাকায় বিরোধীরা।
এদিকে এলাকায় পুলিশ এলে তাঁদের গাছের সাথে বেঁধে রাখার কথা বলে বিতর্কে জড়িয়েছেন উত্তর দিনাজপুরের জেলা বিজেপি সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তী। রবিবার তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিজেপির ডাকা বুধবারের বনধকে বেআইনি ঘোষণা করতে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছেন তৃণমূল সাংসদ ইদ্রিশ আলি।

Comments are closed.