দেশের বেকারির হার ৬.১ শতাংশে পৌঁছেছে, গত ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ, বাজেটের আগে অস্বস্তিতে মোদী সরকার

দেশে বেকারির হার ২০১৭-১৮ সালে গত ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ জায়গায় পৌঁছালো। এই ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভের পিরিওডিক লেবার ফোর্স সার্ভের রিপোর্টে। এই রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ বছরে দেশে বেকারির হার ৬.১ শতাংশে পৌঁছেছে, যা গত ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ‘বিজনেজ স্ট্যান্ডার্ড’এ এই খবর প্রকাশিত হয়েছে।
সংবাদে প্রকাশ, ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভের পিরিওডিক লেবার ফোর্স সার্ভের এই রিপোর্ট এখন কেন্দ্রের হাতে রয়েছে, তা প্রকাশ করা হয়নি। এবং এই রিপোর্ট প্রকাশ করাকে কেন্দ্র করেই ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকাল কমিশনের (এনএসসি) ভারপ্রাপ্ত প্রধান পি সি মোহনন এবং সদস্য জে ভি মীনাক্ষীর সঙ্গে কেন্দ্রের সংঘাত হয়। যার জেরে দু’জনই সোমবার এনএসসি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।
দেশে বেকারির বর্তমান অবস্থা নিয়ে বৃহস্পতিবার ‘বিজনেজ স্ট্যান্ডার্ড’ পত্রিকায় এই সংবাদ প্রকাশের পর স্বাভাবিকভাবেই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। বিশেষ করে বাজেট পেশের আগের দিন প্রকাশিত এই রিপোর্টে অস্বস্তিতে মোদী সরকার।
১৯৭২-৭৩ সালের পর দেশে বেকারির হার কখনই ৬ শতাংশ পেরোয়নি। ২০১১-১২ সালে দেশের বেকারির হার ছিল ২.২ শতাংশ। ২০১৬ সালে নোটবন্দির পর দেশে ব্যাপকভাবে বেকারি বেড়েছে, বিভিন্ন ছোট-মাঝারি ব্যবসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, লক্ষ-লক্ষ মানষ কাজ হারিয়েছেন বলে বারবার অভিযোগ করেছে বিরোধীরা। রাহুল গান্ধী, সীতারাম ইয়েচুরি থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দেশের সমস্ত বিরোধী নেতা-নেত্রী বারবার সরব হয়েছেন নোটবন্দির বিরুদ্ধে। কিন্তু কেন্দ্র বারবারই দাবি করে এসেছে, দেশের আর্থিক বৃদ্ধি সন্তোষজনক। কিন্তু ২০১৭-১৮ সালের কর্মসংস্থান এবং বেকারি নিয়ে সমীক্ষা করে ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে যে রিপোর্ট তৈরি করেছে তাতে দেশের কর্মসংস্থানের ভয়াবহ চেহারাটাই উঠে এসেছে। সূত্রের খবর, এই রিপোর্ট প্রকাশ করা নিয়েই ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকাল কমিশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান পি সি মোহননের সঙ্গে সংঘাত শুরু হয় কেন্দ্রের। ডিসেম্বর মাসে এই রিপোর্ট প্রকাশ করার কথা থাকলেও, কেন্দ্র তা প্রকাশ করতে দেয়নি।
২০১৬ সালের নোটবন্দি পরবর্তী সময়ে কর্মসংস্থানের সেই তথ্যই প্রকাশ করতে দিচ্ছে না কেন্দ্র, এই অভিযোগ তুলেই সোমবার ইস্তফা দিয়েছিলেন পি সি মোহনন। ইস্তফার পর পি সি মোহননের বিস্ফোরক দাবি ছিল, কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। যে রিপোর্ট তাঁরা প্রকাশ করার চেষ্টা করছেন তা আটকে রাখা হচ্ছে। কী ছিল সেই রিপোর্টে তা এদিন প্রকাশ্যে আনল সংবাদমাধ্যম।

Comments are closed.