‘মহিলারা মাতৃত্বকালীন ছুটি নেন, তাঁদের কীভাবে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো যাবে!’ বিতর্কিত মন্তব্য সেনা প্রধান বিপিন রাওয়াতের

মহিলাদের বাচ্চা হয়, মাতৃত্বকালীন ছুটির প্রয়োজন পড়ে, বাড়িতে ছোট ছোট বাচ্চাও থাকতে পারে, তাই এদেশের যুদ্ধক্ষেত্রে মহিলাদের এখনই পাঠাতে চায় না সেনা, বললেন ভারতের সেনা প্রধান বিপিন রাওয়াত। শনিবার নিউজ ১৮ কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাওয়াতের এরকম কিছু মন্তব্যে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
সাক্ষাৎকারে জেনারেল বিপিন রাওয়াত বলেছেন, যুদ্ধে গিয়ে যদি কোনও মহিলা অফিসার মারা যান, আর তাঁর যদি ছোট সন্তান থাকে, তাহলে ভাবুন কী হবে! রাওয়াতের মতে, পরিবারটা তো ভেসে যাবে। কমান্ডার হিসাবে দায়িত্বে থাকা কোনও মহিলা সেনা অফিসারকে যদি প্রয়োজনে মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া না যায়, তাহলে সেটি নিয়েও হইচই হবে। যুদ্ধক্ষেত্রে কোনও মহিলা অফিসারের পোশাক বদলানোর সময় যদি কেউ উঁকিঝুকি মারে সেখানেও বিপদ, ওই মহিলা অফিসার নালিশ ঠুকে দেবেন। অর্থাৎ, অনেক রকম সমস্যা, তাই মহিলাদের এখনই সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছে না ভারতীয় সেনা, জানিয়েছেন রাওয়াত। তবে সাফাইয়ের সুরে তিনি এও জানান, বিমান বাহিনীতে পাইলট হিসাবে রয়েছেন মহিলারা, সেনার ইঞ্জিনিয়ারিং উইংয়েও কর্মরত আছেন মহিলারা, সেখানে কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রটা এখনই তাঁদের জন্য নয়।
বিপিন রাওয়াত আরও বলেছেন, মাতৃত্বকালীন প্রয়োজনে ছয় মাসের ছুটি নিতে হতে পারে কোনও মহিলাকে, কিন্তু সেনার কোনও কমান্ডের দায়িত্বে থাকলে সেটা দেওয়া সম্ভব না, কারণ তাহলে ওই দল নেতৃত্বহীন হয়ে যাবে। তখন সেই দায়িত্ব কে সামলাবে? আবার ছুটি না দিলেও বিতর্ক তৈরি হয়ে যাবে। এরপরই একটি বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন রাওয়াত, বলেছেন, রণক্ষেত্রে একজন মহিলার নেতৃত্ব জওয়ানরা কতটা মেনে নেবে তা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে। তাঁর কথায়, সেনা বাহিনীর বেশিরভাগই আসে প্রত্যন্ত গ্রাম, দূর দূরান্ত থেকে। রণক্ষেত্রে একজন মহিলার নেতৃত্ব কি তারা মেনে নেবে? চেয়েছিলাম মহিলাদের যুদ্ধে পাঠাতে, কিন্তু এই সাত-পাঁচ ভেবে আর এগনো যাচ্ছে না।
প্রশ্ন উঠছে, মহিলা অফিসারের নেতৃত্ব সেনা জওয়ানরা মেনে নেবে না, এ কীরকম কথা! নির্দেশ না মানলে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। সেনার নিজস্ব আইনে সেই ব্যবস্থাও আছে। আর জামা কাপড় বদলানোর সময় উঁকিঝুকি মারার প্রসঙ্গ তুলে সেনা প্রধান কী বলতে চেয়েছেন তা নিয়েও তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।

Comments are closed.