দক্ষিণবঙ্গের কৃষকদের পাঁচদিনের আবহাওয়ার আগাম পূর্বাভাষ দিচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অটোমেডেড ওয়েদার স্টেশন।

দক্ষিণবঙ্গের বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভুম জেলার একটা বড় অংশই খরাপ্রবণ। ফলে এই সব জেলার কৃষকরা প্রতি বছরেই চাষ করতে গিয়ে প্রচুর আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হন। এই কৃষকদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে স্বেছাসেবী সংস্থা ডেভলপমেন্ট রিসার্চ কমিউনিকেশন এন্ড সার্ভিসেস সেন্টার (ডিআরসিএসসি)। আবহাওয়া দফতর শুধু মাত্র সেই দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাষ দেয়। কিন্তু ডিআরসিএসসি-র অধিকর্তারা জানাচ্ছেন, তারা কম পক্ষে পাঁচ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাষ দিতে পারবেন তাঁদের প্রযুক্তির সাহায্যে। বাংলায় সেই এসএমএস পৌছে যাবে কৃ্ষকের মোবাইলে।
ডিআরসিএসসি-র কলকাতা চ্যাপ্টারের প্রোগ্রাম হেড সুজিত মিত্র জানালেন, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলা মিলিয়ে মোট ছ’টি ‘অটোমেডেড ওয়েদার স্টেশন’ তৈরি করেছেন তাঁরা। বাঁকুড়া জেলার ছাতনা ব্লকের ঝুঝকা এবং ঘোষের গ্রাম পঞ্চায়েত, পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লকের সোনাথলি, রাঙামাটি-রণচণ্ডি এবং আগরডি-চিটরা গ্রাম পঞ্চায়েতে এই কেন্দ্রগুলি তৈরি করা হয়েছে। সুজিতবাবু আরও জানালেন, ১০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধে প্রতি আধ ঘন্টা অন্তর আবহাওয়ার তথ্য সংগ্রহ করছে এই কেন্দ্রগুলি। এরপর ওই তথ্য পাঠিয়ে দেওয়া গোরক্ষপুরে আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের কাছে। এর পাশাপাশি রয়েছেন ক্লাইমেট ভলান্টিয়ার। যাঁরা প্রাথমিকভাবে এলাকার কৃ্ষি বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ করছেন। এরপর গোরক্ষপুরে সংস্থার অফিসে সেই তথ্য খতিয়ে দেখছেন করেন আবহবিদরা। ইতিমধ্যেই নাবার্ডের সঙ্গে কাজ করার জন্য প্রাথমিকভাবে চুক্তিও করেছে ডিআরসিএসসি। গঠন করা হয়েছে একটি কমিটি। যে কমিটির শীর্ষে রয়েছেন জেলা শাসক। এরপর ক্রমানুসারে রয়েছেন জেলার অন্যান্য কৃষি ও বন দফতরের আধিকারিকরা।
প্রাথমিকভাবে আবহাওয়ার পূর্বাভাষটি ইংরেজিতেতে মেল করা হয়। এরপর একটি বেসরকারি সংস্থার সাহায্যে সেই এসএমএস পৌঁছে যায় কৃষকের মোবাইলে। এছাড়াও আগাম পূর্বাভাষ পৌঁছে দেওয়ার জন্য আছেন সায়েন্স ভলান্টিয়ার। মোবাইলেও বার্তা পৌছে দেওয়ার পাশাপাশি ব্ল্যাকবোর্ডে লিখেও স্বেছাসেবীরা সেই পূর্বাভাষ পৌছে দিচ্ছেন কৃষকদের কাছে। এই প্রকল্পে প্রথম দু’বছর কৃষকদের কাছ থেকে কোনও টাকা না নেওয়া হলেও চলতি বছরে মাসে ২৫ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই জলবায়ু পূর্বাভাষ প্রকল্পে প্রায় পাঁচ হাজার কৃষক পরিষেবা পাওয়ার জন্য নাম নথিভুক্ত করেছেন। ডিআরসিএসসি-র কর্মকর্তাদের কথায়, আবহাওয়ার আগাম পূর্বাভাষ পাচ্ছেন বলে কৃষকরা এখন পরিস্থিতি বুঝে ফসল চাষ করতে পারছেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.