নন্দীগ্রাম মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করবে, নিজে দাঁড়াবে বলতে পারছে না! কাঁথিতে শুভেন্দুকে আক্রমণ অভিষেকের
আপনি যেখানে দাঁড়াবেন ৫০ হাজার ভোটে হারাবো, আক্রমণ অভিষেকের
শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির জনসভা থেকে প্রত্যাশিত ভাবেই দলত্যাগী শুভেন্দুকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানালেন অভিষেক ব্যানার্জি। জনসভা থেকে তৃণমূল সাংসদ বলেন, নন্দীগ্রাম মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করবে। পাশাপাশি নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক শুভেন্দুকে কটাক্ষ, নিজে দাঁড়াবে বলতে পারছে না। দেখবেন কাউকে একটা মুরগি করে দাঁড় করাবে। অভিষেকের কথায়, একবার নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর ইচ্ছে প্রকাশ তো করুন! তারপরই তাঁর আক্রমণ, আপনি যেখানে দাঁড়াবেন ৫০ হাজার ভোটে হারাবো।
শনিবার সভার শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে দেখা যায় অভিষেককে। তাঁর দাবি কাঁথির জনসভায় যে পরিমাণ ভিড় হয়েছে তা ভোট বাক্সে গেলে মীরজাফর এন্ড কোম্পানির জামানত জব্দ হয়ে যাবে। শুভেন্দুকে একহাত নিয়ে তৃণমূল সাংসদের ঘোষণা বিশ্বাস ঘাতকদের মেদিনীপুরের মাটি থেকে বিদায় দিতে হবে।
অভিষেকের সভামঞ্চ থেকে সামান্য দূরে শান্তিকুঞ্জ, অধিকারীদের বাড়ি। সেকথা উল্লেখ্য করে অভিষেক উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন ‘৫ কিমি দূরেই তো শান্তিকুঞ্জ, এত জোরে প্রতিবাদের আওয়াজ তুলুন যাতে শান্তিকুঞ্জ থরথর করে নড়ে যায়’। লোকসভা ভোটের আগে কলকাতায় অমিত শাহের ৱ্যালি চলাকালীন বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনার জের টেনে এদিন অভিষেক শুভেন্দুকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘ঈশ্বরচন্দ্রের মূর্তি যাঁর নেতৃত্বে ভাঙা হয়েছিল, তাঁর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে বিজেপিতে যোগ দিতে লজ্জা করল না’!
এদিন ফের একবার সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের লেখা চিঠি বলে দাবি করে একটি কাগজ পড়ে শুভেন্দুকে ঘুষখোর বলে আক্রমণ করেন তিনি। তাঁর দাবি ২৫০ এর বেশি আসন নিয়ে পুনরায় বাংলার মানুষ মমতা ব্যানার্জিকে মুখ্যমন্ত্রী করবেন। ক্ষমতায় আসার ৩ মাসের মধ্যে মীরজাফরকে রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া করে দেওয়ারও চ্যালেঞ্জ করেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।
তাঁর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, তৃণমূলের অবজার্ভার পদ তুলে দেওয়াতেই শুভেন্দু দল ছেড়েছেন। অভিষেকের যুক্তি, পাঁচটি জেলার অবসার্ভারের দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু। অর্থাৎ ৫০ টি আসনে প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে শুভেন্দু গুরত্ব পেতেন। ভোটের পর ওই ৫০টি আসনে জয়ী বিধায়কদের নিয়ে তিনি তৃণমূল ত্যাগ করে বিজেপিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ দাবি করতেন। এই পরিকল্পনা ভেস্তে যেতেই শুভেন্দুর ‘গাত্রদাহ’ বলেও কটাক্ষ করেন।
এদিন গরুপাচার নিয়েও শুভেন্দুর অভিযোগের পালটা জবাব দেন অভিষেক। তাঁর প্রশ্ন, শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ রাখালের সঙ্গে গরু পাচারে অভিযুক্ত এনামুলের কী সম্পর্ক? সব কাগজ হাতে আছে। আস্তে আস্তে সব বের করব, হুঁশিয়ারি অভিষেকের।
ইদানীং সব জন সভায় শুভেন্দু নিয়ম করে আক্রমণ করছেন অভিষেকের স্ত্রীকে। এদিন তারও জবাব দিয়েছেন যুব তৃণমূল সভাপতি। তিনি বলেন, কলকাতা ছাড়া আমার স্ত্রীর আর কোথাও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই। আর বিমানবন্দরে সোনা সহ ধরা পড়ার যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেই সম্পর্কে অভিষেকের চ্যালেঞ্জ, বিমানবন্দরে কেন্দ্রের সিআইএসএফ মোতায়েন থাকে। অসংখ্য সিসি টিভি ক্যামেরা থাকে। ক্ষমতা থাকলে অভিযোগের সপক্ষে প্রমাণ দেওয়া হোক।
Comments are closed.