বিশাখাপত্তনমে শুক্রবার রাতে মাওবাদীদের সঙ্গে পুলিশের গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হওয়া দু’জনের কেউই মাওবাদী নয়, তাঁরা এলাকারই বাসিন্দা দুই আদিবাসী কৃষক। ঘটনার দু’দিন পর প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এবং ঘটনাস্থলে গিয়ে তথ্য প্রমাণ খতিয়ে দেখার পর এমনই প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের স্থানীয় তেলেগু সংবাদপত্র ‘প্রজা শক্তি’-তে। মৃত বাট্টি ভূষণ এবং সিধারী জমাদারের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে দেশি পিস্তল। বুনো শুয়োরের হাত থেকে খেতের ফসল বাঁচাতে রাতে জমি পাহারা দিচ্ছিলেন তাঁরা। বন্য জন্তুদের হাত থেকে খেতের ফসল বাঁচাতে দেশি পিস্তলের ব্যবহার এই এলাকায় নতুন কিছু নয় বলেই স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বলে প্রতিবেদনে প্রকাশ। মৃত দু’জনের সঙ্গে কখনও মাওবাদীদের যোগাযোগ ছিল না বলেও দাবি গ্রামবাসীদের।
শুক্রবার রাতে বাট্টি ভূষণ এবং সিধারী জমাদারের সঙ্গে আরও দুজন বেরিয়েছিলেন নিজের নিজের জমির উদ্দেশে। মধ্যরাতে আচমকাই গুলি চলতে শুরু করে। বাকি দুজনের বক্তব্য, আচমকা গুলি চলতে শুরু করায় ঘাবড়ে যান তারা। আশ্রয়ের খোঁজে দৌড়নো শুরু করতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে পড়ে যান বাট্টি ভূষণ এবং সিধারী জমাদার। হাসপাতালে নিয়ে গেলে দুজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই তোলপাড় পড়ে যায় এলাকায়। স্থানীয় পাদেরু হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। ঘটনার প্রতিবাদ করে পুলিশের সামনে বিক্ষোভ দেখায় বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠন, সিপিআই। যদিও গ্রামবাসীদের দাবি উড়িয়ে পুলিশের পাল্টা দাবি, মৃতদের মাওবাদী যোগের প্রচুর প্রমাণ আমাদের হাতে রয়েছে। শুক্রবার রাতে মাওবাদীরাই প্রথম পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বলে দাবি প্রশাসনের। এরপরই পুলিশ আত্মরক্ষার খাতিরে গুলি চালায়, তাতেই মৃত্যু হয় ওই দু’জনের।
পুলিশের দাবি অবশ্য মানতে চাননি গ্রামবাসীরা। আদিবাসীদের নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির দাবি, পুলিশ এভাবেই বারবার মাওবাদী নাম দিয়ে আদিবাসীদের উপর আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।
Comments are closed.