গুগলের মহিলাকর্মীরা পুরুষদের থেকে বেশি বেতন পান? নিজেদের সংস্থার বেতন মূল্যায়ন রিপোর্ট দেখে চমকে গেল গুগলই!
গুগলে নারীশক্তির জয়গান। সোমবার প্রকাশিত হয়েছে গুগল কর্মীদের বেতন কাঠামো মূল্যায়ন রিপোর্ট। সেখানেই দেখা যাচ্ছে, একই ধরনের কাজের ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সার্চ ইঞ্জিন, গুগলে পুরুষদের তুলনায় মহিলারা বেশি বেতন পাচ্ছেন। সোমবার গুগল এই রিপোর্টটি একটি ব্লগের মাধ্যমে প্রকাশ করেছে।
গুগল মহিলাদের পেশাগত উচ্চাশাকে গুরুত্ব দেয় না এবং একই কাজের ক্ষেত্রে বেতন কাঠামো এমন পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়েছে যাতে মহিলারা পুরুষদের থেকে কম বেতন পান, এই অভিযোগ জমা পড়েছিল। তারপরই নিজেদের বেতন কাঠামোর বার্ষিক মূল্যায়নে নামে গুগল। তৈরি হয় রিপোর্ট। যদিও ব্লগ পোস্টটি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে করেনি গুগল কর্তৃপক্ষ।
ব্লগে গুগলের পক্ষ থেকে লেখা হয়েছে, তারা সংস্থার বেশিরভাগ ‘জব গ্রুপের’ বেতন কাঠামো খতিয়ে দেখেছে, যাতে কেবলমাত্র কাজের ভিত্তিতেই কর্মীদের সঠিক বেতন দেওয়া যায়। যদি দেখা যায় কোনও কর্মীর ক্ষেত্রে অসামঞ্জস্য রয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে বেতন বৃদ্ধির মাধ্যমে সেই সমস্যা সমাধান করা হয়। যাতে একই কাজ করা কর্মীদের মধ্যে বেতন কাঠামোয় বড় কোনও বৈষম্য না থাকে।
পুনর্মূল্যায়নের সময় মাথায় রাখা হয়, বাজারে সেই পদের জন্য কত বেতন নির্ধারিত রয়েছে, কর্মী কোথায় আছেন (লোকেশন) এবং কর্মীর পারফর্মেন্স রেটিং। কিন্তু গুগলে ম্যানেজারদের হাতে বিশেষ কিছু ক্ষমতা দেওয়া আছে। তাঁরা প্রয়োজন বুঝলে বিশেষ তহবিল থেকে কর্মীদের বেতন বাড়িয়ে দিতে পারেন। এমনটাই জানানো হয়েছে গুগলের তরফে।
২০১৮ সালে করা সমীক্ষায় উঠে এসেছে, কয়েকটি ক্ষেত্রে ম্যানেজারেরা বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে মহিলা ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন বাড়িয়ে দিয়েছেন। এরফলে কয়েকটি ক্ষেত্রে একই কাজের ক্ষেত্রে পুরুষ-নারী বেতন বৈষম্য বাড়তে পারে বলে মনে করছেন একাংশ।
এছাড়াও প্রথম কাজের প্রস্তাব দেওয়ার ক্ষেত্রেও পুরুষ-নারী বিভাজন ধরা পড়েছে। ব্লগে লেখা হয়েছে, বৈষম্য মেটাতে তাই গুগল ১০,৬৭৭ জনের বেতন পুনর্মূল্যায়নের জন্য ৯.৭ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। তবে বৈষম্য মেটাতে ঠিক কতজন পুরুষ কর্মীর বেতন বৃদ্ধি হয়েছে তা অবশ্য জানায়নি গুগল।
২০১৮ সালে করা সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, দুনিয়ার সবচেয়ে বড় সার্চ ইঞ্জিন, গুগলে মোট কর্মী সংখ্যার ৬৯ শতাংশই পুরুষ। ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ গুগলের মূল সংস্থা অ্যালফাবেটে কাজ করতেন মোট ৯৮,৭৭১ জন। অ্যালফাবেটের সিংহভাগ কর্মীই শাখা সংস্থা গুগলের হয়ে কাজ করেন। কিন্তু সঠিক কর্মী সংখ্যা জানায়নি গুগল বা অ্যালফাবেট, কেউই।
ব্লগে গুগল এও স্বীকার করে নিয়েছে, যে তাদের বার্ষিক সমীক্ষায় বৈষম্যের শিকার কর্মীদের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণের উপায় নেই। গুগলের পে ইক্যুইটি বিভাগের লিড অ্যানালিস্ট লরেন বারবাতো ওই ব্লগ পোস্টেই লিখেছেন, আমাদের উদ্দেশ্য একই কাজের ক্ষেত্রে বেতন কাঠামোয় যে কোনও ধরনের বৈষম্য দূর করা এবং এই রিপোর্টের ভিত্তিতে ভবিষ্যতেও যাতে বৈষম্যের পুনরাবৃত্তি না হয় তা নিশ্চিত করা।
Comments are closed.