গত ৫ বছরে দেশে ২ কোটি পুরুষদের কর্মসংস্থান কমেছে, ঠিকা শ্রমিকের কাজ কমেছে ৩০ শতাংশঃ অপ্রকাশিত রিপোর্টে অস্বস্তি কেন্দ্রের
দেশে ২ কোটি পুরুষের কর্মসংস্থান কমেছে গত ৫ বছরে, বলছে ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভের (এনএসএসও) রিপোর্ট। যদিও সরকারিভাবে এই রিপোর্টও এখনও পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি।
এনএসএসও -র ২০১৭-১৮ সালের পিরিওডিক লেবার ফোর্স সার্ভে (পিএলএফএস) রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ সালে দেশের পুরুষ কর্মীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ কোটি ৬ লক্ষ, যা ২০১১-১২ সালে ছিল ৩০ কোটি ৪ লক্ষ। অর্থাৎ, গত পাঁচ বছরে প্রায় ২ কোটি পুরুষের কর্মসংস্থান কমেছে। সমীক্ষা বলছে, ১৯৯৩-৯৪ সালের পর এই প্রথমবার ভারতে পুরুষ কর্মীর সংখ্যা এতটা কমেছে। ১৯৯৩-৯৪ সালে ২১ কোটি ৮ লক্ষ পুরুষের কর্মসংস্থান হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট রিপোর্টে।
পিএলএফএস-এর এই রিপোর্টে গত ৫ বছরে পুরুষদের বেকারত্বের হারও উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ভারতের শহরগুলিতে পুরুষের বেকারত্বের হার ৭.১ শতাংশ এবং গ্রামাঞ্চলে এই হার ৫.৮ শতাংশ।
২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে এই রিপোর্টটি ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকাল কমিশনের (এনএসসি) অনুমোদন পেলেও এখনও প্রকাশ্যে আসেনি সেই রিপোর্ট। রিপোর্ট প্রকাশ্যে না আনার কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এনএসসি’র ভারপ্রাপ্ত প্রধান পি সি মোহনন জানুয়ারি মাসেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সংস্থার স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ তুলে ইস্তফা দিয়েছেন।
পিএলএফএস-এর রিপোর্ট বলছে, ২০১১-১২ সাল থেকে ২০১৭-১৮ সাল পর্যন্ত ৩ কোটিরও বেশি ঠিকা শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন দেশে। ২০১১-১২ সালে দেশে ঠিকা শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ১০ কোটি ৯ লক্ষ। ২০১৭-১৮ সালে যা নেমে এসেছে ৭ কোটি ৭ লক্ষে। অর্থাৎ, প্রায় ৩০ শতাংশ ঠিকা শ্রমিকের কাজ কমেছে পাঁচ বছরে। পাশাপাশি, কৃষি কাজে যুক্ত ঠিকা শ্রমিকের পরিবারগুলিরও আগের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে রোজগার কমেছে। বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন, গত পাঁচ কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। নতুন চাকরির সুযোগও তৈরি হয়েছে নামমাত্র।
মোদী সরকারের আমলে বিভিন্ন সময়েই পরিসংখ্যান সম্পর্কিত তথ্য চেপে যাওয়া বা তথ্য বিকৃতির অভিযোগ উঠেছে। সে জিডিপির হার হোক বা বেকারত্বের। গত সপ্তাহেই বিশ্বের ১০৮ জন অর্থনীতিবিদ এক যৌথ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের নিন্দা করেন এই প্রসঙ্গে। যদিও কেন্দ্রীয় সরকার বারবার দাবি করে এসেছে, কোনও সরকারি সংস্থার উপরে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা হয়নি।
যে সরকার ক্ষমতায় আসার আগে বছরে ২ কোটি চাকরি দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার মেয়াদ শেষের মুখে গত পাঁচ বছরের রিপোর্টে উঠে এল, ২ কোটি পুরুষের কর্মসংস্থান কমেছে দেশে। তাই কি এই রিপোর্টও প্রকাশ করতে দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার? উঠছে প্রশ্ন।
Comments are closed.