জেএনইউ নিয়ে উত্তাল সংসদ, আন্দোলন চালিয়ে যাবেন পড়ুয়ারা

জেএনইউ-র ছাত্র আন্দোলন নিয়ে উত্তাল হল সংসদ, বিরোধীরা একযোগে সরকারের ভূমিকার কড়া নিন্দা করলেন। সোমবার হস্টেলের বর্ধিত ফি প্রত্যাহারের দাবিতে জেএনইউ-র পড়ুয়াদের আন্দোলন ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয় অরবিন্দ মার্গের জোড়বাগ এলাকায়। পুলিশের মারে আহত হন বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী পড়ুয়া। মঙ্গলবার সংসদে তুলকালাম হয় এ নিয়ে। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, কংগ্রেস সাংসদ টি এন প্রতাপন ও বিএসপি সাংসদ দানীশ আলিরা পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়িয়ে সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের কড়া নিন্দা করেন। সৌগত রায় পড়ুয়াদের উপর চাপ বৃদ্ধিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করে বলেন, বর্ধিত হস্টেল ফি অতি অবশ্যই প্রত্যাহার করা উচিত। নাহলে ফি মেটাতে দুঃস্থ পড়ুয়ারা গভীর সমস্যায় পড়বেন। বিরোধী নেতারা একযোগে অভিযোগ করেন, অগণতান্ত্রিক উপায়ে ছাত্র-ছাত্রীদের আওয়াজ স্তব্ধ করে দিতে চাইছে সরকার।
এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে জেএনইউ-র পড়ুয়ারা দাবি করেন, সোমবার ছাত্রীদের গায়ে হাতে তুলেছে পুরুষ পুলিশ। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশের দায়ের করা এফআইআর প্রত্যাহারের দাবি জানান। পাশাপাশি, পড়ুয়াদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন থেকে সরে যাওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই বলে পরিষ্কার জানিয়ে দেন ঐশী।
সোশ্যাল মিডিয়ায় জেএনইউ-র পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়িয়ে শুরু হয়েছে হ্যাশট্যাগ ট্যাক্স পেয়ারস উইথ জেএনইউ ট্রেন্ড। মাইক্রো ব্লগিং সাইটে নেটিজেনরা জেএনইউ-র পড়ুয়াদের দাবি যথাযথ বলে মনে করছেন। তাঁদের মতে, শিক্ষা কখনও বড়লোকেদের একচেটিয়া হতে পারে না। জেএনইউর ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সম্পাদক শেহলা রশিদ ট্যুইটারে অভিযোগ করেছেন, পড়ুয়াদের আন্দোলন ব্যাপকতা পেতেই আন্দোলনকারীদের ছবি বিকৃত করে সোশ্যাল মিডায়ায় ছড়ানো হচ্ছে। আন্দোলনকারীদের রুখতে পুরনো কুৎসিত খেলা খেলছে সরকার পক্ষ বলে অভিযোগ করেন ২০১৬ সালে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া শেহলা রশিদ।
হস্টেলের বর্ধিত ফি প্রত্যাহার সহ কয়েক দফা দাবি নিয়ে সোমবার মিছিল বের করেন জেএনইউর পড়ুয়ারা। সংসদের উদ্দেশে তাঁদের এই মিছিল আটকায় পুলিশ। সন্ধ্যায় জোড়বাগে দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় খণ্ডযুদ্ধ। পুলিশের দাবি, সোমবারের ঘটনায় তাদের ৩০ জন কর্মী জখম হন। পড়ুয়াদের পাল্টা দাবি, তাঁদের অন্তত ২০ জন জখম হয়েছেন। অভিযোগ, নির্মমভাবে তাঁদের গায়ে হাত তোলা হয়। ছাত্রীদের মারধর করেন পুরুষ পুলিশ কর্মীরা। এমনকী মিছিলে যোগ দেওয়া এক দৃষ্টিহীন পড়ুয়াকে বেধড়ক মারধর করা হয়। মঙ্গলবার দিল্লি পুলিশের তরফে কিষাণগড় থানায় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়।

Comments are closed.