‘মেজর রোলব্যাক’ আই ওয়াশ! জেএনইউতে বর্ধিত ফি সম্পূর্ণ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে, জানিয়ে দিল এসএফআই

জেএনইউতে উত্তেজনা কমার লক্ষণ নেই। ৩০০ শতাংশ ফি বৃদ্ধির নাছোড় আন্দোলন শুরু করেছেন দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। কর্তৃপক্ষের ‘মেজর রোলব্যাকের’ সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরেও তা থামার চিহ্ন নেই। পড়ুয়ারা জানাচ্ছেন, কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ ফি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি জানায়, হস্টেল এবং আনুষঙ্গিক ফি বাড়ানো হবে। সেই কথামতো হস্টেলের সিঙ্গল বেড রুমের ভাড়া ২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয় মাসিক ৬০০ টাকা। একইভাবে হস্টেলের ডাবল বেড রুমের ভাড়া ১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৩০০ টাকা। বাড়তি হিসেবে যোগ হয় সার্ভিস চার্জ ১৭০০ টাকা। হস্টেলের মেস সিকিউরিটি বাবদ আগে পড়ুয়াদের দিতে হত ৫৫০০ টাকা, তা বাড়িয়ে করা হয়েছিল ১২ হাজার টাকা। এছাড়াও আরও বেশকিছু নতুন বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছিল পড়ুয়াদের হস্টেলবাসের উপর।

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের দিন কর্তৃপক্ষের লাগামছাড়া ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। সেই বিক্ষোভ মোকাবিলায় নামে উর্দিধারী পুলিশ এবং আধাসেনা। নিরস্ত্র পড়ুয়াদের উপর পুলিশি নির্যাতনের ছবি ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশে। নিন্দার ঝড় ওঠে সব মহলে। শেষপর্যন্ত ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠার কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতেও খুশি না ছাত্রছাত্রীরা। এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন ছাত্রছাত্রীরা।


বুধবার বিকেলে মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের এক সিনিয়র অফিসার ঘোষণা করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল হস্টেল ফি এবং আনুষঙ্গিক খরচে বড়সড় কাটছাটের কথা ঘোষণা করছে। পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া বৃত্ত থেকে আসা পড়ুয়াদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক সহায়তার কথাও ট্যুইট করে জানান আর সুব্রহ্মণ্যম।

‘মেজর রোলব্যাকে’র কথা বলে আসলে কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের ভুল পথে চালিত করছে। ছাত্রছাত্রীদের মতে, এটা আই ওয়াশ ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই আমরা কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত মানছি না। পাশাপাশি তাঁদের দাবি, রোলব্যাকের ঘোষণা করতে গিয়ে আধিকারিক পড়ুয়াদের ক্লাসে ফেরার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু বর্ধিত ফি কার্যকর থাকলে ছাত্রছাত্রীরা শুধু ক্লাসই না, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর ছেড়েই বেরিয়ে যাবে। এটাই বোধহয় চাইছেন তাঁরা। কটাক্ষ আন্দোলনরত পড়ুয়াদের।

সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, বিপিএল পড়ুয়াদের, যাঁরা অন্য কোনও স্কলারশিপ পাচ্ছেন না, তাঁদের বর্ধিত ফি-র অর্ধেক দিতে হবে। অর্থাৎ যে ঘরের জন্য বাকিদের দিতে হবে ৬০০ টাকা, সেই ঘরে থাকতে বিপিএলভুক্ত পড়ুয়াদের দিতে হবে ৩০০ টাকা। একইভাবে যে ডবল বেড রুমের বর্ধিত ভাড়া হয়েছিল ৩০০ টাকা, বিপিএল ভুক্ত পড়ুয়াদের জন্য তা কমিয়ে করা হয়েছে ১৫০ টাকা। অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচের ক্ষেত্রেও এই তালিকার পড়ুয়ারা অর্ধেক ছাড় পাবেন।

Comments are closed.