কানহাইয়ার লড়াই তাঁর একার নয়ঃ পাশে শাবানা, স্বারা ভাস্কর, প্রকাশ রাজ থেকে সাধারণ মানুষ, ক্রাউড ফান্ডিংয়ে উঠল ৬৫ লক্ষ টাকা

বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট-যুদ্ধে পাশে পাননি আরজেডি-কংগ্রেসকে। কিন্তু কানহাইয়া কুমার পাশে পেলেন গোটা দেশের একাধিক বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের সমর্থন আর সাধারণ মানুষের অফুরন্ত সাহায্য।
কেন্দ্রে মোদী সরকার গঠনের পর দেশে বিজেপি বিরোধী অন্যতম মুখ হিসেবে উঠে এসেছিলেন জেএনইউয়ের ছাত্র নেতা কানহাইয়া কুমার। বিহারের বেগুসরাইয়ের দরিদ্র পরিবারের সন্তান কানহাইয়াকে দেশদ্রোহী আখ্যা পর্যন্ত দিয়েছিল গেরুয়া শিবির! কানহাইয়াকে সংসদে যেতে দেওয়া যাবে না, দরকারে ইভিএম কারচুপি করে তাঁকে হারাতে হবে বলে সম্প্রতি বিজেপিকে পরামর্শ দিয়েছে শিবসেনা।
অথচ এবার লোকসভা ভোটে বিহারে আরজেডি-কংগ্রেসের মহাজোটে জায়গা মেলেনি তাঁর, কিন্তু তাতে দমে যাননি কানহাইয়া। সিপিআইয়ের প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন বিহারের বেগুসরাই আসন থেকে। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাশে পাননি আরজেডি-কংগ্রেসকে। কিন্তু তাঁর এই একক লড়াইয়ে গোটা দেশের বিভিন্ন পেশার বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের যে ভালোবাসা, সাহায্য তিনি পাচ্ছেন, তা নতুন নজির তৈরি করেছে দেশের সংসদীয় রাজনীতির ইতিহাসে।
আগামী ৯ ই এপ্রিল বেগুসরাইয়ে বিরাট মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিতে যাবেন কানহাইয়া। জোরদার প্রচার কর্মসূচির মাঝে এখন চলছে সেদিনের প্রস্তুতি। কারণ, সেদিন তাঁর মিছিলে যোগ দেওয়ার কথা গোটা দেশের বিভিন্ন পেশার একাধিক বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের। ক’দিন আগেই বিহারে গিয়ে গুজরাতের দলিত নেতা তথা বিধায়ক জিগনেশ মেভানি কানহাইয়ার হয়ে নির্বাচনী প্রচার করেছেন। কানহাইয়া কুমারকে নির্বাচনে জয়ী করতে বিহারের মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন অভিনেত্রী শাবানা আজমি। তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে ট্যুইট করেছেন শাবানা আজমি।

কানাহাইয়া পাশে পেয়েছেন লেখক ও গীতিকার জাভেদ আখতারকে। তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন দক্ষিণের অভিনেতা ও এই লোকসভা ভোটে নির্দল প্রার্থী প্রকাশ রাজ। কানহাইয়ার হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করেছেন অভিনেত্রী স্বারা ভাস্কর থেকে চিত্র পরিচালক ইমতিয়াজ আলি।

তাঁর হয়ে নির্বাচনী প্রচার করছেন, ‘নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন’ এর নেত্রী মেধা পাটেকর বা গুজরাতের পাতিদার নেতা ও সদ্য কংগ্রেসে যোগ দেওয়া হার্দিক প্যাটেল।
সূত্রের খবর, এমনই নানান বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব ৯ ই এপ্রিল কানহাইয়ার মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন তাঁর মিছিলে অংশ নিতে পারেন।
নির্বাচনে লড়ার জন্য টাকা জোগাড় করতে ক্রাউড ফান্ডিংয়ের অভিনব উদ্যোগ নিয়েছিলেন দরিদ্র পরিবারের ছেলে কানহাইয়া কুমার। ১০ দিনও হয়নি ক্রাউড ফান্ডিং ব্যবস্থা চালু করেছেন জেএনইউয়ের এই প্রাক্তনী। ভোটে লড়ার জন্য ৭০ লক্ষ টাকা জোগাড়ের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিলেন। যে সময়সীমা তিনি রেখেছিলেন তার ২৪ দিন আগেই প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা জমা পড়ল ক্রাউড ফান্ডিং ব্যবস্থায়।

যেভাবে সাধারণ মানুষ আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাতে অভিভূত কানহাইয়া শিবির। এবার তাঁর লক্ষ্য, বিজেপি এবং আরজেডি-কংগ্রেস জোটকে হারিয়ে সংসদে পা রাখা।

Comments are closed.