প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়ে ডঃ মনমোহন সিংহকে বিরোধীরা অধিকাংশ বিষয়েই তাঁর নিরবতা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। তাঁকে ‘অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ বা ঘটনাচক্রে হওয়া প্রধানমন্ত্রী বলেও সমালোচনা করেছেন তাঁর। বুধবার এর জবাব দিলেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। মনমোহন সিংহ বললেন, তিনি শুধু ‘অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টারই ছিলেন না, অ্যাক্সিডেন্টাল অর্থমন্ত্রীও ছিলেন।
এদিন দিল্লিতে নিজের বই, ‘চেঞ্জিং ইন্ডিয়া’র প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিরবতার জন্য বিভিন্ন সময়ে তাঁর সমালোচনা করা হয়েছে। তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে চাইতেন না বলে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগও করা হয়েছে। এই সব অভিযোগকে অমূলক বলে দাবি করে মনমোহন সিংহ জানান, যে কোনও বিদেশ সফরের আগে ও পরে নিয়মিতভাবে সাংবাদিক বৈঠক করতেন তিনি। তাঁর বই এই সব প্রশ্ন ও সমালোচনার জবাব দেবে বলে জানান রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর।
এদিন তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে বর্তমান কেন্দ্র সরকার ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দ্বৈরথ প্রসঙ্গও। মনমোহন বলেন, দেশের অর্থনীতিকে সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করতে গেলে দরকার সরকার ও সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সুস্থ আলোচনা। তিনি সরকার ও সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের ‘সম্পর্ক’কে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, সব সিদ্ধান্তে যে দু’তরফ একমত হবে তার কোনও মানে নেই। তবে সেই দ্বিমত যেন দীর্ঘস্থায়ী না হয়। আর এর জন্য দরকার আলোচনার। মোদী সরকারের জিএসটি ও নোটবন্দি প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন মনমোহন সিংহ।
‘চেঞ্জিং ইন্ডিয়া’ পাঁচ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক চিন্তাধারা ব্যক্ত করেছেন ডঃ মনমোহন সিংহ। সেই সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি ও বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর অবস্থান ও জবাব এই বইতে পাওয়া যাবে।
‘চেঞ্জিং ইন্ডিয়া’ বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে মনমোহন সিংহের সাক্ষাৎকার নেন অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু। তাঁর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নিজের অবস্থান ও মতামত জানান। ১৯৯১ সালে তিনি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী থাকার সময় দেশের আর্থিক দূরাবস্থা থেকে সুস্থিতি ফিরিয়ে দেওয়াকে তাঁর জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য বলে উল্লেখ করেন মনমোহন সিংহ। বলেন, দেশের একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলেছেন, সেই জন্য তিনি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন।
Comments are closed.