উর্জিত প্যাটেলের ইস্তফার পর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর হলেন শক্তিকান্ত দাস। আগামী তিন বছরের জন্য এই দায়িত্ব সামলাবেন তিনি। মঙ্গলবারই তাঁর নিয়োগ পত্রে সই করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। দেশের ২৫ তম আরবিআই গভর্নর হলেন শক্তিকান্ত দাস।
কিন্তু শক্তিকান্ত দাসকে আরবিআই-এর গভর্নর করার পর একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
কে শক্তিকান্ত দাস
এর জন্য ফিরে যেতে হবে বছর দুই পেছনে। ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর নোটবন্দির কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। এরপর দিন যত গেছে, একে একে প্রকাশ পেয়েছে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার ক্ষেত্রে নানান ফাঁক-ফোকর। প্রশ্ন উঠেছে, এই পদক্ষেপের নানা খুঁটিনাটি নিয়ে। সে সময় প্রতিবারই কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের এক আমলা সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নিয়মিত প্রশ্নের উত্তর দিতেন, সওয়াল করতেন সরকারের এই সিদ্ধান্তের পক্ষে। এটিএম ও ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলা ও জমা দেওয়া নিয়ে যখন দেশের মানুষের নাজেহাল দশা, তখন প্রায় রোজই নয়া নয়া নিয়ম সামনে আনতেন ওই আমলা। পক্ককেশের সুদর্শন সেই ব্যক্তিই হলেন শক্তিকান্ত দাস।
মোদী জমানায় ২০১৪ সালে সামলেছেন রাজস্ব সচিবের দায়িত্ব। এরপর ২০১৫ সাল থেকে টানা প্রায় দু’বছর ছিলেন অর্থ মন্ত্রকের ইকনমিক্স অ্যাফেয়ার্স বিভাগের মুখ্য সচিবের দায়িত্বে। ২০১৭ সালে সেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন তিনি। বর্তমানে তিনি দেশের পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সদস্য। সম্প্রতি জি ২০ সম্মেলনে ভারতের শেরপার পদেও ছিলেন তিনি। মনমোহন সিংহ জমানায় ছিলেন কেন্দ্রীয় সার ও রসায়ন মন্ত্রকের সচিব। ১৯৮০ সালের তামিলনাড়ু ব্যাচের এই আইএএস অফিসার সরকারের অন্দরে নোট বাতিলের অন্যতম সমর্থক বলেই পরিচিত। নোট বাতিলের সুফল নিয়ে একাধিকবার সাফাইও দিয়েছেন তিনি। উর্জিত প্যাটেলের ছেড়ে যাওয়া পদে সেই কারণেই তাঁকে সরকার বেছে নিল প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে।
কেন তাঁকে নিয়ে প্রশ্ন
শক্তিকান্ত দাস আরবিআই গভর্নর হওয়ার পরই তাঁকে নিয়ে কটাক্ষ শুরু হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অর্থনীতিতে কোনও প্রথাগত ডিগ্রি না থাকা সত্ত্বেও ইতিহাসে এমএ এক আইএএস অফিসারকে কেন আরবিআই-এর মতো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের গভর্নর করা হল তা নিয়ে তাঁকে কটাক্ষ করছেন অনেকেই। তাঁর আগে পরপর কারা আরবিআই-এর গভর্নর হয়েছিলেন সেই তালিকা তুলে দিয়ে আনন্দ রঙ্গনাথন নামে এক ব্যক্তি ট্যুইট করেছেন, ‘লাস্ট ফিউ আরবিআই গভর্নরস, ওয়াই ভি রেড্ডি (পিএইচডি, ইকনমিক্স), ডি সুব্বারাও (পিএইচডি, ইকনমিক্স), রঘুরাম রাজন (পিএইচডি, ইকনমিক্স), উর্জিত প্যাটেল (পিএইচডি, ইকনমিক্স), শক্তিকান্ত দাস (এমএ, ইতিহাস)’। জনৈক আশিস যোশী ট্যুইট করেছেন, ‘কলেজে আমার সিনিয়র আরবিআই গভর্নর হয়েছেন। তিনি কলেজে ইতিহাস পড়েছেন। আমরা যাঁরা ইতিহাস পড়েছি তাঁরা উচ্ছ্বসিত যে, ইতিহাসের ছাত্রও এই পদে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারে’। তিনু চেরিয়ান আব্রাহাম নামে এক ব্যক্তি নোটবন্দির সময় শক্তিকান্ত দাসের একটি মন্তব্যকে উল্লেখ করে ট্যুইট করেছেন, ‘শক্তিকান্ত দাস বলেছিলেন, একই ব্যক্তি বারবার গিয়ে বিভিন্ন ব্যাঙ্কে লাইন দিচ্ছেন বলেই ব্যাঙ্কের সামনে লাইন পড়ছে’।
Comments are closed.