সাত বছর ধরে অমীমাংসিত একটি প্রসঙ্গ নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। বিয়ের পর অত্যাচারিত হয়ে মহিলারা যদি শ্বশুরবাড়ি ত্যাগ করে মা-বাবার কাছে কিংবা অন্য কোনও জায়গায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হন, সেক্ষেত্রেও ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮ এ ধারায় মামলা দায়ের করতে আর কোনও সমস্যা থাকল না।
পণের দাবিতে অত্যাচারের ঘটনায় অভিযোগকারিনী স্ত্রীকে যদি শ্বশুরবাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে অভিযোগকারিনী স্ত্রী যেখানেই থাকুন, সেখান থেকেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮ এ ধারায় বধূ নির্যাতনের মামলা দায়ের করতে পারবেন কি? উত্তর প্রদেশের জনৈক রুপালি দেবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, শ্বশুরবাড়িতে পণ সংক্রান্ত কারণে অত্যাচারিত হয়ে যদি কোনও মহিলা স্বামীর বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন এবং বাপের বাড়িতে আশ্রয় নেন, সেই জায়গা থেকেও মামলা দায়ের করতে পারবেন। শুধু শ্বশুরবাড়ি বা বাপের বাড়ি নয়, অত্যাচারে ঘর ছাড়তে বাধ্য হওয়া বধূ যেখানে থাকছেন, সেখান থেকেই তিনি ফৌজদারি মামলা করতে পারবেন বলে মঙ্গলবার জানিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
৪৯৮ এ ধারা আসলে কী?
শ্বশুরবাড়িতে স্বামী বা তার আত্মীয় স্বজনের দ্বারা কোনও গৃহবধূ শারীরিক বা মানসিকভাবে অত্যাচারিত হলে স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ ধারায় মামলা দায়ের করতে পারেন। এই ধারায় অত্যাচারিত গৃহবধূর স্বামী বা শ্বশুর বাড়ির লোকজনের তিন বছর পর্যন্ত হাজতবাস ও জরিমানা হতে পারে। আগে গৃহবধূ যে স্থানে অত্যাচারিত হয়েছেন, সেখান থেকেই কেবলমাত্র বধূ নির্যাতনের মামলা দায়ের করতে পারতেন।
বিয়ের পর অত্যাচারিত হয়ে মহিলারা শ্বশুরবাড়ি ব্যতিত অন্য কোনও জায়গায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হলে, সেক্ষেত্রেও ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ ধারায় মামলা দায়ের করা যাবে কিনা, ২০১২ সালে এমনই একটি মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। তৎকালীন বিচারপতি টি এস ঠাকুর ও বিচারপতি সি নাগাপ্পানের বেঞ্চে সেই স্পেশাল লিভ পিটিশনের শুনানি চলেছিল। মঙ্গলবার সেই মামলারই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট।
Comments are closed.