বন্ধ হবে বিএসএনএল-এমটিএনএল? দুই টেলিকম সংস্থার পুনরুজ্জীবনের প্রস্তাব খারিজ অর্থ মন্ত্রকের, অনিশ্চিত ১.৬৪ লক্ষ কর্মীর ভবিষ্যৎ

বিএসএনএল, এমটিএনএল কি বন্ধ হওয়ার মুখে? উৎসবের মরসুম শেষ হওয়ার আগে এই প্রশ্নই বড় আকারে দেখা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রকের এক নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে।
সূত্রের খবর, ডিপার্টমেন্ট অফ টেলিকমিউনিকেশন (ডিওটি) ধুঁকতে থাকা বিএসএনএল এবং এমটিএনএল-এর পুনরুজ্জীবনের জন্য প্রায় ৭৪ হাজার কোটি টাকার সহায়তা চেয়েছিল অর্থ মন্ত্রকের কাছে। কিন্তু সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রক ডিওটি’র সেই প্রস্তাব খারিজ করে এই দুই বৃহৎ টেলিকম সংস্থাকে বন্ধ করে দেওয়ার সুপারিশ করেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে বিএসএনএল-এর প্রায় ১ লক্ষ ৬৪ হাজার কর্মীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। এই দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বন্ধ করে দেওয়ার যে সুপারিশ কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক করেছে বলে জানা যাচ্ছে, তার বিরোধিতায় নেমেছে অধিকাংশ শ্রমিক সংগঠন। যদিও সূত্রের খবর, এই দুই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বন্ধ হলে কর্মীদের আগাম অবসর (ভিআরএস) নেওয়ার জন্য প্যাকেজের ঘোষণা করতে পারে অর্থ মন্ত্রক। এই মুহূর্তে সেই প্যাকেজ তৈরির জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং যত দ্রুত সম্ভব সেই রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রক।
বিএসএনএল-এ মোট তিন ধরনের কর্মী এবং অফিসার রয়েছেন। ১) যাঁরা সরাসরি বিএসএনএল-এর নিযুক্ত কর্মী, ২) যাঁরা অন্য কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা থেকে বিএসএনএল-এ এসেছিলেন এবং বর্তমানে এই টেলিকম সংস্থায় স্থায়ীভাবে কর্মরত এবং ৩) ইন্ডিয়ান টেলিকমিউনিকেশন সার্ভিসেস অফিসার (আইটিএস)।
সূত্রের খবর, আইটিএস অফিসারদের ভিআরএস দেওয়া হবে না। তাঁরা অন্য কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থায় যোগ দিতে পারবেন। এর বাইরে বিএসএনএল-এর প্রায় ৯০ শতাংশ কর্মীকে স্বেচ্ছা-অবসর দেওয়ার ভাবনা-চিন্তা চলছে বলে সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই টেলিকম দফতরকে এই ধরনের কর্মীর সংখ্যা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে, যাঁদের স্বেচ্ছা-অবসর দেওয়া হবে। দীর্ঘ বছর ধরে চলা এই দুই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা শেষ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেলে সরাসরি কাজ হারাবেন প্রায় দেড় লক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী। একেই দেশব্যাপী তীব্র মন্দার আশঙ্কা, গাড়ি থেকে কনজিউমার প্রোডাক্টস-সব কিছুর বিক্রি তলানিতে, এই পরিস্থিতিতে দেশের দুই বৃহৎ রাষ্টায়ত্ত সংস্থা বন্ধের অশনি সঙ্কেতে আতঙ্কিত দেশের সরকারি-বেসরকারি দুই ক্ষেত্রের কর্মীরাই।

Comments are closed.