ডেঙ্গু-করোনা গবেষণা নিয়ে মার্কিন গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য, ব্রাজিলে যেখানে ডেঙ্গুর প্রভাব বেশি সেখানে করোনা দুর্বল

করোনার মধ্যে রাজ্যে সতর্কতা নেওয়া হয়েছে ডেঙ্গু মোকাবিলায়। প্রতিবছরই মশাবাহিত এই রোগে প্রচুর মানুষ মারা যান। কিন্তু একবার ডেঙ্গু হলে করোনার কোপ থেকে মিলতে পারে রেহাই! এমনই চমকপ্রদ তথ্য উঠে এল মার্কিন গবেষণায়।

 

কী জানাচ্ছে গবেষণা? 

সম্প্রতি আমেরিকার ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ব্রাজিলে করোনার প্রাদুর্ভাব নিয়ে গবেষণা চালান। ব্রাজিলের ভৌগোলিক অবস্থানভিত্তিক সমীক্ষা করতে গিয়ে তাঁরা চমকপ্রদ তথ্য পেয়েছেন। জানা যাচ্ছে, ডেঙ্গু ও করোনার মধ্যে একটা সূক্ষ্ম সংযোগ রয়েছে। কিন্তু দুটি তো আলাদা ভাইরাস। তাহলে? বিজ্ঞানীরা বলছেন দুই ভাইরাসের গঠনগত মিল নেই। তবে নিরাময়ের প্রশ্নে দুই ভাইরাসের সম্পর্ক আছে! গবেষকদের দাবি, করোনা বিধ্বস্ত ব্রাজিলের যে সমস্ত অঞ্চলে গত বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ ঘটেছিল, সেখানে চলতি বছর করোনা সংক্রমণের হার বেশ কম। প্রফেসর মিগুয়েল নিকোলেলিসের নেতৃত্বাধীন এই গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছে রয়টার্স। তাতে বলা হয়েছে, ‘নিরাময়ের ক্ষেত্রে ডেঙ্গুর ফ্লাভিভাইরাস ও করোনার সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের মধ্যে এক ধরনের ক্রস-রিঅ্যাক্টিভিটির সম্পর্ক রয়েছে। অর্থাৎ, কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে কিংবা কাউকে নিরাপদ ডেঙ্গু ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হলে তাঁর দেহে করোনার বিরুদ্ধেও এক ধরনের প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হচ্ছে বলে দেখা যাচ্ছে।’

ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিগুয়েল নিকোলেলিস জানান, গবেষণাটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, আগের কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, ডেঙ্গু আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির কোভিড পরীক্ষা করা হলে তিনি ‘ফলস পজিটিভ’ হিসেবে ধরা পড়ছেন। একেই ডেঙ্গু-করোনার সম্পর্কের প্রমাণ হিসেবে হাজির করেছেন মিগুয়েল। তিনি জানান, দু’টি ভাইরাসের মধ্যে ইমিউনোলজিক্যাল সংযোগও রয়েছে। এতদিন এটা ভাবনা-চিন্তার বাইরে ছিল। কারণ, মশাবাহিত ডেঙ্গু আর করোনাভাইরাস, দুটি সম্পূর্ণ আলাদা গোত্রের।

গবেষকরা জানিয়েছেন, ব্রাজিলের পারানা, সান্টা কাটারিনা, মিনাস গেরাইসের মতো অঞ্চলে ২০১৯ সালে ব্যাপক ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যায়। করোনা বিধ্বস্ত ব্রাজিলে ওই জায়গাগুলিতে কোভিডের তেমন প্রভাব পড়েনি। ম্যাপের মাধ্যমে যে সব এলাকায় করোনার প্রভাব কম, সেগুলি চিহ্নিত করে কেন ওই সব জায়গায় সংক্রমণ কম, তার একটি উত্তর সন্ধান করছিলেন বিজ্ঞানীরা। সেই সম্ভাব্য কারণ নিয়ে কাটাছেঁড়া কর‍তে গিয়েই ডেঙ্গু তত্ত্বটি উঠে এসেছে। প্রফেসর মিগুয়েল জানান, এটা আকস্মিক ফলাফল। পুরোপুরি দুর্ঘটনা বলা যায়। যদিও বিজ্ঞানে এমন ঘটনা হামেশাই ঘটে। আপনি হয়ত একটা জিনিস খুঁজে চলেছেন। কিন্তু শেষে এমন এক জায়গায় আঘাত করলেন, যে বিষয়ে আদৌ কিছু কল্পনা করেননি।

Comments are closed.