ফের গ্রেফতার হলেন বিপ্লবী লেখক ও নাগরিক অধিকার রক্ষা কর্মী ভারাভারা রাও। শনিবার মহারাষ্ট্র পুলিশ ভীমা কোড়েগাঁও মামলায় ভারাভারা রাওকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। এদিনই তিনি আবার গৃহবন্দি দশা থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভীমা-কোড়েগাঁও যুদ্ধের ২০০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে পুণেতে দলিতদের মিছিলে হামলা হয়। এর প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয় মুম্বই। সেই ঘটনায় দলিতদের সমর্থম এবং উস্কানি দেওয়া ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হত্যার ছক কষার অভিযোগে মাওবাদী মতাদর্শে বিশ্বাসী ও কবি ভারাভারা রাওসহ পাঁচ পাঁচ মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছিল পুণে পুলিস। সেই গ্রেফতার নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে সারা দেশে। বিজেপি ভারাভারা রাওসহ মানবাধিকার কর্মীদের আরবান নকশাল আখ্যা দিয়ে তাঁদের তীব্র সমালোচনা করে। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি ছত্তিশগড়ে নির্বাচনী সভায় নরেন্দ্র মোদী প্রশ্ন তোলেন, কংগ্রেস কেন মাওবাদীদের সমর্থন করছে?
ভীমা-কোড়েগাঁও ঘটনার তদন্তে হায়দরাবাদ, দিল্লি, ফরিদাবাদ, গোয়া, মুম্বই, থানে ও রাঁচিতে অভিযান চালায় পুণে পুলিশ। হায়দরাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ভারাভারা রাওকে। ফরিদাবাদ থেকে সুধা ভরদ্বাজ, দিল্লি থেকে গৌতম নাভলাখা, মুম্বই থেকে অরুণ পেরিরা ও ভেনন গনজ়ালভেস এবং রাঁচি থেকে ফাদার স্ট্যান স্যামিকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২৯ শে অগাস্ট এই সমাজকর্মীদের গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ দেয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই লেখককে ট্রানজিট রিমান্ডে নেওয়া সংক্রান্ত একটি নির্দেশ রদ করার আবেদন শুক্রবার খারিজ করে দেয় হায়দরাবাদ হাইকোর্ট। এরপর পুণে পুলিশের একটি বিশেষ দল শুক্রবারই হায়দরাবাদে গিয়ে পৌঁছোয়। শনিবার ভারাভারা রাওয়ের গৃহবন্দি অবস্থায় থাকার সময়সীমা শেষ হয়। শনিবার রাতেই তাঁকে ফের গ্রেপ্তার করে পুণে পুলিশ। রবিবার তাঁকে পুণের স্থানীয় আদালতে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন পুণের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার।
প্রসঙ্গত, ভারাভারা রাও শুধু তেলগু ভাষার নয়, গোটা দেশের এক অগ্রগণ্য কবি। গত প্রায় পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি লিখে চলেছেন। সারা দেশে দলিত মানুষের ওপর যে কোনও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরব হওয়াটাই তাঁর অভ্যাস। বহুবার এর জন্য কারাবরণ করেছেন, অভিযুক্ত হয়েছেন নানা মিথ্যা মামলায়। কবি, অধ্যাপক, লেখক ও মানবাধিকার আন্দোলনের নেতা হিসেবে ভারাভারা আজ নয়, গত কয়েক দশকের এক পরিচিত নাম।
Comments are closed.