দেশবিরোধীদের প্রকাশ্যে গুলি করে মারার আইন আনুন, মোদীকে আবেদন কর্ণাটকের কৃষিমন্ত্রীর

ভারত বিরোধী কথা বললে কিংবা পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দিলে প্রকাশ্যে গুলি করার আইন চাই। না হলে এদের শিক্ষা দেওয়া যাবে না। এবার সরাসরি গুলি করে মারার আইন আনার দাবি তুললেন কর্ণাটক মন্ত্রিসভার এক মন্ত্রী।

গোলমালের সূত্রপাত ক’দিন আগে একটি সভায় এক তরুণী অমূল্য লিওনার দেওয়া একটি স্লোগান নিয়ে। কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে একটি সমাবেশে ওই তরুণী পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দেন বলে অভিযোগ। তারপর অমূল্য লিওনাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় দেশদ্রোহিতার মামলা।

এরপরই অমূল্যকে দেশবিরোধী আখ্যা দিয়ে আন্দোলনের সুর চড়িয়েছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো। এই প্রেক্ষিতেই এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে সরাসরি গুলি মারার আইন চেয়ে বসলেন কর্ণাটকের কৃষিমন্ত্রী বি সি প্যাটেল।

সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বি সি প্যাটেল বলেন, ওরা আমাদেরই খাবার খাবে, এই দেশের জল-বাতাস নিয়ে বেচে বর্তে থাকবে। পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দিতে হলে ভারতে থাকার প্রয়োজন কি? চিনে দেশবিরোধী কথা বলতে মানুষ ভয় পায়। আমি প্রধানমন্ত্রী মোদীকে অনুরোধ করছি, তেমনই কোনও কঠোর আইন এখানেও আনার জন্য, যাতে এই সমস্ত বিশ্বাসঘাতকদের শায়েস্তা করা যায়।

দিন তিনেক আগে বেঙ্গালুরুতে সিএএ বিরোধী একটি সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মিম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসি সহ একাধিক বিরোধী নেতৃত্ব। অভিযোগ, তাদের সামনেই অমূল্য লিওনা আচমকা মাইক ধরে পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দিতে শুরু করেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর হাত থেকে মাইক কেড়ে নেন আসাদুদ্দিন ওয়েইসি সহ উপস্থিতি অন্যান্য নেতারা। অমূল্য লিওনা জানান, তিনি হিন্দুস্থান জিন্দাবাদা স্লোগান দেওয়ার আগেই তাঁর হাত থেকে মাইক কেড়ে নেওয়া হয়। তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়, পরে তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয় দেশদ্রোহের মামলা।

এদিকে অমূল্য দাবি করেছেন, তিনি পৃথিবীর সমস্ত দেশেরই মঙ্গল প্রার্থনা করেন। পৃথিবীব্যাপী সমস্ত দেশের উন্নয়ন হলে তবেই বিশ্বে শান্তি চিরস্থায়ী হবে। তাঁর কথায়, মঞ্চে দাঁড়িয়ে তাই কেবলমাত্র পাকিস্তান নয়, বরং প্রতিটি দেশেরই মঙ্গল প্রার্থনা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পাকিস্তান শুনেই সবাই হই হই করে মাইক কেড়ে নিল।

এদিকে ওই তরুণীকে খুন করতে পারলে তাকে হাতেগরম ১০ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে ইতিমধ্যেই ঘোষণা করে দিয়েছে শ্রীরাম সেনা। একথা জানতে পেরেও পুলিশের তরফে এখনও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শ্রীরাম সেনার বিরুদ্ধে শুরু হয় তদন্তও। এরই মধ্যে গুলি করে মারার আইন চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানালেন কর্ণাটকের মন্ত্রী বি সি প্যাটেল।

বর্তমানে কর্ণাটকের কৃষিমন্ত্রী বি সি প্যাটেল আগে ছিলেন কংগ্রেসে। কংগ্রেসের হয়েই ভোটে জেতার পর জোট সরকারেও যোগ দেন। কিন্তু তারপরই বি সি প্যাটেল সহ কর্ণাটকের ১৫ জন বিধায়ক কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকার ভেঙে দিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপিতে যোগ দিয়েই হাতে পান কৃষি দফতর।

Comments are closed.