‘বিরোধিতা করলেই দেশদ্রোহী বলে দাগিয়ে দেওয়া বিজেপির সংস্কৃতি নয়’, মোদী-শাহকে ব্লগ-বোমা আডবাণীর

দলের মূল নীতি নির্ধারক পরিষদ থেকে সরিয়ে তাঁকে পাঠানো হয়েছে দলের মার্গ দর্শকমণ্ডলীতে। তাঁর ঘনিষ্ঠদের অভিযোগ, গত ৫ বছরে উপেক্ষা ছাড়া পাননি আর কিছুই। এমনকী পাননি আসন্ন লোকসভা ভোটে লড়ার টিকিটও। তাঁর বদলে গান্ধীনগর থেকে প্রার্থী হয়েছেন অমিত শাহ। রাজনৈতিক মহল বলছে, বিজেপিতে আডবাণী-যুগ শেষ। এই প্রেক্ষিতেই ৫ বছর বাদে কলম ধরলেন বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য লালকৃষ্ণ আডবাণী। বিরোধিতা করলেই তাঁকে দেশদ্রোহী বলে দাগিয়ে দেওয়ার সঙ্গে বিজেপির নীতি-আদর্শের কোনও সম্পর্ক নেই, লিখলেন নিজের ব্লগে। মোদী এবং অমিত শাহ জুটিকে লক্ষ্য করেই আডবাণীর এই ব্লগ-বোমা, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
২০১৪ সালের পর বিজেপিতে নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ জুটির জমানা শুরু হওয়ার পর থেকেই কার্যত একঘরে করে রাখা হয়েছে বাজপেয়ী মন্ত্রিসভার উপ প্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আডবাণীকে। এমনকি আসন্ন লোকসভা ভোটে একানব্বই বছরের আডবাণীকে টিকিটও দেয়নি বিজেপি। তাঁর লোকসভা কেন্দ্র গুজরাতের গান্ধীনগর থেকে এবার প্রার্থী হয়েছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। যুক্তি হিসেবে অমিত শাহ বলেছেন বিজেপি এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৭৫ বছরের বেশি বয়সী কাউকে লোকসভা ভোটে প্রার্থী করা হবে না। এই প্রেক্ষিতে এবার নিজের মত ব্যক্ত করলেন আডবাণী।
আগামী ৬ ই এপ্রিল বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে একটি ব্লগ লেখেন বাজপেয়ী মন্ত্রিসভার উপ প্রধানমন্ত্রী। আর সেই ব্লগে সরাসরি খোঁচা দিলেন বর্তমানে বিজেপির সর্বময় কর্তাদের। বিজেপির নীতি ও আদর্শের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বিরোধিতা করলেই তাঁকে দেশদ্রোহী বলে দাগিয়ে দেওয়ারও বিরোধিতা করলেন নিজের মতো করে। ব্লগে তিনি লিখেছেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও বিবিধতা ভারতের গণতন্ত্রের আত্মা। এবং কেউ বিজেপির রাজনৈতিক মতাদর্শের বা মতের বিরোধী হলেই তাঁকে দেশ বিরোধী বলে দাগিয়ে দেওয়া হবে, এতেও দল বিশ্বাস করে না। তিনি আরও লিখেছেন, বিরোধীদের দেশবিরোধী তকমা দেওয়া এবং তাদের শত্রুতে পরিণত করা, এই রাজনীতি বিজেপির সংস্কৃতি নয়। তিনি লেখেন, দেশের স্বাধীনতা, পরিছন্নতা, সংঘবদ্ধতা এবং দেশের গণমাধ্যম সহ অন্যান্য স্বাধীন সংস্থাগুলির স্বাধীনতা বজায় রাখায় বিশ্বাসী বিজেপি।
মনে করা হচ্ছে নিজের ব্লগে নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ জুটিকেই খোঁচা দিলেন বর্ষীয়ান এই বিজেপি নেতা। আডবাণীর এই মতকে স্বাগত জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আডবাণীর ব্লগ প্রকাশের সাথে সাথেই তাঁর ট্যুইট, লালকৃষ্ণ আডবাণীর এই বক্তব্যের সঙ্গে তৃণমূল সম্পূর্ণ সহমত এবং তার এই মতামত কে সম্মান জানায় তৃণমূল। পাশাপাশি কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীও এই ইস্যুতে মোদী-অমিত শাহকে কটাক্ষ করেছেন।