সর্বভারতীয় জয়েন্টের প্রশ্নপত্রে গুজরাতি ঠাঁই পেলে বাংলা নয় কেন? কেন্দ্রকে প্রশ্ন মমতার, রাজ্যে কৃতি ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা

সর্বভারতীয় ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ফের বাংলা ভাষা রাখার সওয়াল করলেন মুখ্য মন্ত্রী। সোমবার নবান্ন সভাঘরে চলতি বছর রাজ্যের মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, মাদ্রাসা, হাইমাদ্রাসা পরীক্ষার কৃতীদের সংবর্ধনা দিতে গিয়ে ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অসন্তোষ উগরে দিলেন তিনি বললেন, ‘কেন্দ্রকে চিঠি লিখেছি। বলেছি গুজরাতি ভাষায় প্রশ্ন থাকলে বাংলা কেন থাকবে না?

এদিন ছাত্রছাত্রীদের কলেজে ভর্তি, পড়াশোনা চালানোর মতো যে কোনও সাহায্য চাইলে জেলা শাসকদের হাতে আবেদনপত্র দিয়ে দিতে বলেন তিনি। জানান, সেখান থেকে এডুকেশন সেক্রেটারি মণীশ জৈন সরাসরি ব্যবস্থা নেবেন। পড়ুয়ারা কোনও সমস্যার মুখোমুখি হলে সিএম গ্রিভেন্স সেলেও জানাতে পারেন বলে ঘোষণা মুখ্য মন্ত্রীর। এদিন নবান্ন সভাঘর থেকে ভার্চুয়াল মোডে ৭৯৩ জন কৃতী পড়ুয়াকে সংবর্ধনা জানান মুখ্য মন্ত্রী।

পড়ুয়াদের প্রতি মুখ্য মন্ত্রীর বার্তা, আইডেন্টিটি বড়ো জিনিস। তবে বাংলার কৃতী পড়ুয়ারা ভবিষ্যতে যেন বাংলাতেই কাজ করেন। তিনি বলেন, বাংলায় নতুন বহু বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ, পলিটেকনিক কলেজ ইত্যাদি তৈরি হচ্ছে। বাংলাকে নিয়ে যারা কুৎসা, অপপ্রচার, ব্যঙ্গ করে তাদের তীব্র বিরোধিতা করি। মুখ্য মন্ত্রী বলেন, বাংলায় কর্মসংস্থানের অভাব হবে না। তাই কৃতী পড়ুয়ারা যেন বাংলাতেই কাজ করেন। তাঁর কথায়, আমি ট্যালেন্টেড ছেলেমেয়ে খুঁজে বেড়াই। প্রতি বছর ৫০০ জন করে পড়ুয়াকে আমরা নেব যাঁরা সরাকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে সহায়তা করবেন। ইন্টার্নশিপ করার পরে পরে এঁদের চাকরি স্থায়ী করা হবে বলে ঘোষণা করেন মমতা।

এদিনও জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বাংলায় করার আবেদন রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি কেন্দ্রের নতুন শিক্ষা নীতিরও বিরোধিতা করেন। এই নয়া নীতি অনুযায়ী, বোর্ড পরীক্ষায় কোনও ব়্যাঙ্ক থাকবে না। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্য মন্ত্রী বলেন, ‘মেধাতালিকা না থাকলে, কেউ নিজেদের ফলাফল নিয়ে গর্ববোধ করবে কীভাবে? এসব রেজাল্ট তো ছাত্রছাত্রীদের জীবনের সম্পদ। আমার মনে হয়, যে যেভাবেই পাশ করুক, একটা মেধাতালিকা দরকার।’

পাশাপাশি, শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি ও শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের কাছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর স্মরণে ‘জয় হিন্দ’ নামে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির প্রস্তাব রাখেন মুখ্য মন্ত্রী। তাঁর কথায়, বাংলায় সব মনীষীর নামে বিশ্ববিদ্যালয় আছে। কিন্তু নেতাজির নামে কেবল মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় আছে। তাই আগামীদিনে ‘জয় হিন্দ’ বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির পরিকল্পনার কথা জানান মমতা।

এদিন মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, জয়েন্ট এন্ট্রান্স, আলিম, ফাজিল ও হাইমাদ্রাসার পরীক্ষার কৃতীদের হাতে একটি করে ল্যাপটপ, হাতঘড়ি, বই, নোটবুক, কলম, চকোলেট, ফুল ও মিষ্টি তুলে দেওয়া হয় রাজ্য সরকারের তরফে।

 

Comments are closed.