উত্তরবঙ্গ এবং মুর্শিদাবাদের ২ আসন মিলে সবচেয়ে বড়লোক প্রার্থী তৃণমূলের খলিলুর রহমান, দুই এবং তিনে কংগ্রেসের ডালু ও অভিজিৎ

গত বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) পর্যন্ত রাজ্যের ১০ টি লোকসভা কেন্দ্রে প্রধান চারটি দলের যে প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পত্তির মালিক জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী খলিলুর রহমান। সম্পত্তির হিসেবে এরপরেই রয়েছেন মালদা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী আবু হাসেম খান চৌধুরী। তিনে প্রণব পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়।
দার্জিলিং, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, বালুরঘাট, রায়গঞ্জ, মালদা উত্তর, মালদা দক্ষিণ, জঙ্গিপুর ও মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল, কংগ্রেস, বিজেপি এবং সিপিএম মনোনীত প্রার্থীদের জমা দেওয়া হলফনামা থেকে দেখা যাচ্ছে, স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি সম্পদের মালিক জঙ্গিপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী খলিলুর রহমান। তাঁর স্ত্রী রশিদা খাতুন ও খলিলুর রহমানের মোট সম্পত্তি রয়েছে ৩৬ কোটি ৮৩ লক্ষ ৬ হাজার ৭০৫ টাকা।
জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তাঁর হলফনামায় জানিয়েছেন, তাঁর হাতে নগদ অর্থ রয়েছে ৯ লক্ষ ১৪ হাজার ৬৫৭ টাকা। সম্পত্তির বিচারে এরপরেই রয়েছেন মালদা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী আবু হাসেম খান চৌধুরী। তাঁর হাতে নগদ অর্থের পরিমাণ ১ লক্ষ টাকা। স্ত্রী রুথ খান চৌধুরী ও তাঁর স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য ২৭ কোটি ৯ লক্ষ ৫৯ হাজার ৫২০ টাকা। সম্পত্তির নিরিখে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন জঙ্গিপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। স্ত্রী চিত্রলেখা মুখোপাধ্যায় ও তাঁর মিলিত সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য ১৪ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা।
এই ১০ টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে সবচেয়ে কম টাকা রয়েছে আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী জন বার্লার। তাঁর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ২ লক্ষ ৮২ হাজার ৩৬২ টাকা এবং স্ত্রী মহিমা কুল্লা বার্লার রয়েছে ২ লক্ষ ৩৫ হাজার ৩৬৮ টাকা। কোনও স্থাবর সম্পত্তি নেই আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীর।
দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পত্তির মালিক বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তার। তাঁর স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে রয়েছে প্রায় ১৩ কোটি ৭৯ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা। সবচেয়ে কম সম্পদের মালিক সিপিএম প্রার্থী সমন পাঠক। তাঁর সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য ২৯ লক্ষ ৯৪ হাজার ৪০৮ টাকা।
আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি সম্পত্তির মালিক তৃণমূল প্রার্থী দশরথ তিরকে। নির্বাচনী হলফনামায় দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, তিনি প্রায় ৯০ লক্ষ টাকার মালিক।
জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী বিজয় চন্দ্র বর্মণ বাকি তিন দলের প্রার্থীর থেকে সবচেয়ে বিত্তবান। স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে ১ কোটির বেশি টাকা রয়েছে তাঁর। পাশাপাশি ওই কেন্দ্রে সবচেয়ে কম সম্পত্তির মালিক কংগ্রেস প্রার্থী মণিকুমার দরনাল। তাঁর সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য ৪০ লক্ষ টাকা।
কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের সবচেয়ে বিত্তবান প্রার্থী তৃণমূলের পরেশ চন্দ্র অধিকারী। তাঁর সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য ৪ কোটি টাকা। ওই কেন্দ্রে সবচেয়ে কম সম্পত্তি রয়েছে কংগ্রেস প্রার্থী পিয়া রায় চৌধুরীর। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৩১ লক্ষ টাকা।
বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে চার দলের প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পত্তি রয়েছে কংগ্রেসের আবদুস সাদেক সরকারের। তাঁর স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে রয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পত্তি। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে সবচেয়ে কম সম্পত্তির মালিক তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষ। তাঁর অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে ২৮ লক্ষ ২৪ হাজার ৭২৮ টাকার। তবে স্থাবর সম্পত্তি নেই।
রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল, কংগ্রেস, বিজেপি ও সিপিএম প্রার্থীর মধ্যে তৃণমূলের কানাইয়ালাল আগরওয়ালের রয়েছে প্রায় ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার সম্পত্তি। ওই কেন্দ্রে সবচেয়ে কম সম্পদের মালিক বিজেপির দেবশ্রী চৌধুরী। তাঁর সম্পত্তির আনুমানিক বাজার মূল্য ৬২ লক্ষ টাকা।
মালদা উত্তর কেন্দ্রের স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি সম্পদের মালিক সিপিএমের বিশ্বনাথ ঘোষ। প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে তাঁর। ওই কেন্দ্রে চার দলের প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে কম টাকা কংগ্রেসের ইশা খান চৌধুরীর।
মালদা দক্ষিণ কেন্দ্রে সবচেয়ে কম সম্পত্তির মালিক বিজেপির শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১ কোটি টাকা।
এছাড়া, মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে সবচেয়ে বিত্তবান প্রার্থীর নাম শেখ হুমায়ুন কবীর। এই বিজেপি প্রার্থীর স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে রয়েছে প্রায় আড়াই কোটি টাকার সম্পত্তি এবং ওই কেন্দ্রে সবচেয়ে কম সম্পত্তির মালিক সিপিএমের বাদরুদ্দোজা খান। তাঁর সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য ৪৯ লক্ষ টাকা।

Comments are closed.