রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ ক্যাফে কফি ডে’র কর্ণধার, কর্ণাটকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণর জামাই সিদ্ধার্থ

কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে চিঠি লিখে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে গেলেন ভারতের বৃহত্তম কফি চেন, ‘ক্যাফে কফি ডে’র কর্ণধার ভি জি সিদ্ধার্থ। সোমবার রাতে বেঙ্গালুরু থেকে ক্যাফে কফি ডে’র (সিসিডি) কর্ণধার তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণর জামাতা ভিজি সিদ্ধার্থের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে বেঙ্গালরু পুলিশ। এই প্রেক্ষিতে গত ২৭ জুলাই সিসিডি’র কর্ণধারের একটি চিঠি পাওয়া গেল। যেখানে সিসিডি কর্ণধার ভি জি সিদ্ধার্থ লেখেন, যাঁরা তাঁর ওপর আস্থা রেখেছিলেন তা রক্ষা করতে না পারার জন্য তিনি দুঃখিত। চিঠিতে সিসিডির কর্ণধার লেখেন, প্রবল আর্থিক চাপে তিনি বিধ্বস্ত। দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করে তিনি ক্লান্ত, আর চাপ নিতে পারছেন না। এবার হাল ছেড়ে দিচ্ছেন তিনি।
সোমবার রাতে বেঙ্গালরুর নেত্রবতী ব্রিজের কাছে গাড়ির চালককে থামার নির্দেশ দেন সিসিডির কর্ণধার। বলেন, একটু হেঁটে আসছি। কিন্তু এক ঘন্টা কেটে যাওয়ার পরেও তিনি ফেরেননি। এরপর ভি জি সিদ্ধার্থের গাড়ির চালক তাঁর পরিবারকে ফোন করে জানান ঘটনার কথা। সিদ্ধার্থের পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশে জানানো হয়। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত কোনও খোঁজ মেলেনি সিসিডির প্রতিষ্ঠাতা ও ডিরেক্টরের।
তদন্তে নেমে একটি চিঠি হাতে আসে পুলিশের। সেখানে সিসিডির বোর্ড অফ ডিরেক্টর্স ও সংস্থার কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে ভি জি সিদ্ধার্থ লেখেন, দীর্ঘ ৩৭ বছরের কঠোর পরিশ্রমে তিনি ব্যবসা গড়ে তুলেছিলেন। এখন তাঁর সংস্থায় প্রত্যক্ষভাবে ৩০ হাজার কর্মী কাজ করেন এবং আরও ২০ হাজার কর্মী সংস্থার প্রযুক্তি বিভাগে নিযুক্ত রয়েছেন। কিন্তু বেশ কয়েক বছরের চেষ্টাতেও ব্যবসায় লাভ হচ্ছে না। চিঠিতে সিসিডি কর্ণধার লেখেন, এই দীর্ঘ বছরের ব্যবসায় কাউকে তিনি ঠকাননি। কিন্তু সংস্থার দেনা ক্রমশ বাড়ছিল। তাঁর সবরকম মরিয়া চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, তিনি আর চাপ নিতে পারছেন না। সংস্থার ডিরেক্টরদের কাছে তাঁর অনুরোধ, তাঁরা যেন নতুন ম্যানেজমেন্ট তৈরি করে ব্যবসার হাল ধরেন।
১৯৯৬ সালে বেঙ্গালুরুর ব্রিগেড রোডে একটি সাধারণ কফি শপ থেকে কয়েক বছরের মধ্যে দেশের বৃহত্তম কফি চেন হিসেবে উঠে আসে ক্যাফে কফি ডে। দেশের বিভিন্ন শহরে বর্তমানে দেড় হাজারের বেশি সিসিডি আউটলেট রয়েছে। ভি জি সিদ্ধার্থের নিখোঁজের ঘটনা ছড়িয়ে পড়ার পরই সংস্থার শেয়ার প্রায় ২০ শতাংশ নেমে গিয়েছে।

Comments are closed.