ছাঁটাই করবেন না, বেতন কমাবেন না, ঐতিহ্যবাহী EPW র মালিককে চিঠি সংস্থারই প্রাক্তন সাংবাদিক-সম্পাদকদের

লকডাউন পরবর্তী অধ্যায়ে কেমন হবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের চেহারা? তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনায় ব্যস্ত মিডিয়া বিশেষজ্ঞরা। নজিরবিহীন এই পরিস্থিতিতে চাকরি যাচ্ছে বহু মিডিয়া কর্মীর। বেতন কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে আরও বহু মানুষের।
বেতন কমানো এবং ছাঁটাইয়ের খবর শোনা গিয়েছিল ঐতিহ্যবাহী ইকনমিক অ্যান্ড পলিটিক্যাল উইকলি বা EPW তেও। শোনা গিয়েছিল, কর্মীদের বেতন ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সংস্থার ডিজিটাল টিম এনগেজের কর্মীদের একমাসের নোটিসে অফিসে আসতে বারণ করা হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে কর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার আবেদন জানিয়ে EPW র মালিক সমীক্ষা ট্রাস্টের কাছে চিঠি লিখলেন সংস্থারই প্রাক্তন কর্মীরা।
চিঠিটি লিখেছেন EPW র প্রাক্তন এডিটর রামমনোহর রেড্ডি, প্রাক্তন অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর অভিষেক সাউ, প্রাক্তন এক্সিকিউটিভ এডিটর অনিকেত আলম, প্রাক্তন ডেপুটি এডিটর বার্নার্ড ডিমেলো, প্রাক্তন কনসাল্টিং এডিটর কল্পনা শর্মা এবং প্রাক্তন ডিজিটাল এডিটর সুভাষ রাই প্রমুখ। এছাড়াও বেশ কয়েকটি বিদ্বজ্জ্বন চিঠিতে সাক্ষর করেছেন।
সমীক্ষা ট্রাস্টকে উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠিতে নিজেদের বৃহত্তর EPW গোষ্ঠীর অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন পত্র প্রেরকরা। তাঁরা লিখেছেন, শুনতে পাচ্ছি ইপিডব্লুর কর্মীদের বেতন ২৫ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ হারে কমানো হচ্ছে। সংস্থার ডিজিটাল ইউনিট এনগেজের সমস্ত কর্মীকে এক মাসের নোটিসে ছাঁটাই করা হয়েছে। এই সমস্ত পদক্ষেপ অচিরেই অর্ধ শতাব্দী ধরে অর্জন করা সুনামকে ধুলোয় মিলিয়ে দেবে বলে চিঠিতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস অতিমারি এবং তা রুখতে লাগাতার লকডাউনের জেরে মানুষের জীবনযাত্রা এমনিতেই বিধ্বস্ত। ব্যবসা বাণিজ্যের অবস্থাও ততধিক খারাপ। চিঠিতে তাঁরা লিখেছেন, এই পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষের কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বাড়তি কিছু করা দরকার, যা এখনও পর্যন্ত করা হয়নি। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য এই কঠিন পরিস্থিতিতে সমীক্ষার মতো দাতব্য প্রতিষ্ঠান কর্মী স্বার্থে আর পাঁচটা ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের চেয়ে আলাদাভাবে পদক্ষেপ করবে এটাই স্বাভাবিক।

আরও জানতে ক্লিক করুন: অধস্তনকে না ছেঁটে নিজেই ইস্তফা দিলেন সর্বভারতীয় ইংরেজি মাধ্যমের ক্রীড়া সম্পাদক

EPW কে একটি খোলামেলা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বর্ণনা করে চিঠিতে প্রাক্তন কর্মীরা লিখেছেন, এই প্রথমবার সমীক্ষা ট্রাস্ট কিংবা এডিটর কিংবা ফিনান্সের কোনও উচ্চপদস্থ কর্তা এই বিষয়গুলো নিয়ে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করার প্রয়োজন মনে করেননি। তাঁদের দাবি, ইতিপূর্বে এমন হয়নি। প্রাক্তন কর্মীদের আবেদন, পরিস্থিতি মোকাবিলা কীভাবে করা যায় তা ঠিক করতে এখনই EPW র সব কর্মীর সঙ্গে আলোচনায় বসুক কর্তৃপক্ষ। সেই বৈঠকে যদি কোনও কঠোর সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়, তা হলেও তা হবে সমস্ত কর্মীর মতানুযায়ী। ফলে এক তরফা পদক্ষেপের সম্ভাবনা থাকবে না। সামগ্রিকভাবে এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে EPW র কর্মীদের পরিবার চালাতে আরও সমস্যার মুখে পড়তে হয়, এটা নিশ্চয়ই কাম্য নয়, লিখেছেন প্রাক্তনীরা।
তাঁরা লিখেছেন, গত কয়েকবছর ধরে সংস্থার পড়তি আর্থিক স্বাস্থ্যের খবর পেয়েছি। তবে একটা কথা মনে রাখবেন, EPW র ঘুরে দাঁড়ানোর কোনও প্রক্রিয়াই বাস্তবসম্মত হবে না যদি সম্পাদকীয় কিংবা অন্যান্য কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আপোশের রাস্তায় হাঁটে কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে কোনও কর্মীর উপার্জনে কোপ কমিয়েও তা সম্ভব হবে না

Comments are closed.