মিডিয়ায় লকডাউন এফেক্ট: বন্ধ হল ইকনমিক টাইমসের গুজরাত সংস্করণ, এক মাসে দ্বিতীয়বার ছাঁটাই বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে
করোনা ও লকডাউন পরিস্থিতিতে মিডিয়ায় কর্মী ছাঁটাই অব্যাহত। এবার বন্ধ হয়ে গেল ইকনমিক টাইমস গুজরাতি বা ET Gujarati এর প্রকাশনা। পাশাপাশি একমাসে দ্বিতীয় বার কর্মী ছাঁটাই করল বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।
মার্চ মাসে লকডাউনের শুরু থেকে কর্মী সংখ্যা কমিয়ে খরচ বাঁচানোর মতো পদক্ষেপ করছে দেশের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমগুলি। সম্প্রতি ET Gujarati এর ১৪ জনের টিমকেই বরখাস্ত করে প্রকাশনাই তুলে দিল টাইমস গোষ্ঠী। অন্যদিকে, দেশের অন্যতম আর্থিক বিষয়ক সংবাদপত্র বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড একমাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় কর্মী ছাঁটাই করল। এই দফায় চাকরি গেল ২৫ জন সংবাদকর্মীর।
ইংরেজি ওয়েবসাইট Newslaundry সূত্রে খবর, জুলাইয়ের শুরুতে বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড ৬০ জন কর্মীকে বসিয়ে দিয়েছিল। এবার আরও ২৫ জনের উপর ছাঁটাইয়ের কোপ পড়ল। ওই সংবাদমাধ্যমের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উচ্চপদস্থ কর্মীকে উদ্ধৃত করে Newslaundry জানাচ্ছে, এবার দিল্লিতে কর্মরত প্রায় হাফ ডজন কর্মীর চাকরি গিয়েছে। বাকিরা মুম্বই শাখার কর্মী। এঁদের মধ্যে এডিটোরিয়াল টিমের কর্মী যেমন আছেন, তেমনই রয়েছেন সাধারণ কর্মীও। জানা গিয়েছে, কর্মীদের ছাঁটাইয়ের খবর দেওয়া হয়েছে মোবাইলে ফোন করে। পাশাপাশি এও জানা গিয়েছে, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ইংরেজি সংস্করণের দুই পৃষ্ঠা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। পার্সোনাল ফিনান্স সংস্করণের পাতাটি প্রকাশিত হত প্রতি সোমবার এবং সপ্তাহের প্রতিদিনই প্রকাশিত হোত মতামত সংক্রান্ত প্রতিবেদন। এবার এই দুটি পাতাই বন্ধ।
বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড ছাঁটাইয়ের প্রথম পর্যায়ে পাঁচটি অফিস থেকে ৬ জন কর্মীকে বসিয়ে দিয়েছিল। বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের শনিবারের ক্রোড়পত্রের দায়িত্বে থাকা এই কর্মীদের মধ্যে ছিলেন সংবাদকর্মী, সেলস, মার্কেটিং এবং ডিজাইন হেড সহ ওই বিভাগের আরও কর্মী। পরে কলকাতার অফিসে চিফ অফ ব্যুরো ছাড়া প্রত্যেককে ছাঁটাই করা হয়। পত্রিকার হিন্দি বিভাগেও ছাঁটাই হয়েছে বলে Newslaundry এর প্রতিবেদনে প্রকাশ। গত জুলাই মাস থেকে বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড শনি ও রবিবারের ক্রোড়পত্র প্রকাশ বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়াও পাটনা ও রায়পুর থেকে প্রকাশিত বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের হিন্দি সংস্করণ গত ১ জুলাই থেকে পুরোপুরিভাবে বন্ধ।
পড়ুন: অধস্তন কর্মীকে ছাঁটাই না করে নিজেই ইস্তফা দিলেন ইংরেজি দৈনিকের বিভাগীয় প্রধান প্রতীক বন্দ্যোপাধ্যায়
উল্লেখ্য, বর্তমানে বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশিত হয় দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, আহমেদাবাদ সহ মোট ১২ টি শহর থেকে। সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্রের হিন্দি সংস্করণ প্রকাশিত হত ৬ টি শহর থেকে। জুলাইয়ে দ্বিতীয় দফায় ছাঁটাই হওয়া এক কর্মীর কথায়, প্রথম ছাঁটাইয়ের পর তাঁরা কেউই ভাবতে পারেননি আবার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দ্বিতীয়বার ছাঁটাইয়ের কোপ পড়বে। সংস্থার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় আর্থিক কারণে এই সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে, জানান ওই কর্মী।
পড়ুন: টাইমস অফ ইন্ডিয়াতে ব্যাপক ছাঁটাই, বাংলার পর এবার কেরলে
অন্যদিকে ইকনমিক টাইমস তাদের গুজরাতি সংস্করণের প্রকাশনা বন্ধ করে দিয়েছে। কয়েক দিন আগে পত্রিকায় জানানো হয়, দুঃখের সঙ্গে পাঠকদের জানাচ্ছি ইটি গুজরাতি আর ছাপা হবে না। গত ১৪ বছর আমাদের পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
এই সংস্করণ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে পত্রিকায় কর্মরত ১৪ জন সংবাদকর্মীর চাকরি গেল। তাঁদের জানানো হয় দু’মাসের বেতন পাবেন এবং সিনিয়র কর্মীরা গ্র্যাচুয়েটির অর্থ পাবেন।
Comments are closed.