শনিবার মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় শুভেন্দু বিজেপিতে? তৃণমূলের আর কতজন দলবদল করছেন?

১৯ ডিসেম্বর পশ্চিম মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভাতেই কি বিজেপিতে যোগ দেবেন শুভেন্দু অধিকারী! এই জল্পনাই এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতিতে সবচেয়ে বড়ো চর্চার বিষয়। সেই সঙ্গে আরও জল্পনা চলছে, শুভেন্দুর সঙ্গে আর কোন কোন তৃণমূল নেতা থাকতে পারেন মেদিনীপুরে অমিত শাহের সমাবেশে!

১৯ ডিসেম্বর অমিত শাহের বনগাঁর সভা কেন বাতিল হয়েছে, তা নিয়ে দু’দিন ধরেই জল্পনা চলছিল রাজনৈতিক মহলে। মঙ্গলবার বিকেলে আচমকাই ঠিক হয়, বনগাঁর বদলে সেদিন পশ্চিম মেদিনীপুরে জনসভা করবেন তিনি। আর তারপরই বুধবার বিধানসভায় গিয়ে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন শুভেন্দু অধিকারী। সূত্রের খবর, তৃণমূলের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিচ্ছেদের পর এবার তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন। কবে যোগ দেবেন তা নিয়েও নানারকম কথা শোনা যাচ্ছিল। এদিন বিভিন্ন সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, খুব সম্ভবত, আগামী শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর পশ্চিম মেদিনীপুরে কলেজ মাঠে অমিত শাহের সমাবেশে থাকতে চলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। এখন প্রশ্ন শুভেন্দুর সঙ্গে তৃণমূলের আর কতজন নেতা অমিত শাহের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেবেন?

জামা কাপড়ের মতো আদর্শ বদল করা যায় না বলে বুধবারই কোচবিহারের সভা থেকে বিক্ষুব্ধ ও দলত্যাগী নেতা-মন্ত্রীদের কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তাঁর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে ফোন করেছেন দিল্লি বিজেপি নেতৃত্ব। এছাড়া অনুব্রত মণ্ডলকেও বিজেপিতে আহ্বান করা হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠছে, শনিবার অমিত শাহের উপস্থিতিতে শুভেন্দুর সঙ্গে তৃণমূলের প্রথম সারির আর কতজন নেতা-বিধায়ক দলবদল করবেন?

সাম্প্রতিক সময়ে তৃণমূলের বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট নেতা, বিধায়ক ও মন্ত্রীকে বেসুরো কথা বলেছেন। এর মধ্যে যে নামগুলি উঠে আসছে, তাঁরা হলেন বারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত, পূর্ব বর্ধমানের সাংসদ সুনীল মণ্ডল, আসানসোলের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি প্রমুখ। শীলভদ্র আগেই ঘোষণা করে দিয়েছেন, ২১-এর ভোটে তিনি আর তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়াবেন না।

এছাড়া শুভেন্দু অনুগামীদের মতো হাওড়া, কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলায় পোস্টার পড়েছে রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জির নামে। এদিকে আসানসোলের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারির পর দুর্গাপুরের তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বনাথ পরিয়াল বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। বুধবার এক সভায় জিতেন্দ্রর পাশে দাঁড়িয়ে বিশ্বনাথের ঘোষণা, দল চাইলে তিনি এখনই ইস্তফা দিতে তৈরি। এছাড়াও হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্না, উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষালের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মাসখানেক আগেই দলের মধ্যে মতপার্থক্যের জেরে ইস্তফা দিয়েছিলেন বেচারাম। যদিও পরে তা প্রত্যাহার করে নেন তিনি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তাঁদের বিভিন্ন মন্তব্যেই দলবিরোধিতার আঁচ স্পষ্ট।

রাজনৈতিক মহলের ধারণা, ১৯ তারিখ মেদিনীপুরে অমিত শাহের সঙ্গে একমঞ্চে দেখা যাবে শুভেন্দু অধিকারীকে। তৃণমূলের আরও কারা ওই দিন উপস্থিত হবেন তা নিয়ে জোর জল্পনা রাজনৈতিক মহলে। গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন তৃণমূল নেত্রীও। উত্তরবঙ্গ সফর সেরে বৃহস্পতিবারই তৃণমূল নেত্রীর কলকাতায় ফেরার কথা।

 

 

Comments are closed.