রামের কোনও বংশধর কি এখন অযোধ্যায় থাকেন, অযোধ্যার বিতর্কিত জমি মামলায় জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট

রামের কোনও বংশধর কি এখনও অযোধ্যায় আছেন? রঘুবংশের উত্তরসূরিরা কি এখনও অযোধ্যায় বসবাস করেন? অযোধ্যা-বাবরি মসজিদ জমি বিতর্ক মামলায় জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট।
এই বিতর্কিত জমি মামলার শুনানিতে মামলাকারী হিন্দু সংগঠন রাম লালা বিরাজমানের আইনজীবী কে পরাশরণের কাছে শুক্রবার প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ জানতে চায়, আইনত কীভাবে জন্মস্থানকে ব্যক্তি ধরা যায়? আদালতের এই প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী পরাশরণ জানান, দেবতার মতো পুজো করা হয় জন্মস্থানকেও। তাঁর যুক্তি, রামের জন্মস্থানও তাই ভগবানেরই স্বরূপ। এই প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি বোবদে, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি অশোক ভূষণ এবং বিচারপতি এস এ নাজিরের বেঞ্চ ফের জানতে চায়, রামের কোনও বংশধর কি এখন অযোধ্যায় বসবাস করছেন? আইনজীবী পরাশরণের কাছে সাংবিধানিক বেঞ্চের প্রশ্ন, রঘুবংশের কোনও উত্তরসূরি এখনও আছেন কিনা। সাংবিধানিক বেঞ্চ জানায়, এ ব্যাপারে তারা কৌতূহলী।
উত্তরে হিন্দু মামলাকারীর পক্ষে আইনজীবী পরাশরণ জানান, এমন কোনও খবর তাঁদের কাছে নেই। তবে তারা খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করবেন বলে জানান সুপ্রিম কোর্টের এই সিনিয়র আইনজীবী।
অযোধ্যা-বাবরি জমি বিতর্ক মামলায় মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া ব্যর্থ হওয়ার পর মঙ্গলবার থেকে প্রতিদিন শুনানির কথা ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সংশ্লিষ্ট মামলার চতুর্থ দিনের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানতে চায়, আইনত কীভাবে জন্মস্থানকে ব্যক্তি ধরা যাবে? এর উত্তরে হিন্দু মামলাকারীর পক্ষে আইনজীবী পরাশরণ যুক্তি দেন, হিন্দু ধর্মে মূর্তি পুজো ছাড়াও কোনও স্থানকেও পুজো করা হয়। হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ থেকে উদাহরণ টেনে আইনজীবী পরাশরণ বলেন, কেদারনাথ মন্দিরে কোনও দেবতার মূর্তি নেই। সেই স্থানকে পুজো করে হিন্দুরা। এভাবে রামের মূর্তি স্থাপনের বা মন্দির তৈরির অনেক আগে থেকেই অযোধ্যার সংশ্লিষ্ট জায়গাকে রামের জন্মস্থান হিসেবে পুজো করে আসছে হিন্দুরা, যুক্তি আইনজীবী পরাশরণের। এই প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট জানতে চায় রামের কোনও বংশধর অযোধ্যায় বসবাস করছেন কিনা। যার উত্তরে হিন্দু পক্ষের আইনজীবী জানান, এমন কোনও তথ্য তাঁর জানা নেই।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ৩০ শে সেপ্টেম্বর এলাহাবাদ হাইকোর্ট এই বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমিকে তিনভাগে ভাগ করে নির্মোহী আখাড়া, সুন্নি সেন্ট্রাল বোর্ড ও রামলালা বিরাজমানকে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। যদিও এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ১৪ টি পিটিশন দায়ের হয় সুপ্রিম কোর্টে। এরপর বেশ কয়েকবার মধ্যস্থতার মাধ্যমে এই জমি বিতর্কের সমাধানের চেষ্টা করেও সফল হয়নি শীর্ষ আদালত। কয়েকদিন আগেই সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কালিফুল্লাহর নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্যানেলের রিপোর্টে কোনও সমাধান সূত্র বেরোয়নি বলে জানায় সুপ্রিম কোর্ট। এরপরই প্রতিদিন এই মামলার শুনানি হবে জানান সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।

Comments are closed.