গণেশ পুজো এবং মহরমের সময় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ বাধাতেই বারাকপুরে পুলিশকে আক্রমণ করেছে বিজেপি, বিস্ফোরক অভিযোগ মনোজ ভার্মার
বেশ কিছুদিন শান্ত থাকার পর গত রবিবার ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বারাকপুরের ভাটপাড়া, জগদ্দল, শ্যামনগর এলাকা। বিজেপি এবং তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে শুরু হয় দফায়-দফায় সংঘর্ষ। পুলিশকে লক্ষ্য করে ব্যাপক ইটবৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে মাথা ফাটে বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের। অর্জুন সিংহ এবং বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে বারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মার বিরুদ্ধে। উল্টোদিকে রাজ্য পুলিশের এডিজি আইন-শৃঙ্খলা জ্ঞানবন্ত সিংহ পালটা জানিয়েছেন, বিজেপি কর্মীরাই ইট, বোমা ছুঁড়েছে পুলিশকে লক্ষ করে। এই পরিস্থিতিতে রবিবারের ঘটনা নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা।
প্রশ্ন: লোকসভা ভোটের পর উত্তপ্ত হয়েছিল বারাকপুর, তারপর আবার নতুন করে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটল রবিবার। মাঝে কিছুদিন শান্ত থাকার পর কী কারণে এমন ঘটল?
মনোজ ভার্মা: টানা এক মাসের ওপর বারাকপুরে কোনও গণ্ডগোল হয়নি, জনজীবন স্বাভাবিক হয়ে এসেছিল। আর বারাকপুরের পরিস্থিতি শান্ত থাকুক সেটা চাইছেন না স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। আর সেই কারণেই রবিবার পুরো পরিকল্পনা করে গণ্ডগোল করা হয়েছে। সোমবার থেকে গণেশ পুজো এবং তারপর মহরম। গণ্ডগোল, সংঘর্ষ বাধিয়ে এই দুই উৎসবের সময় সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার জন্যই সেদিন পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
প্রশ্ন: কিন্তু বিজেপি বলছে, তাদের পার্টি অফিস বেদখল হওয়াকে কেন্দ্র করেই গণ্ডগোলের সূত্রপাত।
মনোজ ভার্মা: গত এক মাসে বারাকপুরের বিভিন্ন জায়গায় ১০-১৫ টা পার্টি অফিস তৃণমূল নতুন করে খুলেছে। কোথাও কোনও গণ্ডগোল হয়নি। সেদিনও যে পার্টি অফিসকে ঘিরে গণ্ডগোল শুরু হয়, তার আগে দু’দলের কথা হয়েছে। কিন্তু তারপরও সেদিন পরিকল্পনা করে গণ্ডগোল পাকানো হয়েছে। যার জন্য চার রাস্তার সবদিক থেকে পুলিশকে আক্রমণ করা হয়েছে। বোমা, ইট ছোঁড়া হয়েছে। আসল উদ্দেশ্য ছিল, পুলিশকে আক্রমণ করে এলাকায় ফের অশান্তি সৃষ্টি করা। যাতে পুলিশ পিছু হঠলে গণেশ পুজো এবং মহরমকে কেন্দ্র করে এই অশান্তি সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে পরিণত করা যায়।
প্রশ্ন: লোকসভা ভোটের ঠিক পরেও বারাকপুরের কিছু জায়গায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হয়েছে। আপনি বলছেন, আবার সেই পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
মনোজ ভার্মা: একেবারেই। এখন বারাকপুর শান্ত। সাধারণ মানুষও স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন। কিন্তু অশান্তি জিইয়ে রেখে সাম্প্রদায়িক পরিবেশ বিঘ্নিত করার জন্যই সেদিন পরিকল্পনা করে পুলিশকে আক্রমণ করা হয়। কিন্তু আমরা সতর্ক আছি। কোনও অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না। যারা সেদিন গণ্ডগোল করেছে, সবাইকে গ্রেফতার করা হবে।
Comments are closed.